শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.tayraappsstudio.may_day





আইন কানুন জানা প্রত্যেকের নাগরিক অধিকার। বিশেষ করে শ্রমিক দের জন্য সংবিধান কি ? এই সংবিধান জানলে শ্রমিক রা তাদের অধিকার নিয়ে সচেতন হবে। এরই ক্ষুদ্র প্রয়াস হিসেবে, এই মহান মে দিবস ২০১৭ তে আপনাদের জন্য ফ্রি অফলাইন এপ মে দিবস ও শ্রম আইন কানুন।
আইন জানা প্রত্যেক শ্রমিক এর জন্য খুব ই দরকার বিশেষ করে বাংলাদেশে। আইন কানুন, আইনের ধারা জানা থাকলে বিশেষ করে শ্রম আইন জানা থাকলে কুন শ্রমিক তার চাকরি নিয়ে ঠকবে না।
এই এপ এ যা যা থাকছে ,
মে দিবস,
- মে দিবস এর ইতিহাস বা বাংলা ইতিহাস
- এই দিবস এর কবিতা
-এই দিবস এর রচনা
শ্রম আইন ২০০৬,
ভারতীয় সংবিধান, ভারতের সংবিধান বাংলা থেকে বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য আইন প্রত্যেক টা আইনের ধারা।
যেমন 
-নিয়োগ ও চাকুরীর শর্তাবলী
-কিশোর শ্রমিক নিয়োগ
-প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা
-স্বাস্থ্য রক্ষা ব্যবস্থা
-নিরাপত্তা
-স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্য বিধি ও নিরাপত্তা সম্পর্কে বিশেষ বিধান
-কল্যাণমূলক ব্যবস্থা
-কমর্ঘন্টা ও ছুটি
-মজুরী ও উহার পরিশোধ
-মজুরী বোর্ড
-দুর্ঘটনাজনিত কারণে জখমের জন্য ক্ষতিপূরণ
-ট্রেড ইউনিয়ন এবং শিল্প সম্পর্ক
-বিরোধ নিষ্পত্তি, শ্রম আদালত, শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল, আইনগত কার্যধারা, ইত্যাদি
-কোম্পানীর মুনাফায় শ্রমিকের অংশগ্রহণ
-প্রশাসন, পরিদশর্ন, ইত্যাদি
আরও সব আইনের ধারা।
বিভিন্ন সংবাদ ও সংবাদপত্র এ প্রচুর প্রচারনায় পাড়ে মে দিবস এ সচেতনতা গড়ে তুলতে।
বাংলাদেশ এর সংবিধান এ মেহনতি মানুষ দের অধিকার আদায়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে ।
তাই আমাদের সকলের দায়িত্ব সবাইকে সচেতন করা, নিযে জানা অপর কে জানানু।
ইতিহাস বই থেকে বাংলা ইতিহাস জানুন আইন কানুন জানুন যেন প্রত্যেকে অনুপ্রেরনা পায় নিজের 
অধিকার আদায়ে।
It is all about legal advice for labour for bengali. With great law of bangladesh for labour & may day 2017.
It is Awareness apps for labour & knowledge of bd law.
ডাউনলোড করুন এই দরকারি এপ এখনি......
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.tayraappsstudio.may_day



১৫০। (১) চাকুরী চলাকালে উহা হইতে উদ্ভূত দুর্ঘটনার ফলে যদি কোন শ্রমিক শরীরে জখমপ্রাপ্ত হন তাহা হইলে মালিক তাহাকে এই অধ্যায়ের বিধান অনুযায়ী ৰতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবেন। 

(২) কোন মালিক উক্তরূপ ৰতিপূরণ প্রদানে বাধ্য থাকিবেন না, যদি- 

(ক) জখমের ফলে তিন দিনের অধিক সময় কোন শ্রমিক সম্পূর্ণ বা আংশিক কর্মৰমতা না হারান; 

(খ) জখমের ফলে মারা যান নাই এরূপ কোন শ্রমিকের দুর্ঘটনায় জখম প্রাপ্ত হওয়ার প্রত্যৰ কারণ ছিল- 

(১) দুর্ঘটনার সময় শ্রমিকের মদ্যপান বা মাদক দ্রব্য সেবনের ফলে উহার প্রভাবাধীন থাকা; 

(২) শ্রমিকগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রণীত বিধি বা সুষ্পষ্ট আদেশ শ্রমিক কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে অমান্য করা; 

(৩) শ্রমিকগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা করা হইয়াছে ইহা জানা সত্ত্বেও শ্রমিক কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে কোন আঘাত নিরোধক নিরাপত্তা সরঞ্জাম বা অন্য কোন কৌশল অপসারণ করা বা উপেৰা করা। 

(৩) যদি- 

(ক) তৃতীয় তফসিলের "ক" অংশে বর্ণিত কোন চাকুরীতে নিযুক্ত কোন শ্রমিক উহাতে উক্তরূপ চাকুরী সম্পর্কিত বিশেষ পেশাজনিত ব্যাধি বলিয়া উলিস্নখিত কোন ব্যাধিতে আক্রানত্দ হন, অথবা 

(খ) কোন শ্রমিক অবিচ্ছিন্নভাবে কোন মালিকের অধীন অনূ্যন ছয় মাস তৃতীয় তফসিলের "খ" খন্ডে বর্ণিত কোন চাকুরীতে নিযুক্ত থাকাকালে উক্ত তফসিলে উক্তরূপ চাকুরী সম্পর্কে বিশেষ পেশাজনিত ব্যাধি বলিয়া উলিস্নখিত কোন ব্যাধিতে আক্রানত্দ হন, 

তাহা হইলে উক্তরূপ ব্যাধিতে আক্রানত্দ হওয়া এই ধারার অধীন কোন দুর্ঘটনার ফলে জখম বলিয়া গণ্য হইবে এবং, যদি না মালিক ইহার বিপরীত কিছু প্রমাণ করেন, দুর্ঘটনাটি চাকুরী চলাকালে উহা হইতে উদ্ভূত বলিয়া গণ্য হইবে। 

ব্যাখ্যাঃ এই উপ-ধারার প্রয়োজনে, কোন চাকুরীকাল অবিচ্ছিন্ন বলিয়া গণ্য হইবে যদি উহার সহিত অন্য কোন মালিকের অধীন একই প্রকার কোন চাকুরী যুক্ত না থাকে। 

(৪) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তৃতীয় তফসিলে উলিস্নখিত চাকুরীর সহিত অন্য কোন প্রকারের চাকুরীও যোগ করিতে পারিবে এবং এরূপ ৰেত্রে উক্ত চাকুরী সম্পর্কিত বিশেষ পেশাজনিত ব্যাধি কি হইবে তাহাও সুনির্দিষ্টভাবে উলেস্নখ করিবে, এবং তৎপর উপ-ধারা (৩) এর বিধান এরূপভাবে প্রযোজ্য হইবে যেন এই অধ্যায় দ্বারা উক্ত ব্যাধি উক্ত চাকুরী সম্পর্কে বিশেষ পেশাজনিত ব্যাধি বলিয়া ঘোষিত হইয়াছে। 

(৫) উপ-ধারা (৩) এবং (৪) এর ৰেত্র ব্যতীত অন্য ৰেত্রে, কোন ব্যাধি সম্পর্কে কোন শ্রমিককে কোন ৰতিপূরণ প্রদেয় হইবে না যদি না উক্ত ব্যাধি প্রত্যৰভাবে সংশিস্নষ্ট শ্রমিকের চাকুরী চলাকালে উহা হইতে উদ্ভূত কোন দুর্ঘটনায় জখমের কারণে হয়। 

(৬) এখানে উলিস্নখিত কোন কিছুই কোন শ্রমিকের জখম সম্পর্কে কোন ৰতিপূরণ পাওয়ার অধিকার প্রদান করা হইয়াছে বলিয়া বুঝাইবে না যদি তিনি মালিকের অথবা অন্য কোন ব্যক্তির বিরম্নদ্ধে উক্ত জখমের ৰতিপূরণের জন্য দেওয়ানী আদালতে কোন মোকদ্দমা দায়ের করিয়া থাকেন। 

(৭) কোন আদালতে উক্ত জখম সম্পর্কে শ্রমিক কর্তৃক কোন ৰতিপূরণ মামলা দায়ের করা যাইবে না, যদি- 

(ক) তিনি শ্রম আদালতে উক্ত জখমের জন্য ৰতিপূরণের দাবী করিয়া দরখাসত্দ পেশ করিয়া থাকেন; অথবা 

(খ) তাহার এবং তাহার মালিকের মধ্যে এই অধ্যায়ের বিধান অনুযায়ী উক্ত জখম সম্পর্কে ৰতিপূরণ প্রদানের জন্য কোন চুক্তি হইয়া থাকে। 

(৮) এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্যে, "শ্রমিক" বলিতে মালিক কর্তৃক সরাসরি অথবা ঠিকাদার কর্তৃক নিযুক্ত এমন ব্যক্তিকে বুঝাইবে, যিনি- 

(ক) রেলওয়ে আইন, ১৮৯০ (১৮৯০ সনের ৯নং আইন) এর ধারা ৩ এর সংজ্ঞা অনুযায়ী একজন রেল কর্মচারী (যিনি রেলওয়ের কোন প্রশাসনিক, জেলা বা উপজেলা অফিসে কোন স্থায়ী পদে নিযুক্ত নহেন, এবং চতুর্থ তফসিলে উলিস্নখিত কোন পদেও নিযুক্ত নহেন) অথবা 

(খ) চতুর্থ তফসিলে উলিস্নখিত কোন পদে নিযুক্ত কোন ব্যক্তি; 

তাহার চাকুরীর চুক্তি লিখিত হউক বা অলিখিত হউক, স্পষ্ট হউক বা অস্পষ্ট হউক, এবং কোন জখম প্রাপ্ত শ্রমিকের উলেস্নখের ৰেত্রে, তিনি মারা গেলে তাহার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিগণ অথবা তাহাদের যে কোন একজনও উহার অনত্দর্ভুক্ত হইবেন। 

ব্যাখ্যাঃ এই অধ্যায়ের উদ্দেশ্যে, কোন স্থানীয় কর্তৃপৰ অথবা সরকারের পৰে কোন বিভাগের কোন ৰমতা প্রয়োগ বা কর্তব্য সম্পাদনকে, যদি না কোন ভিন্ন উদ্দেশ্য প্রকাশ পায়, উক্ত কর্তৃপৰ বা বিভাগ এর ব্যবসা বা বাণিজ্য বলিয়া গণ্য হইবে।


https://play.google.com/store/apps/details?id=com.tayraappsstudio.may_day 





 মে দিবস ও শ্রম আইন কানুন



https://play.google.com/store/apps/details?id=com.tayraappsstudio.may_day 



https://play.google.com/store/apps/details?id=com.tayraappsstudio.may_day
মে দিবসের কবিতা কেউ লিখছ নাকি ভাই রে?
যাদের ঘামে বিশ্ববাজার উঠানামার দায় রে
মহাকালের কপাল থেকে ঝরছে পায়ে ঘাম রে
কেউ দিলো না আজও আমার শ্রমিকের দাম রে
অসুখ বিসুখ হানা দিলেও কাজে যেতে হয় রে
পেটের জ্বালায় সহ্যগুলোও দেহ-ধুলো ক্ষয় রে
হে মালিক প্রভু,
দিলের ভেতর কভু
ভাবো নাকি তোমারে যে মালিক করে রাখে
তারাই কেন আজও প্রভু দুঃস্বপ্নের বাঁকে?
বিচার তোমার হবে প্রভু মালিক বেটার ডাকে রে।





বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৭


ভাল ছবি উঠানোর নিয়মকানুন


ক্যামেরা যত ভাল ছবিও তত ভাল, কথাটা কিছুটা সত্য তো বটেই। কিন্তু সাধারন ক্যামেরা ব্যবহার করে চমৎকার ছবি উঠানোর উদাহরন কম নেই। দামী এসএলআর হোক আর সাধারন পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা হোক অথবা মোবাইল ফোনের ক্যামেরাই হোক, কিছু নিয়ম মেনে যে কেউ সুন্দর ছবি উঠাতে পারেন। পেশাদার ফটোগ্রাফাররা যে নিয়ম মেনে ছবি উঠান সেগুলি একবার জেনে নিন।

ছবির বিষয় ঠিক করুন
ক্যামেরায় ক্লিক করলে ছবি উঠবে। ক্যামেরার সামনে যা আছে সেটাই পাবেন। তাকে কি ভাল ফটোগ্রাফ বলা যায়!
ছবি উঠানোর আগে ছবিকে শিল্পীর আকা ছবির সাথে তুলনা করুন। তিনি অনেক ভেবেচিন্তে যা বক্তব্য সেটা ফুটিয়ে তোলেন। ফটোগ্রাফার হিসেবে আপনার সেটাই দায়িত্ব।
কাজেই ছবি উঠানোর আগে একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন, কিসের ছবি উঠাচ্ছি। এর বক্তব্য কি ? কোন ব্যক্তির ছবি উঠালে তার পোষাক, পরিবেশ, আলো এগুলি তারসাথে মানানসই কি-না।
কাজেই ছবি উঠানোর প্রথম নিয়ম, ছবির বক্তব্য ঠিক করুন। যে ছবিই উঠান না কেন, একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন কিসের ছবি উঠাচ্ছেন। ছবির বক্তব্য কি। অন্য কোনভাবে উঠালে কি ছবি আরেকটু ভাল হত ? দিনের অন্য সময়ে, কিংবা কৃত্রিম আলো ব্যবহার করে।

তিনের নিয়ম
ছবি উঠানোর সময় ফটোগ্রাফাররা সাধারনভাবে যা করেন, দিগন্ত রেখা ছবির মাঝামাঝি রেখে ফ্রেম করেন। অর্থাত আপনার সামনে যদি মাঠ এবং আকাশ থাকে তাহলে মাঠের জন্য অর্ধেক এবং আকাশের জন্য অর্ধেক এভাবে ভাগ করে নেন। কিংবা সমুদ্র এবং আকাশ থাকে তাহলে অর্ধেক আকাশ এবং অর্ধেক পানি এভাবে ছবি উঠান। একে অনেকে তুলনা করে খেলার ড্র এর সাথে তুলনা করেন। কে বিজয়ী জানা নেই। ফটোগ্রাফির একটি গুরুত্বপুর্ন নিয়ম রুল অব থ্রি এর পরিপন্থী। হাজার বছর ধরে রুল অব থ্রি প্রচলিত।
নিয়ম হচ্ছে, দুভাগ একজনকে বাকি একভাগ আরেকজনক দিন। বিষয়ের গুরুত্ব অনুযায়ী। যদি সমুদ্র গুরুত্বপুর্ন হয় দিগন্তরেখা তিনভাগের দুভাগ ওপরে রাখুন, যদি আকাশ গুরুত্বপুর্ন হয় তাহলে আকাশকে তিনভাগের দুভাগ দিন। অনায়াসে সুন্দর ছবি পাবেন।

পুরো ছবি উঠান
আপনি একটি সুন্দর ফুলের ছবি উঠাতে চান। অনেকগুলি ফুলের মধ্যে একটি ফুল আপনার কাছে গুরুত্বপুর্ন। বাগানের ছবি উঠানোর পর সেই ছবি কাউকে দেখানোর পর লক্ষ্য করলেন তারা সেই বিশেষ ফুলটি লক্ষ্য করছে না। কারন একটিই, আপনি সেভাবে ছবি উঠাননি।
যদি ফুলের ছবি উঠাতে হয় যতটা সম্ভব কাছে থেকে ছবি উঠান। এমনভাবে যেখানে সেই ফুলটিই ছবির অধিকাংশ যায়গা জুড়ে থাকে। অন্য ফুলগুলির কাজ এই বিশেষ ফুলের সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলা।
ফুল না হয়ে যদি বিশেষ কোন বস্তু, এমনকি কোন ব্যক্তির বিষয়ও হয় তাহলেও এই নিয়মে ছবি উঠান। নিজেকে বলতে পারেন, ছবি উঠানোর পর ফটোশপে পাশ থেকে বাদ দেয়া যাবে। সেটা না করে ছবি সেভাবে উঠানো অভ্যেস করুন।
ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে একটি বিখ্যাত উক্তি রয়েছে, ছবি ভাল হয়নি কারন আপনি যথেষ্ট কাছে যাননি। কাজেই, ছবি উঠানোর জন্য যতটা সম্ভব কাছে যান, অথবা লেন্স পাল্টান অথবা জুম ব্যবহার করুন।

পোর্ট্রেট মোডে ছবি উঠান
সাধারনত অধিকাংশ ছবি উঠানো হয় ল্যান্ডস্কেপ মোডে, পাশের দিকে বেশি যায়গা রেখে। অথচ ক্যামেরা ঘুরিয়ে সেই ছবিকেই লম্বালম্বিভাবে ছবি উঠানো সম্ভব। একজন দাড়িয়ে থাকা ব্যক্তির ছবি ল্যান্ডস্কেপ মোডে উঠালে পাশে অনেক অপ্রয়োজনীয় যায়গা থেকে যায়। অথচ লম্বলম্বিভাবে উঠালে তাকে আরো ভালভাবে দেখানো সম্ভব। ভুলে যাবেন না, এজন্যই এর নাম পোর্ট্রেট মোড।
কোন ছবি কোনভাবে উঠালে ভাল হবে এর কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই। একই ছবি যেকোনভাবেই সুন্দর হতে পারে। সবসময় ল্যান্ডস্কেপ মোডে না উঠিয়ে একবার নিজেকে বলুন, এই ছবিটাই একটা পোর্ট্রেট মোডে তুলে দেখি না কি হয়।

ফ্রেমের মধ্যে ফ্রেম
প্রিন্ট করা ছবি আমরা ফ্রেমে রাখি, ডিজিটাল ছবির চারিদিকেও ফ্রেম ব্যবহার করা হয়। ইচ্ছে করলে ছবি উঠানোর সময় কোনকিছুকে ফ্রেম হিসেবে ব্যবহার করা যায়। প্রকৃতি, গাছের পাতা, দেয়াল থেকে শুরু করে নিজের হাত, যেকোন কিছুই ফ্রেম হিসেবে ছবির সৌন্দর্য বাড়াতে পারে।

ব্যাকগ্রাউন্ডের দিকে দৃষ্টি দিন
ঘরে অথবা বাইরে যেখানেই ছবি উঠান না কেন, পেছনে কি রয়েছে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। ছবি উঠানোর সময় যদি অপ্রয়োজনীয় ব্যক্তির উপস্থিতি থাকে তাহলে কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন। পেছন থেকে কেউ উকি দিচ্ছে দেখা গেলে ভাল ছবি হয় না। একইভাবে অপরিস্কার, অগোছালো কিছু থাকলে সেগুলি এড়িয়ে ছবি উঠান। সামান্য সরে গেলেই এই বিষয়গুলি এড়িয়ে ভাল ছবি পাওয়া যাবে।

শুধুমাত্র তাত্ত্বিক জ্ঞানে ভাল ছবি পাওয়া যায় না। ভাল ছবির পাওয়ার সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হচ্ছে ছবি উঠানোর পর সেখানে কোন ত্রুটি আছে কিনা বের করা এবং কি করলে আরো ভাল ছবি পাওয়া যেত সেটা বের করা। কাজেই যত বেশি ছবি উঠাবেন তত ভাল ছবি পাওয়ার সম্ভাবনা।

ডিজিটাল ক্যামেরা এবং ডিজিটাল ফটোগ্রাফির নানা বিষয়


ডিজিটাল কামেরার প্রসারের সাথেসাথে ফটোগ্রাফি যেমন সহজ হয়েছে তেমনি জনপ্রিয়তা বেড়েছে। আজকাল অধিকাংশ উন্নত মানের মোবাইল ফোনেই ভাল মানের ছবি উঠানো যায়। সেইসাথে আগ্রহ বাড়লে অল্পদামেই কিনে ফেলা যায় ডিজিটাল ক্যামেরা। একবার ক্যামেরা কেনার পর ফিল্মের দিনের মত খরচ কিংবা ঝামেলা কোনটাই নেই।
ক্যামেরা ক্লিক করলে ছবি ওঠে। সব ছবি কি একরকম হয় ? কিংবা সবার উঠানো ছবি কি এক মানের হয় ?
নিশ্চয়ই না। কেউ ছবি উঠান শখ করে, কারো কাছে ফটোগ্রাফি নেশার মত, কারো জন্য পুরোপুরি পেশা। যাই হোক না কেন, ভাল ছবির সাথে সম্পর্ক ক্যামেরা এবং ফটোগ্রাফি সম্পর্কে জানা। ডিজিটাল ক্যামেরা এবং ফটোগ্রাফির সাধারন বিষয়গুলি সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।


সেন্সর এবং আকার অনুযায়ী নানা ধরনের ক্যামেরা
ফিল্ম ক্যামেরায় যেমন ছবি উঠানো হয় ফিল্মে, ডিজিটাল ক্যামেরায় কাজটি করে সেন্সর নামের একটি ইলেকট্রনিক বস্তু। ক্যামেরা অনুযায়ী এটা আকারে বড়-ছোট হয়। সেন্সর যত বড় ছবি তত ভাল হবে এতে সন্দেহ করার কারন নেই। মোবাইল ফোনের সেন্সর ছোট, পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরায় তারথেকে বড়, প্রাথমিক (এন্ট্রি লেভেল) এলএলআর ক্যামেরায় তারথেকে বড়, মিডরেঞ্জ এসএলআর ক্যামেরায় তারথেকে বড়, প্রফেশনাল ক্যামেরায় তারথেকে বড়। সাধারনভাবে প্রফেশনাল ক্যামেরা ৩৫মিমি ফিল্মের সমান সেন্সর থাকে, ফলে তাতে ফিল্মের মানের কাছাকাছি মান পাওয়া যায়। এই সেন্সরকে ফুল-ফ্রেম বলে।
ফুলফ্রেম থেকেও বড় সেন্সরের ক্যামেরা রয়েছে। এগুলি ব্যবহার হয় বিশেষ কাজে বা অতি-পেশাদারী কাজে। এদের সম্পর্কে এরবেশি জানা হয়ত প্রয়োজন হবে না।
কাজেই, ক্যামেরার মানের বিচারে সবথেকে পিছিয়ে মোবাইল ফোন ক্যামেরা, যত প্রচার করাই হোক না কেন। যত মেগাপিক্সেলই হোক না কেন।
এর পরের ক্যামেরার নাম পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা। সাধারনত এদের সেন্সরের মাপ ১/২.৩ ইঞ্চি।  ক্যাননের পাওয়ারশট, নাইকনের কুলপিক্স, সনির সাইবারশট, প্যানাসনিক লুমিক্স ইত্যাদি এধরনের ক্যামেরা। আকারে এগুলি বুকপকেটে রাখার মত ছোট থেকে এসএলআরের মত বড় হতে পারে। অবশ্যই লেন্সের ক্ষমতা এবং অন্যান্য বিষয় অনুযায়ী আকার বড়-ছোট হয়।
এন্ট্রি লেভেল এসএলআর ক্যামেরার সেন্সরকে বলা হয় মাইক্রো ফোর থার্ড সেন্সর। এই ক্যামেরাগুলির আকার কিছুটা বড়। এদের লেন্স পাল্টানো যায়।  ক্যাননের ডিজিটাল রেবেল, নাইকনের ডি৩১০০,  সনি আলফা এ৩৮০ ইত্যাদি এই ধরনের ক্যামেরা
মাইক্রো ফোর থার্ড সেন্সর ব্যবহার করে আরেক ধরনের ক্যামেরা তৈরী করা হয়। এতেও এসএলআরের মত লেন্স পাল্টানো যায়। পার্থক্য, এসএলআরের মত অপটিক্যাল ভিউফাইন্ডার নেই। ফলে আকারে ছোট হয়। প্যানাসনিক, অলিম্পাস, সনি এদের এধরনের ক্যামেরা রয়েছে।
মিডরেঞ্জ এসএলআর ক্যামেরাগুলি এন্ট্রি লেভেল থেকে উন্নত, সুবিধে বেশি, দাম বেশি। সেন্সর ছাড়াও আরো কিছু বিষয়ের পার্থক্য রয়েছে (আগামীতে উল্লেখ করা হবে) এই ক্যামেরাগুলিতে। ক্যাননের ৭ডি, নাইকনের ডি৯০ ইত্যাদি এই পর্যায়ের ক্যামেরা।
ফুলফ্রেম ক্যামেরাগুলিকে সরাসরি প্রফেশনাল ক্যামেরা বলা হয়। ক্যাননের ইওস মার্ক, নাইকনের ডি৭০০ ইত্যাদি এই পর্যায়ের ক্যামেরা।

মেগাপিক্সেল কি কাজ করে
মেগা শব্দের অর্থ নিশ্চয়ই জানেন। ১ হাজারে ১ কিলো, ১ হাজার কিলোতে ১ মেগা। অর্থাৎ ১ মেগাপিক্সেল অর্থ যেখানে ১০ লক্ষ পিক্সেল রয়েছে। ক্যামেরায় যখন উল্লেখ করা হয় ৫ মেগাপিক্সেল তার অর্থ সেই ক্যামেরায় উঠানো ছবিতে ৫০ লক্ষ পিক্সেল থাকবে।
পিক্সেলকে পাশাপাশি বসানো ডটের সাথে তুলনা করুন। যত বেশি ডট বসানো হবে তত বেশি যায়গা প্রয়োজন হবে। কাজেই, মেগাপিক্সেল যত বেশি হবে ছবির আকার তত বড় হবে।
মেগাপিক্সেল সম্পর্কে সবচেয়ে প্রচলিত ভুল ধারনা, সেটা বাড়লে ছবির মান ভাল হয়। আসলে ছবির মানের সাথে মেগাপিক্সেলের কোনই সম্পর্ক নেই। সাধারনভাবে ৮-১০ ইঞ্চি প্রিন্টের জন্য ৬ মেগাপিক্সেল সেন্সর যথেষ্ট। যারা বিশাল আকারের বিলবোর্ড তৈরীর জন্য ছবি উঠাবেন তাদের কথা আলাদা।

জুম আসলে কি ? কতটুকু প্রয়োজন ?
ক্যামেরার লেন্সের সাথে জুম গুরুত্বপুর্ন একটি শব্দ। এথেকে জানা যায় আপনি কত দুরের ছবি উঠাতে পারবেন। হিসাব প্রকাশ করা হয় মিলিমিটারে। এর দুটি মান থাকে, কাছের মাপকে বলে ওয়াইড, দুরের মাপকে বলে টেলিফটো। ওয়াইড এঙ্গেলে সামনের দৃশ্যের বেশি অংশ দেখা যায়, টেলিফটোতে এই কোন ছোট হতে থাকে, ফলে ছোট একটি অংশ দেখা যায়। যেমন ২৫-২৫০মিমি, এর অর্থ ওয়াইড এঙ্গেলে ২৫ মিমি, টেলিফটোতে ২৫০ মিমি। একে ১০এক্স হিসেবে লেখা হতে পারে। এক্স অর্থ ওয়াইড এঙ্গেলের মানের গুনিতক। বর্তমানে ৩৫এক্স (৮৪০মিমি) পর্যন্ত পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা রয়েছে (ক্যানন এসএক্স৩০আইএস)।
এতক্ষন যে জুমের কথা বলা হল সেকাজ করে লেন্স। এছাড়া ডিজিটাল জুম বলে আরেকটি বিষয় রয়েছে। সফটঅয়্যার এই কাজ করে। ভাল মানের ছবি পেতে চাইলে একে হিসেবের বাইরে রাখাই ভাল।
কতটুকু জুমের ক্যামেরা ব্যবহার করবেন সেটা নির্ভর করে ছবির ধরনের ওপর। যদি পাখির ছবি উঠানোর শখ থাকে তাহলে যত বেশি হয় ততই ভাল। যদি মুলত পারিবারিক, প্রকৃতি ইত্যাদির ছবি উঠানো প্রয়োজন হয় তাহলে তত জুম প্রয়োজন নেই। কাছে থেকে ফুলগাছের ছবি যত ভাল হবে, টেলিফটো ব্যবহার করে দুর থেকে তত ভাল ছবি পাওয়া যাবে না।
এসএলআর ক্যামেরাগুলিতে একটি লেন্স খুলে আরেকটি লাগানো যায়। সেকারনে ব্যবহারকারীরা ওয়াইড থেকে সুপার টেলিফটো পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের লেন্স ব্যবহার করেন। যত দুরের ছবি উঠাতে চান তত বেশে জুম প্রয়োজন (৩০০মিমি+)। সাধারন কাজের জন্য কমদামী এসএলআর ক্যামেরাগুলিতে ১৮-৫৫ মিমি লেন্স দেয়া হয় কিটলেন্স হিসেবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন ভাল পোর্ট্রেট এর জন্য প্রয়োজন ৮৫ মিমি। এজন্য ৮৫মিমি প্রাইম লেন্স পাওয়া যায়। কেউ আরো বাড়িয়ে ১৩৫মিমি কিংবা ২০০মিমি লেন্স ব্যবহার করেন।

আইএসও, এপারচার, সাটারস্পিড
ছবি উঠানোর সময় ক্যামেরার সেন্সরে যে আলো আসে তা থেকে সামনের দৃশ্যঅনুযায়ী ডিজিটাল ইমেজ তৈরী হয়। সেন্সর কি পরিমান আলোতে কতটুকু কাজ করবে সেটা প্রকাশ করা হয় আইএসও বলে একটি সংখ্যা দিয়ে। উদাহরন হিসেবে, ধরে নিন মোটামুটি আলোতে ১০০ আইএসওতে ভাল মানের ছবি পাওয়া যায়। সেখানে আইএসও ৫০ ব্যবহার করলে ছবিতে আলো কম পাওয়া যাবে। আর ২০০ ব্যবহার করলে অতিরিক্ত আলো পাওয়া যাবে। সাধারনভাবে আলো কম থাকলে সেখানে বেশি আইএসও ব্যবহার করা হয়, বেশি আলো থাকলে সেখানে কম। কাজটি ম্যানুয়াল মোডে আপনি ঠিক করে দিতে পারেন, অথবা ক্যামেরাকেই নিজে থেকে ঠিক করে নেয়ার দায়িত্ব দিতে পারেন।
লেন্সের মধ্যে দিয়ে আলো সেন্সরে যাওয়ার পথে এপারচার নামে জানালার মত একটি অংশ পার হতে হয়। এপারচার বড় করলে (জানালা বেশি খুললে) বেশি আলো ভেতরে যায়, আর বেশি আলো থাকলে তাকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য সামান্য খোলা হয়। এপারচার সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা হয়। যেমন ৪, ৫.৬, ১১ ইত্যাদি। ছোট সংখ্যা বড় এপারচার (বেশি আলো) এবং বড় সংখ্যা ছোট এপারচার বুঝায়।
আলো কতক্ষন সময় কাজ করবে সেটা নিয়ন্ত্রন করে সাটার স্পিড। বেশি আলো থাকলে অল্প সময়েই ছবি উঠানোর প্রয়োজনীয় আলো পাওয়া যায়। কাজেই সাটার স্পিড বেশি রাখতে হয়। কম আলো থাকলে সাটারস্পিড কমিয়ে বেশি আলো গ্রহন করতে হয়। এক্সপোজার নামে একটি শব্দ ব্যবহার করা হয় আলোর পরিমান বুঝানোর জন্য। এক্সপোজার বেশি অর্থ সেখানে আরো বেশি, কম অর্থ আলো কম। সেকেন্ড দিয়ে একাট প্রকাশ করা হয়। ১/৪০০ অর্থ এক সেকেন্ডের ৪০০ ভাগের একভাগ সময়।
সাটার স্পিড আপনি নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন অথবা ক্যামেরা পরিস্থিতি অনুযায় ঠিক করে নিতে পারে।
আইএসও, এপারচার এবং সাটারস্পিড এই তিনের সমম্বয়ে ভাল ছবি পাওয়া যায়। একমাত্র ম্যানুয়েল মোডে এই তিনটি পরিবর্তন করা হয়। অত্যন্ত দক্ষ ফটোগ্রাফাররাই সেটা করেন। অন্যরা যে কোন একটি বা দুটি নির্দিষ্ট করে দেন, তারসাথে মানানসই সেটিং করে নেয় ক্যামেরা।
এখানে মুলত আলোর বিষয় উল্লেখ করলেও এপারচার, সাটারস্পিড ইত্যাদির নানাবিধ ব্যবহার রয়েছে। বিভিন্ন পরিস্থিতে ভাল ছবি পাওয়ার জন্য সেদিকে দৃষ্টি দিতে হয়। সেকথা আগামীতে।

অটো, প্রিসেট এবং ম্যানুয়েল
অটো মোডে সমস্ত সেটিং করে নেয় ক্যামেরা নিজেই। আপনার সুবিধে হচ্ছে আদৌ কোনকিছু নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে ভাল ছবি পাবেন। অসুবিধে হচ্ছে,
সাটার স্পিডের উদাহরন দেখুন। আপনি উড়তে থাকা পাখির ছবি উঠাচ্ছেন। সাটার স্পিড বেশি থাকলে ডানার স্পষ্ট ছবি পাওয়া যাবে। সাটার স্পিড কমালে ছবি উঠানোর সময় ডানা যতটুকু সরবে ততটুকু অংশ ঝাপসা দেখা যাবে। আপনি কোনটি চান ? অবশ্যই একেক সময় একেকটি। চলন্ত গাড়ির ছবি উঠানোর সময় একবার দেখাতে চান সেটার গতি রয়েছে, আরেকসময় গাড়ির সমস্ত অংশ স্পষ্টভাবে দেখাতে চান। অটো মোডে একাজ নাও হতে পারে।
কাজেই, অটো মোডে মোটামুটি ভাল ছবি পাবেন, নিজের পছন্দমত হবে এমন কথা নেই।
এখানেই ভুমিকা প্রিসেট নামে তৈরী করে দেয়া সেটিং এর। মানুষের ছবি, খুব কাছে থেকে তোলা কোন বস্তুর ছবি, গাছপালা-আকাশের ছবি, রাতের ছবি এগুলির জন্য সুবিধেজনক সেটিং ক্যামেরার সাথে দেয়া হয়। আপনার কাজ প্রয়োজনের সময় ডায়াল ঘুরিয়ে সেটা সেট করে নেয়া। সঠিক প্রিসেট ব্যবহার করলে ভাল মানের ছবি পাবেন সবসময়।
আর আপনি যদি নতুনত্ব চান, ছবি তোলা ক্ষেত্রে পুরো স্বাধীনতা চান তাহলে ম্যানুয়েল মোড। যেখানে যে সেটিং প্রয়োজন সেখানে সেই সেটিং ঠিক করে ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। বিষয়টি যতটা জটিল মনে হচ্ছে আসলে ততটা না। ক্যামেরার অটো বা প্রিসেট মোডে গিয়ে আইএসও, এপারচার, সাটারস্পিড ইত্যাদি দেখে নিতে পারেন। তারসাথে মিল রেখে ম্যানুয়েল মোডে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে পারেন।

কোন ধরনের ক্যামেরা ব্যবহার করবেন
ডিজিটাল ক্যামেরার বিভিন্ন বিষয়গুলি জেনেছেন। আপনি যদি ক্যামেরা কিনতে যান তাহলে কোন ধরনের ক্যামেরা কিনবেন ?
কেনার সাথে অবশ্যই দামের সম্পর্ক রয়েছে। সম্ভব হলে যতটা সম্ভব বেশি দামের ক্যামেরা পছন্দ করতে পারেন। সাথে যে বিষয়গুলি বিবেচনা করবেন তা হচ্ছে,
ক্যামেরার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করুন। আপনি সবচেয়ে ভাল বিশাল আকারের ক্যামেরা কিনলেন অথচ বয়ে বেড়ানোর ভয়ে সেটা বাড়িতে রেখে বাইরে গেলেন। এমন অবস্থা নিশ্চয়ই চান না। সেক্ষেত্রে এমন ক্যামেরা বেছে নিন যা সবসময় পকেটে রাখা যাবে। পরিবারের ছবি, পিকনিকের ছবি উঠানোর জন্য সাধারন পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা যথেষ্ট হতে পারে। বাংলাদেশে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে এমন ভাল ক্যামেরা পাওয়া যায়।
বিভিন্ন যায়গা বেড়াতে গিয়ে ছবি উঠানো থেকে শুরু করে রীতিমত ফটোগ্রাফিতে আগ্রহী হলে সুপারজুম ক্যামেরার দিকে যেতে পারে। ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায় এমন ক্যামেরা পাওয়া যাবে।
আর পুরোপুরি ফটোগ্রাফার হতে চাইলে, সবচেয়ে ভাল মানের ছবি চাইলে অবশ্যই এসএলআর। প্রাথমিক মানের এসএলআর ৪০ হাজারের মধ্যে পাওয়া যাবে, মধ্যম মানের ক্যামেরা ১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। তারচেয়ে ভাল ক্যামেরা যারা খোজ করেন তাদের হয়ত পরামর্শ প্রয়োজন নেই।
ভাল ক্যামেরার সাথে ভাল লেন্স, ইমেজ প্রসেসর ইত্যাদি আভ্যন্তরিন বিষয়ের সম্পর্ক রয়েছে। কাজেই খ্যাতিমান কোম্পানীর ক্যামেরা কেনা নিরাপদ। ক্যানন এবং নাইকন উন্নতমানের ক্যামেরা নির্মাতাদের মধ্যে সেরা। এর বাইরে সনি, প্যানাসনিক, ফুজিফিল্ম, স্যামসাং, পেনটাক্স এদের দিকে দৃষ্টি দিতে পারেন।



কখন কোন মোডে ছবি উঠাবেন



এধরনের প্রশ্ন কেউ করলে বিরক্ত হতে পারেন। এটা কোন প্রশ্ন হল! যে ছবির জন্য যে মোড সেটাই তো ব্যবহার করবেন। এজন্যই পোট্রেট, ল্যান্ডস্কেপ, ক্লোজআপ ইত্যাদি মোড তৈরী করা হয়েছে।

কথাটা ঠিক। এই মোডগুলির পরও রয়েছে এপারচার প্রায়োরিটি এবং সাটার স্পিড প্রায়োরিটি বলে দুটি মোড। এবং সবশেষে ফুল ম্যানুয়েল বলে একটি মোড। যেখানে সাটারস্পিড, এপারচার থেকে শুরু করে সমস্ত সেটিং আপনি ঠিক করে দিতে পারেন।
বর্তমানের প্রায় সব কম্প্যাক্ট এবং এসএলআর ক্যামেরাতেই রয়েছে অনেকগুলি সিন মোড। সাধারনভাবে ছবি উঠানোর সময় আপনার ক্যামেরা থেকে পছন্দের সিন মোড ব্যবহার করবেন এটাই স্বাভাবিক। পেশাদার ফটোগ্রাফাররা সেটিং এরজন্য ক্যামেরার ওপর নির্ভর করেন না। তারা এই নিয়মের বাইরে ছবি উঠান। কারন একটাই, তারা নিজের পছন্দের কিছু চান। এবং শুনে অবাক হতে পারেন, সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় এপারচার প্রায়োরিটি মোড।
বিষয়টি বোঝার জন্য এপারচার কি কাজ করে একটু দেখে নেয়া যাক।
এপারচার হচ্ছে লেন্সের জানালা। যখন পুরোটা খোলা থাকে তখন বেশি আলো প্রবেশ করে, যখন কম খোলা থাকে তখন কম আলো প্রবেশ করে। এপারচার প্রকাশ করা হয় সংখ্যা দিয়ে। ছোট সংখ্যা বেশি এপারচার বুঝায়। যেমন ৩.৫ এপারচারে ক্যামেরায় যে আরো প্রবেশ করবে ২২ এপারচারে তারথেকে আলো অনেক কম পাওয়া যাবে।
কাজেই, এপারচার কন্ট্রোল করার একটি প্রধান কারন সঠিক আলো ব্যবহার। বাইরে যদি আলো বেশি থাকে তাহলে সেটা স্বাভাবিক পর্যায়ে আনার জন্য এপারচারের মান কমাবেন (সংখ্যায় বাড়াবেন), আবার বিপরীতভাবে আরো কম থাকলে বেশি আলো পাবার জন্য এপারচার বাড়াবেন (সংখ্যা কমাবেন)। এপারচার কতটাগুরুত্বপুর্ন জানার জন্য এসএলআর এর লেন্সের দামের পার্থক্য একটু জেনে নিন। সর্বোচ্চ ৩.৫ এপারচারের লেন্স কেনা যায় কয়েকশ ডলারে, সর্বোচ্চ ২ এপারচারের লেন্সের দাম কয়েক হাজার ডলার।
কাজেই এপারচারের কাজ আলো নিয়ন্ত্রন করা থেকেও বেশি কিছু।  এপারচার যত ছোট হয় ডেপথ অব ফিল্ড তত বেশি হয়। যেমন আপনি ল্যান্ডস্কেপের ছবি উঠাচ্ছেন যেখানে সামনের গাছপালা, দুরের পাহাড়, আকাশে মেঘ সবকিছুই স্পষ্টভাবে  পেতে চান। সেক্ষেত্রে বেশি এপারচার ভাল ফল দেবে। কেউ কেউ নির্দিস্ট করে বলে দেন ল্যান্ডস্কেপের জন্য আদর্শ এপারচার সেটিং হচ্ছে ২২।
আর এপারচার যত বেশি হয় ডেপথ অব ফিল্ড তত কম হয়। একেবারে অল্প কিছু যায়গার বিষয়কে স্পষ্ট দেখা যায়, তারপরই বাকি অংশগুলি ঝাপসা হতে থাকে। আপনি একটি ফুলের ছবি উঠাচ্ছে যেখানে অন্যান্য ফুল-গাছপালাগুলি ঝাপসা দেখা যাবে, এজন্য বেশি এপারচার প্রয়োজন।
আপনি যখন এপারচার প্রায়োরিটি মোডে ছবি উঠাচ্ছেন তখন খুব সহজেই এপারচার পরিবর্তনের সুযোগ আপনার হাতে থাকছে। এপারচার প্রায়োরিটি মোডে এপারচার পরিবর্তনের সাথে মিল রেখে সাটারস্পিড পরিবর্তিত হয়। কাজেই ওভারএক্সপোজার কিংবা আন্ডার এক্সপোজারের ভয় নেই। সেকারনেই এপারচার প্রায়োরিটি মোডের ব্যবহার এত বেশি।
সাটার স্পিড প্রায়োরিটি বিষয়টি বোঝা সেতুলনায় সহজ। আপনি হয়ত উড়ন্ত পাখি কিংবা চলন্ত গাড়ির ছবি উঠাচ্ছেন। সাটার স্পিড বেশি হলে স্পষ্ট ছবি পাওয়া যাবে, কম হলে গতির কারনে চলমান অংশগুলি ঝাপসা হবে। আপনি কোনটি চান সেটা ঠিক করার জন্য সাটারস্পিড প্রায়োরিটি মোড ব্যবহার করবেন। সাটারস্পিড প্রায়োরিটি মোডে পরিবর্তনের সাথে মিল রেখে এপারচার পরিবর্তিত হয় সেদিকেও দৃষ্টি রাখবেন।
আর যখন এপারচার এবং সাটার স্পিড দুটিই নিজের পছন্দমত ব্যবহার করতে চান তখন ম্যানুয়েল মোড। কাজের সুবিধের জন্য এপারচার অথবা সাটার স্পিড যেটা বেশি গুরুত্বপনুর্ন সেটা সিলেক্ট করে ক্যামেরায় অন্যটির মান দেখে নিতে পারেন।


সঠিক এক্সপোজার ব্যবহার করুন

ছবির দুধরনের সমস্যার সাথে আমরা পরিচিত। আলো কম হওয়া অথবা আলো বেশি হওয়া। অন্ধকার ছবি এবং জ্বলে যাওয়া ছবি এই দুটি শব্দ প্রচলিত এই দুটি বিষয় বুঝাতে, ফটোগ্রাফির ভাষায় Underexposed এবং Overexposed.

আলো কম থাকলে ছবি অন্ধকার দেখাবে এবং আলো বেশি থাকলে জ্বলে যাবে এই ধারনাই স্বাভাবিক। বর্তমান ফটোগ্রাফিতে এই ধারনা অচল। একেবারে কম আলোতেও সঠিক সবি উঠানো যায় কিংবা খুব বেশি আলোতেও আলো কমানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ফ্লাশ ব্যবহারের উদাহরনই দেখুন, একেবারে অন্ধকারে ফ্লাশ ব্যবহার করে উজ্বল ছবি পেতে পারেন, যদি কিছুটা আলো থাকে সেটা ফ্লাশের আলোর সাথে যোগ হবে। আবার যত কাছথেকে ফ্লাশ ব্যবহার করবেন আলোর পরিমান তত বেশি হবে, দুরে গেলে ফ্লাশের প্রভাব কমে যাবে। অনেকেই লক্ষ্য করেন না দুরত্ব অনুযায়ী কিংবা প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্লাশের আলো কমবেশি করার ব্যবস্থা রয়েছে।
বর্তমান সব ক্যামেরাতেই ছবি উঠানোর সাথেসাথে সেটা দেখে নেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। দেখে নিয়ে প্রয়োজনে ফ্লাশের আলো কমানো বা বাড়ানোর ব্যবস্থা করে নিন।
যেমন নাইকন ডি৯০ ক্যামেরাতে ফ্লাশের আলো কমবেশি করার জন্য ফ্লাশের বাটন চেপে ধরে কমান্ড ডায়াল ঘুরান। (+) বলতে আলো বাড়ানো এবং (-) বলতে আলো কমানো বুঝায়। কাজেই আপনার সঠিক সেটিং পরিস্থিতি অনুযায়ী ০ হতে পারে কিংবা +২ কিংবা -২ হতে পারে।
ফ্লাশ ছাড়া ছবি উঠানোর জন্য আলো নিয়ন্ত্রন করার জন্য ব্যবহার করবেন এপারচার কন্ট্রোল এবং সাটার স্পিড। এপারচারের মান সংখ্যায় যত বাড়াবেন আলো তত কমবে। যেমন ৫.৬ সেটিং যে পরিমান আলো ব্যবহার করবে ১৬ ব্যবহার করবে তার তুলনায় অনেক কম। আলো বেশি থাকলে এপারচারের মান বাড়িয়ে দিন।
সাটার স্পিড হচ্ছে কতক্ষন সময় এক্সপোজার ব্যবহার করা হবে সেই সময় বলে দেয়া। ১/৬০ সাটার স্পিড অর্থ সেকেন্ডের ৬০ ভাগের ১ ভাগ সময় আলো ব্যবহার করা হবে, ১/৩০ ব্যবহার করবে তার দ্বিগুন সময়। কাজেই যেখানে বেশি আলো প্রয়োজন সেখানে সাটার স্পিড কমিয়ে দিন। আলো বেশি থাকলে সাটার স্পিড বাড়িয়ে সেটা কমানোর ব্যবস্থা করুন। আবার মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে, ছবি উঠানোর সাথেসাথেই সেটা দেখে নিন এবং সেই অনুযায়ী পরিবর্তন করুন।



আরেকটি বিষয় হচ্ছে আইএসও। এর মান যত বেশি থাকবে ক্যামেরার সেন্সর তত দ্রুত আলো গ্রহন করবে। আরো কমানোর জন্য আইএসও মান কম ব্যবহার করুন, কম আলোতে আইএসও বেশি ব্যবহার করুন।
বর্তমানের অনেক ক্যামেরাতেই এক্সপোজার কমপেনশেসন বলে আরেকটি ফাংশন রয়েছে। যদি আপনার ক্যামেরায় থাকে তাহলে সেটা ব্যবহার করে এর বাইরেও এক্সপোজার কন্ট্রোল করে আরো ভালো ফল পেতে পারেন। এখানেও(+) বলতে এক্সপোজার বাড়ানো এবং (–) বলতে এক্সপোজার কমানো বুঝায়।
সঠিক এক্সপোজার মানেই ভাল ছবি। কাজেই কম বা বেশি আলোতে ছবি উঠানোর সময় এদিকে গুরুত্ব দিন।


ট্রাইপড কেন ব্যবহার করবেন



ক্যামেরা নির্মাতা কিংবা লেন্স নির্মাতা তাদের ষ্ট্যাবিলাইজেশনের বর্ননা এমনভাবে দেন যেন আপনি ভুমিকম্পের সময় ছবি উঠালেও তার প্রভাব পড়বে না ছবিতে। আপনি নিখুত ছবি পাবেন। যারা ছবি উঠান তারা খুব ভাল করেই জানেন বাস্তবতা আসলে কি।
তাদের বক্তব্য একেবারে ভুল সেকথা বলা হচ্ছে না। ষ্ট্যাবিলাইজেশন থাকা আর না থাকার মধ্যে পার্থক্য অনেকখানি। তারপরও, ষ্ট্যাবিলাইজেশন সব প্রয়োজন মেটায় না। বিশেষ বিশেষ সময়ে আপনার প্রয়োজন ট্রাইপড নামের একটি বস্তু।
প্রথমে ষ্ট্যাবিলাইজেশন বিষয়টি কি একটু জেনে নেয়া যাক। আপনি যখন ছবি উঠান তখন সাটার রিলিজ চাপ দেয়ার সময় কিছু সময়ের জন্য সেন্সরের সামনে থেকে সাটার সরে যায়, সেন্সরে আলো পড়ে এবং সামনে যাকিছু আছে সেটা আকা হয় সেখানে। এই সময় সেকেন্ডের হাজার ভাহের একভাগ থেকে শুরু করে কয়েক সেকেন্ড পর্যন্ত হতে পারে।
এই সময়ে যদি আপনার হাত কাপে (যা খুবই স্বাভাবিক) তাহলে তার প্রভাব পড়বে ছবিতে। হয়ত ছবিতে বিন্দুর ছবি উঠাচ্ছেন। ছবি উঠানোর এক মুহুর্তে বিন্দুটি এক যায়গা থেকে আরেক যায়গায় সরে গেল হাত কাপার কারনে। যার অর্থ আপনি ছবিতে দেখতে পাবেন বিন্দুটি এক যায়গার পরিবর্তে ঝাপসা হয়ে সরে গেছে। ছবির ধারালো প্রান্ত দেখে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সমস্যা আপনি নিজেই যাচাই করতে পারেন। সাটার স্পিড যত কম থাকবে এটা ঘটার সম্ভাবনা তত বেশি। আবার দুরত্ব যত বেশি হবে, সামান্য হাতকাপার প্রভাবও সেখানে প্রকটভাবে দেখা যাবে। অথচ আপনার দুরের ছবিও তোলা প্রয়োজন, কম আলোতে ছবি উঠানোর জন্য সাটার স্পিড কম রাখাও প্রয়োজন।
ক্যামেরা নির্মাতারা এর সমাধান দেন নানারকম পদ্ধতি। সেন্সর সিফট ষ্ট্যাবিলাইজেশন, লেন্স বেজড ষ্ট্যাবিলাইজেশন, ডিজিটাল ষ্ট্যাবিলাইজেশন, ডুয়াল ষ্ট্যাবিলাইজেশন ইত্যাদি নানারকম নামে এই কাজ করা হয়। একে কোম্পানী আবার একই কাজকে ভিন্ন ভিন্ন নামে উল্লেখ করে। যেমন ক্যানন যাকে ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন (আইএস) বলে নাইকন তাকে বলে ভাইব্রেশন রিডাকশন (ভিআর), ট্যামরন বলে ভাইব্রেশন কন্ট্রোল (ভিসি)। ষ্ট্যাবিলাইজেশনসহ লেন্সের দাম ষ্ট্যাবিলাইজেশনছাড়া লেন্স থেকে অনেক বেশি।
মুল কথা হচ্ছে আপনার হাত কাপার কারনে যতটুকু বিচ্যুতি ঘটেছে সেটা কমানোর জন্য লেন্স সরে যাওয়ার সাথেসাথেই আলো গ্রহন বন্ধ করে দেয়া। সেইসাথে কম আলোর সমস্যা দুর করার জন্য বিশেষভাবে সেটা প্রসেস করা। ফল হিসেবে সাধারনভাবে যেখানে কম সাটার স্পিড ব্যবহার করার কথা ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করে তারথেকে বেশি সাটারস্পিড ব্যবহার করা যায়।
কিছুকিছু কম্প্যাক্ট ক্যামেরা আরো অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করে। তারা খুব দ্রুত কয়েকটি ছবি উঠায়। তারপর সেগুলি হিসেব করে একটি ভাল ছবিতে পরিনত করে। এই ব্যবস্থা নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য। এসুযোগ এসএলআর কিংবা প্রফেশনাল ক্যামেরায় থাকে না।
ট্রাইপডের কথায় ফেরা যাক। ট্রাইপড অর্থ যার তিনটি পা। এটা তিন পা বিশিষ্ট ক্যামেরা ষ্ট্যান্ড। তিন পা এর সুবিধে হচ্ছে অসমতল যায়গাতেও অনায়াসে সোজাভাবে রাখা যায়।
ব্যবহারের নিয়ম, এর ওপর ক্যামেরা বসাবেন। ক্যামেরা আটকানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ট্রাইপডে রাখা অবস্থায় সহজে ক্যামেরা ঘুরানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ক্যামেরা সেকানে রেখে অন্ধকারের ছবিও যদি উঠান তাহলেও ক্যামেরা যেহেতু নড়বে না সেহেতু ছবি ঝাপসা হওয়ার কারন থাকবে না। অনেকে পুরো অন্ধকারেও ছবি উঠান এই পদ্ধতিতে যা নাইট ফটোগ্রাফি নামে পরিচিত।
ট্রাইপডের একটি সমস্যা হচ্ছে ক্যামেরার সাথে একেও বয়ে বেড়াতে হয়। এজন্য নানা আকারের ট্রাইপড পাওয়া যায়। বর্তমানে একেবারে ছোট, পকেটে রাখার মত ট্রাইপডও পাওয়া যায়। গরিলাপড নামের একধরনের ট্রাইপড চেয়ার থেকে শুরু করে গাছের ডাল পর্যন্ত যেকোন কিছুর সাথে আটকে রাখা যায়। এছাড়া মনোপড নামে একপাঅলা ষ্ট্যান্ডও রয়েছে। ব্যবহারের সময় এটা ধরে রাখতে হয়, তারপরও যথেষ্ট ভারসাম্য রক্ষা করা যায়।
বর্তমানে ক্যামেরাগুলি ষ্টিল ফটোগ্রাফিতে সীমাবদ্ধ নেই, প্রায় সবগুলিকে ভিডিও ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আর আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন টিভির ভিডিও যতটা স্পষ্ট আপনার করা ভিডিও ততটা স্পষ্ট বা স্থির না।
শুধুমাত্র ক্যামেরা বা লেন্সের ষ্ট্যাবিলাইজেশনের ওপর নির্ভর করে নিখুত ছবি পাওয়া যায় না। এজন্য ট্রাইপড একটি প্রয়োজনীয় বস্তু।
বাংলাদেশে ৩ হাজার টাকার মধ্যে যথেষ্ট ভাল মানের ফটোগ্রাফি/ভিডিও ট্রাইপড পাওয়া যায়।




ফ্লাশ কখন ব্যবহার করবেন না

মনে হতে পারে এটা অদ্ভুত প্রশ্ন। আলো থাকলে সেখানে ফ্লাশ প্রয়োজন নেই। আলো কম থাকলে ফ্লাশ ব্যবহার করতে হবে। ঘরের মধ্যে ছবি উঠানোর সময় ফ্লাশ ব্যবহার করতে হবে। ফটোগ্রাফি আলো পছন্দ করে। যত বেশি আলো তত ভাল ছবি।
মানুষ ফ্লাশ থেকে যতটা ভাল ফল আশা করে ফ্লাশ ব্যবহারের কারনে অনেক সময়ই ফল হয় ঠিক বিপরীত। কখনো একেবারে সাদা, কখনো কোন কোন যায়গা ঝলসে যাওয়া, কখনো গাঢ় ছায়া। খালিচোখে যা দেখে ছবি উঠিয়েছেন তার ধারেকাছেও না।
আপনি কাছ থেকে ছবি উঠাবেন, ছবি ঝলসে যাবে। ফ্লাশের আলো কজ করবে ১০ ফুট পর্যন্ত। ফল হিসেবে কাছের সবকিছু উজ্বল আর তার পেছনেই হঠাত করে অন্ধকার। আবার ছোট ক্যামেরার ফ্লাশ থেকে তৈরী হয় ভৌতিক সিনেমার মত লাল চোখ (রেড আই)। বিষয়কে আরো জটিল করে তুলেছে অনেক আধুনিক ক্যামেরা। ক্যামেরা নিজেই ধরে নেয় ফ্লাশ প্রয়োজন, সেটা নিজে থেকেই অন হয় এবং নিজে থেকেই জ্বলে। কোন কোন ক্যামেরায় ইচ্ছে করেও বন্ধ রাখা যায় না।
ফ্লাশের অনেক দুর্নাম করা হল। ফ্লাশ অবশ্যই প্রয়োজন হয়। কোনসময় ফ্লাশ ব্যবহার করবেন না সেটা আগে জেনে নিন;
.          ১০ ফুটের বেশি দুরত্বের ছবি উঠানোর সময় ফ্লাশ ব্যবহার করবেন না। এতে মানুষ বিরক্ত হবে, ব্যাটারীর শক্তি খরচ হবে, ছবিতে ফ্লাশের প্রভাব পাওয়া যাবে না। আপনি খেলার সময় ষ্টেডিয়ামে কিং কনসার্টের সময় হয়ত বহু ফ্লাশ জ্বলতে দেখেছেন। এরসাথে ছবি উঠানোর কোন সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র ফ্লাশ জ্বালানোর জন্যই জ্বালানো হয়। অনেকেই হয়থ জানে ফ্লাশ জ্বালালে কোন লাভ নেই কিন্তু কিভাবে ফ্লাশ বন্ধ রাখতে হয় জানে না।
.          মনে হতে পারে ঘরের মধ্যে ছবি উঠানোর জন্য ফ্লাশ জরুরী। বেশি আলো পাবার জন্য বেশি এপারচার, কম সাটারস্পিড, বেশি আইএসও ব্যবহার করলে গতিশীল বিষয়ের ঝাপসা ছবি পেতে পারেন। তারপরও, সেটা বাস্তবসম্মত। ফ্লাশ ব্যবহার করলে চলন্ত পাখাকে মনে হবে থেমে আছে। তাকে নিশ্চয়ই ভাল ছবি বলে না।

ফ্লাশ কখন ব্যবহার করবেন
.          শুনে হয়ত বিষ্মিত হতে পারেন, ফ্লাশ ব্যবহার করবেন উজ্জল রৌদ্রের মধ্যে ছবি উঠানোর সময়। কারন, রৌদ্রে দাড়ানো মানুষের ছবি উঠানোর সময় যে যায়গাগুলিতে ছায়ার কারনে অন্ধকার দেখায় সেই যায়গাগুলি আলোকিত করবে ফ্লাশ।
.          যেখানে অসম আলো রয়েছে সেখানে ফ্লাশ ব্যবহার করে ভাল ফল পাবেন।
.          কখনো কখনো অবশ্যই আপনি অল্প আলোর মধ্যেই বেশি সাটারস্পিড ব্যবহার করতে চান। সেখানে ফ্লাশ ব্যবহার করুন।

ফ্লাশ সম্পর্কে এই বক্তব্য অবশ্য বিল্ট-ইন ফ্লাশের জন্য কার্যকর। এসএলআর ক্যামেরার জন্য পৃথক ফ্লাশগুলিতে বহু ধরনের কন্ট্রোল রয়েছে। রিমোট ফ্লাশ ব্যবহারের সময় তিনদিকে ৩টি ফ্লাশ রেখে ছবি উঠাতে পারেন। ছবি উঠানোর সময় ৩টি ফ্লাশ সময়মত জ্বলে উঠবে। কোন কোন ফ্লাশে রেড-আই বাদ দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সেগুলোকে এই হিসেবে আনবেন না।
এমনকি অনেক বিল্টইন ফ্লাশেও আলো কমবেশি করার ব্যবস্থা রয়েছে। ৩ ফুট দুরত্বে যে সেটিং ব্যবহার করবেন ৮ ফুট দুরত্বের জন্য ভিন্ন সেটিং ব্যবহার করবেন। ফিল ফ্লাশ, স্লো সিংক ইত্যাদি সেটিং রয়েছে।
ফ্লাশ কিভাবে বন্ধ রাখা যায়, কিংবা আলো কমবেশি করা যায় বিষয়টি নির্দিষ্ট ক্যামেরার ওপর নির্ভরশীল। জানার জন্য ক্যামেরার ম্যানুয়েল দেখে নিন।
শেষকথা হচ্ছে, আরো কম কাজেই ফ্লাশ ব্যবহার করতে হবে এটা ধরে নেবেন না। বরং অধিকাংশ ছবি ফ্লাশ ছাড়াই উঠাতে চেষ্টা করুন। আর ফ্লাশ যখন ব্যবহার করবেনই তখন তাকে শুধুমাত্র আলো জ্বলার যন্ত্র ধরে নেবেন না।আরো যে বিষয়গুলি আছে সেগুলি জেনে নিন।




ডেপথ অব ফিল্ড


ডেপথ অব ফিল্ড এমন একটি বিষয় যার ওপর ছবির সৌন্দর্য্য নির্ভর করে।
একথা আসলে ডেপথ অব ফিল্ড সম্পর্কে কোন উত্তর দেয় না। আসলেই ডেপথ অব ফিল্ড বিষয়টি পরিমাপ করার ব্যবস্থা নেই। সাধারনভাবে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনি যখন ছবি ওঠান তখন কোন একটি বিন্দুতে ফোকাস করেন। সেই বিন্দুটি সবচেয়ে স্পষ্ট দেখা যায়। কোনকিছু সেই বিন্দু থেকে যতটা দুরে থাকবে তার ঝাপসা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। তবে এর পার্থক্য রয়েছে।

যেমন আপনি খুব কাছ থেকে একটি ফুলের ছবি উঠিয়েছেন, তার কয়েক ইঞ্চি দুরত্বের আরেকটি ফুল বা পাতা ঝাপসা দেখা যাচ্ছে। আবার আপনি খোলা মাঠে দুরের একটি কুড়েঘরের ছবি উঠিয়েছেন, তারথেকে বহুদুরের গাছপালা কিংবা আকাশ ঝাপসা হয়নি। এই দুই উদাহরন থেকে ডেপথ অব ফিল্ডের পরিচয় দিয়ে বলা যায়, প্রথম উদাহরনে ডেপথ অব ফিল্ড কম, পরের উদাহরনে ডেপথ অব ফিল্ড বেশি।
আপনি প্রশ্ন করতে পারেন কোনটি ভাল।
এর কোন সঠিক উত্তর নেই। আপনি যখন একটি ফুলের ওপর বসা প্রজাপতির ছবি উঠাবেন তখন আপনি চান শুধুমাত্র ফুল এবং প্রজাপতি স্পষ্ট দেখা যাক, এর বাইরের সবকিছু ঝাপসা থাকুক।  ঝাপসা বিষয়গুলি অষ্পষ্ট ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে মুল বিষয়কে আরো স্পষ্ট করে তোলে। কাজেই এক্ষেত্রে কম ডেপথ অব ফিল্ড ভাল।
আবার পরের উদাহরনের ক্ষেত্রে যদি আকাশ কিংবা দুরের গাছপালা ঝাপসা হয় তাহলে ছবি সম্পুর্ন মনে হবে না। সেক্ষেত্রে বেশি ডেপথ অব ফিল্ড সুবিধেজনক। অবশ্য ল্যান্ডস্কেপের ক্ষেত্রেও ডেপথ অব ফিল্ড কমিয়ে ভিন্নধরনের ছবি পেতে পারেন।
কাজেই আপনি ডেপথ অব ফিল্ড কম নাকি বেশি ব্যবহার করবেন এর কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই। ছবির বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দিয়ে আপনাকেই ঠিক করে নিতে হবে আপনি কি চান।

এপারচার এবং ডেপথ অব ফিল্ড
আপনি ডেপথ অব ফিল্ড বেশি চান অথবা কম চান, সেটা ঠিক করবেন কিভাবে ?
সবচেয়ে সহজ উপায় এপারচার পরিবর্তন করা। এপারচার যত ছোট (মান বেশি) ডেপথ অব ফিল্ড তত বেশি। অনেকে নির্দিষ্ট করে বলেন ল্যান্ডস্কেপের জন্য এফ/২২ ব্যবহার করার কথা। কম ডেপথ অব ফিল্ডের জন্য ব্যবহার করবেন এফ/৫.৬ কিংবা আরো বেশি (সংখ্যায় কম)।

লেন্স এবং ডেপথ অব ফিল্ড
লেন্সের ফোকাল লেন্থ প্রভাব ফেলে ডেপথ অব ফিল্ডের ওপর। ফোকাল লেন্থ যত কম হবে ডেপথ অব ফিল্ড তত বেশি হবে। যেমন ৫৫ মিমি লেন্সে এফ/৮ এপারচারে যে ডেপথ অব ফিল্ড পাওয়া যাবে একই এপারচারে ২০০ মিমি লেন্সে পাওয়া যাবে তারথেকে অনেক কম। যে কারনে কম ফোকাল লেন্থের লেন্সগুলি ল্যান্ডস্কেপ ফটোগ্রাফির জন্য বেশি উপযোগি।

দুরত্ব এবং ডেপথ অব ফিল্ড
ক্যামেরা থেকে বিষয়ের দুরত্ব যত বেশি ডেপথ অব ফিল্ড তত বেশি। একটি ফুলের একেবারে কাছে থেকে ছবি উঠালে আপনি যেমন একেবারে কম ডেপথ অব ফিল্ড পাবেন, দুর থেকে উঠালে সেটা পাবেন না।

কাজেই ভাল ছবি উঠানোর জন্য ডেপথ অব ফিল্ড বিষয়টির দিকে দৃষ্টি দিন। একই ছবি ভিন্ন ভিন্ন সেটিংএ উঠিয়ে সেগুলি পর্যবেক্ষন করুন। একসময় ঠিক যেমনটি চান তেমনটিই পাবেন।


জেপেগ বনাম র মোড



সাধারনভাবে প্রায় সব ক্যামেরাতেই ছবি সেভ হয় জেপেগ ফরম্যাটে। এর সুবিধে হচ্ছে এই ফাইলের জন্য কম যায়গা প্রয়োজন হয়, খুব সহজে যেকোন সফটঅয়্যারে সরাসরি ব্যবহার করা যায়। আর সমস্যার দিক হচ্ছে, এতে লস কম্প্রেসন ব্যবহার করা হয়। আপনি ফাইল সাইজ যত ছোট করবেন ছবির মান তত খারাপ হবে। যারা একেবারে নিখুত ছবি পেতে যান তাদের সমস্যা আরো গভীরে। সম্ভাব্য সবচেয়ে বড় ফাইলসাইজ ব্যবহার করে যা পাওয়া যায় তাতেও সন্তুষ্ট নন তারা। কারন,


মনে করুন সুর্যাস্তের ছবি উঠাচ্ছে। সরাসরি আলো ছাড়াও একধরনের আলোর আভা রয়েছে চারিদিকে। জেপেগ মোডে ছবি উঠানোর সময় সেন্সর সেগুলি ধারন করে। তারপর ক্যামেরার প্রসেসর যখন তাকে জেপেগ ফরম্যাটে কনভার্ট করে তখনই সেটা হারিয়ে যায়। আপনি খালিচোখে যতটা সুন্দর দেখেছেন ছবিতে সেটা পেলেন না।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবহার করা হয় র (Raw) ফরম্যাট। নাম থেকেই ধরে নিতে পারেন এটা আসলে কোন ইমেজ ফরম্যাট না। সেন্সরে যে তথ্য ধরা পড়ে তাকেই সেভ করে রেখে দেয়া।
র-মোডের সুবিধে হচ্ছে মুল দৃশ্যটি আপনি পাচ্ছেন ফাইল হিসেবে। এরপর আপনার পছন্দমত সেখানে পরিবর্তন করে নেবেন। যেহেতু সেখানে সব তথ্যই থেকে যায় সেহেতু কোনকিছু না হারিয়েই আলো-ছায়ার পরিবর্তন করার সুবিধে রয়েছে। কাজেই একেবারে নিখুত ছবি পাওয়া যাবে।
আর সমস্যার দিক হচ্ছে এরজন্য ফাইল সাইজ হয় অনেক বড়। মেমোরী কার্ডে অনেক বেশি যায়গা প্রয়োজন হয়। আর একে সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। এই ফরম্যাট প্রতিটি ক্যামেরার জন্য মডেল ভিত্তিক। আপনাকে এমন সফটঅয়্যার ব্যবহার করতে হবে যে সেই ফরম্যাট ব্যবহার করে। আশার কথা হচ্ছে ক্যামেরা কেনার সময় র-কনভার্টার হিসেবে কোন সফটঅয়্যার দেয়া হয়। আর ইমেজ এডিটিং এর জনপ্রিয় সফটঅয়্যার এডবি লাইটরুম, ফটোশপ ইত্যাদিতে সব মডেলের র-ফরম্যাট ব্যবহারের ব্যবস্থা দেয়া হয়।
ফটোশপের পুরনো ভার্শনে র-ফরম্যাট ব্যবহারের জন্য এডবি ক্যামেরা র (Adobe Camera Raw) নামে একটি সফটঅয়্যার পৃথকভাবে ইনষ্টল করতে হত। ফটোশপ সিএস-৫ এর সাথে এটা নিজেই ইনষ্টল হয়। আপনি র-ফরম্যাটের ইমেজ ওপেন করার সময় নিজে থেকেই সেটা ওপেন হয়। মুল ইমেজের কোনরকম ক্ষতি না করে সব ধরনের পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে সেখানে।

সেখানে কি কি পরিবর্তন করা যায় একবার দেখে নিন।
.          ফটোশপ ওপেন করুন এবং একটি র-ফরম্যাটের ছবি উঠানোর জন্যFile – Open কমান্ড দিন।
.          নির্দিস্ট ফোল্ডার থেকে ফাইলটি সিলেক্ট করুন। ইমেজটি Camera Raw ব্যবহার করে ওপেন হবে।
.          এখানে White Balance, Temperature, Tint থেকে শুরু করেExposure, Recovery, Fill Light, Blacks, Brightness, Contrast, Clarity, Vibrance, Saturation ইত্যাদি বিষয়ের পরিবর্তন করা যাবে স্লাইডার ব্যবহার করে। সাথেসাথে ছবিতে তার প্রিভিউ দেখা যাবে। কোন পরিবর্তনেই মুল ইমেজের কোনরকম পরিবর্তন হবে না বা ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না।
.          পছন্দমত পরিবর্তন করার পর Open copy অথবা Done বাটনে ক্লিক করুন।

আপনার ক্যামেরা যদি র-ফরম্যাট সাপোর্ট করে (কমদামী ক্যামেরায় এই ব্যবস্থা নাও থাকতে পারে) তাহলে র-ফরম্যাটে ছবি উঠান। ছবি উঠানোর সময় সবধরনের সেটিং নিয়ে মাথা না ঘামিয়েই ভালমানের ছবি পাওয়া যাবে।
আর নতুন ক্যামেরা কেনার সময় সেটা র-ফরম্যাট সাপোর্ট করে কিনা জেনে নিন।

·        সবসময়ই নতুন নতুন মডেলের ক্যামেরা বাজারে আসছে। কাজেই কিছুটা পুরনো ভার্শনের সফটঅয়্যারে সেই মডেলের জন্য র-সাপোর্ট নাও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে নিন।
·        এডবি ব্রিজ, এসিডিসি প্রো ইত্যাদি সফটঅয়্যারে র-ফরম্যাটের ইমেজ দেখার ব্যবস্থা রয়েছে।



প্যানোরামা



আপনি নিশ্চয়ই এমন ছবি দেখেছেন যেখানে বিস্তৃত প্রান্তরের ছবি রয়েছে। আপনি কোথাও দাড়িয়ে মাথা ঘুরিয়ে চারিদিকে দৃষ্টি দিলে যেমন দেখা যায় তেমন। ফটোগ্রাফির ভাষায় এটাই প্যানোরামা। অবশ্যই আপনি একবারে বামদিক, সামনের দিক এবং ডানদিকের ছবি উঠাতে পারেন না। এদেরকে পৃথক পৃথকভাবেই উঠানো হয়, তারপর জোড়া লাগানো হয় (stitch) ফটোশপের মত কোন সফটঅয়্যার দিয়ে। কুইটটাইম এর মত সফটঅয়্যার ব্যবহার করে এথেকে এমন ছবি (ভিআর) তৈরী করা যায় যা ড্রাগ করে ঘুরানো যায়।  মনে হবে আপনি থ্রিডি ছবি ঘুরিয়ে দেখছেন।

যেমন তেমনভাবে উঠানো ছবি যে ঠিকভাবে জোড়া দেয়া যায় না এটা বলে দেয়া প্রয়োজন নেই। আর তখনই প্রশ্ন ওঠে, ঠিক কিভাবে ছবি উঠালে একেবারে নিখুত প্যানোরামা পাওয়া যাবে। সেই বিষয়গুলিই উল্লেখ করা হচ্ছে এখানে।
.          ট্রাইপড ব্যবহার করুন। এবিষয়ে এরবেশি বলা প্রয়োজন নেই।
ট্রাইপড ছাড়া প্যানোরামা ছবি উঠাতে পারেন, সেক্ষেত্রে পাশাপাশি তো বটেই, ছবিগুলিকে ওপরে-নিচেও সমান করতে হবে।
.          ট্রাইপডকে ভুমির সমান্তরাল করুন। ভাল মানের প্রায় সব ট্রাইপডেই লেভেল কন্ট্রোলের ব্যবস্থা রয়েছে। পানির মত তরল (bubble) রয়েছে যা দেখে বোঝা যায় ট্রাইপড ঠিকভাবে রাখা হয়েছে কিনা।
.          ক্যামেরাকেও ভুমির সমান্তরাল রাখুন। অনেকে এজন্য ফ্লাশ হট-সুতে বাবল ব্যবহার করেন। ছোট শিশিতে পানি রেখে আপনি নিজেই এধরনের কিছু তৈরী করে নিতে পারেন।
.           প্রতিটি ফ্রেমের জন্য কতটুকু যায়গা ব্যবহার করবেন আগেই ঠিক করে নিন। ২০ থেকে ৩০ ভাগ যায়গা একটির ওপর আরেকটি (ওভারল্যাপিং) ব্যবহার করুন। নির্দিষ্ট কোন বস্তু দেখে বিষয়টি ঠিক করে নিতে পারেন। অর্থাত কোন একটি ফ্রেমের ডানদিকে ২৫ ভাগ দুরত্বে যে বস্তু থাকবে সেটা পরবর্তী ফ্রেমের বামদিকে ২৫ ভাগ দুরত্বে রাখুন।
.          মিটার দেখে নিন এরপর এক্সপোজার ঠিক করুন ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে। অটো কন্ট্রোল ব্যবহার করলে একেক ফ্রেমের এক্সপোজার একেক রকম হতে পারে।
.          হোয়াইট ব্যালান্স ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে ঠিক করে নিন।
.          সবসময় বামদিকের ফ্রেম থেকে ছবি উঠানো শুরু করুন। কোথায় শুরু কোথায় শেষ নিশ্চিত করার জন্য শুরুতেই দুই প্রান্তের ছবি উঠিয়ে নিতে পারেন।
.          এদেরকে জোড়া দেয়ার সময়ও এভাবেই পরপর জোড়া দিন।



পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির জন্য গুরুত্বপুর্ন বিষয়গুলি



অধিকাংশ মানুষ সুন্দর বাগান, সমুদ্র, পাহাড় এসবের ছবি উঠাতে পছন্দ করেন। কিন্তু বাস্তব সত্য তো এটাই, সবচেয়ে প্রিয় ছবি হচ্ছে পরিচিত কারো পোর্ট্রেট। পরিবারের কোন সদস্য কিংবা বন্ধু। কিছু বিষয় লক্ষ্য করে করে আপনি অনায়াসে পেতে পারেন ভাল মানের পোর্ট্রেট।

ঠিক যায়গায় ছবি উঠান
সাধারনত পোর্টেট ফটোগ্রাফিতে মুল ব্যক্তির দিকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়, ব্যাকগ্রাউন্ডের দিকে ততটা দৃষ্টি দেয়া হয় না। ভাল পোর্ট্রেটের জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড গুরুত্বপুর্ন। ব্যাকগ্রাউন্ডে বৈচিত্র যত কম থাকে তত ভাল। একটি ইটের দেয়াল, সবুজ মাঠ কিংবা একরঙা পর্দা এগুলি ভাল পোর্ট্রেট ইমেজ তৈরী করতে পারে। বিপরীতভাবে অগোছালো ব্যাকগ্রাউন্ড ছবির সামঞ্জস্য নষ্ট করে। অগোছালো গাছের ডাল, ঘরের ফার্নিচার ইত্যাদি কম্পোজিশনে সমস্যা তৈরী করতে পারে। ছবি উঠানোর আগে ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে নিন। হয়ত সামান্য কয়েকপা সরে গেলেই আরো সুন্দর ব্যাকগ্রাউন্ড পেতে পারেন।
ঘরে উচুমানের আলোর ব্যবস্থা না থাকলে যতটা সম্ভব  বাইরে ছবি উঠান। রৌদ্রজ্জ্বল দিন হোক আর মেঘলা দিনই হোক, ঘরের সাধারন লাইটের আলো থেকে ভাল ফল পাওয়া যাবে।

ক্যামেরা সেটিং ঠিক রাখুন
ক্যামেরা পোর্ট্রেট মোড বলে একটি সেটিং রয়েছে। এই মোড ব্যবহার করুন। পোর্ট্রেট এর জন্য ডেপথ অব ফিল্ড, সাটার স্পিড, এপারচার ইত্যাদি যাকিছু প্রয়োজন ক্যামেরা ঠিক করে নিবে। অনেক ক্যামেরাতেই ফেস ডিটেকশন রয়েছে। ক্যামেরা নিজে থেকেই মুখের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ফোকাস করবে। এছাড়াও অনেক ক্যামেরায় স্মাইল ডিটেকশন রয়েছে যা শুধুমাত্র হাসার সময় ছবি উঠাবে, ব্লিংক ডিটেকশন চোখ বন্ধ আছে কিনা যাচাই করে ছবি উঠাবে।
ফ্লাশের দিকেও দৃষ্টি দিন। ফ্লাশের জন্য ফিল ফ্লাশ বলে সেটিং থাকার কথা। যদি আপনার ক্যামেরায় থাকে তাহলে সেটা ব্যবহার করুন। এই সেটিংএ ছবি উঠানোর আগেই আলো তৈরী হয়, ফলে রেড আই নামের লাল চোখের সমস্যা এড়ানো যায়।

আলো ঠিকভাবে ব্যবহার করুন
ব্যক্তির মুখে আলো কোনদিক থেকে কতটুকু আসছে লক্ষ্য করুন। যদি পিছনে উজ্জ্বল আলো থাকে এবং মুখের ওপর আলো কম থাকে তাহলে ভাল ছবি পাবেন না। বাইরে ছবি উঠানোর জন্য সকালে এবং সন্ধ্যার আগে পাওয়া যায়, যখন আলোর প্রখরতা কম থাকে। দিনের মাঝামাঝি সময় ছায়ায় ছবি উঠাতে চেষ্টা করুন। ছায়ায় ফ্লাশ ব্যবহার করে মুখে আলো ফেলে ভাল ফল পাওয়া যাবে।
ফ্লাশের আলো কমবেশি করার ব্যবস্থা থাকলে দুরত্ব অনুযায়ী সেটা ঠিক করে নিন।

ফ্রেম পুরন করুন
আপনি যতটুকু উঠাতে চান ঠিক ততটাই ফ্রেমের মধ্যে রাখুন। চারিদিকের অতিরিক্ত যায়গা বাদ দিন। প্রয়োজনে কাছে যান অথবা জুম লেন্স ব্যবহার করুন।

হাসিমুখের ছবি উঠান, স্বাভাবিক ভঙ্গির ছবি উঠান
সরাসরি ক্যামেরার দিকে না তাকিয়ে অন্যকিছুর দিকে তাকাতে বলুন এবং হাসিমুখ করতে বলুন। তাকে তৈরী হতে সময় দিন। যতটা সম্ভব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে ছবি উঠান। কখনো কখনো দাত বের করা হাসির চেয়ে চোখের দৃষ্টি কিংবা অন্য কোন অভিব্যক্তি উচুমানের ছবি পেতে সাহায্য করে।


ফোকাল লেন্থ, এঙ্গেল অব ভিউ এবং নানা ধরনের লেন্স



ক্যামেরা কিংবা ছবি উঠানোর কথা বললেই কিছু শব্দ শোনা যায়, ওয়াইড এঙ্গেল, টেলিফটো, ফোকাল লেন্থ ইত্যাদি। কিংবা লেন্সের ক্ষেত্রে বলা হয় অত মিলিমিটার। এই বিষয়গুলি ঠিক কি বুঝায়, ছবিতে এর কি প্রভাব পরে নতুন ফটোগ্রাফারদের কাছে অনেকটাই অশ্পষ্ট মনে হতে পারে। বিষয়টি স্পষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
হয়ত লক্ষ করেছেন ডিজিটাল ক্যামেরার তুলনা করা হয় ৩৫মিলিমিটার ক্যামেরার সাথে। আগেকার দিনের ৩৫ মিলিমিটার ক্যামেরাকেই এখনও ষ্ট্যান্ডার্ড ধরে তারসাথে তুলনা করা হয়। যেমন উল্লেখ করা হল অমুক লেন্স ১৮-৮৫ মিমি, এরপরই উল্লেখ করা হয় ৩৫ মিমি এর তুলনায়।
খালিচোখে আমরা যেমন দেখি ছবিতে যদি ঠিক তেমনটি পেতে চাই তাকে বলতে পারি নরম্যাল লেন্স। হিসেব করে দেখা গেছে ৫০ থেকে ৫৫ মিমি পর্যন্ত লেন্সে এধরনের ছবি পাওয়া যায়। কাজেই লেন্সের হিসেবে এগুলি ষ্ট্যান্ডার্ড লেন্স নামে পরিচিত।
যদি এরথেকে কম ফোকাল লেন্থ হয় তাহলে সামনের দৃশ্য খালিচোখে যতটা দেখা যায় তারথেকে বেশি দেখা যাবে। লেন্স অনেক বেশি কৌনিক দৃশ্য ধারন করে, সেকারনে একে বলা হয় ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স। মুলত ৩৫ মিমি এর নিচের ফোকাল লেন্ধের লেন্সগুলি ওয়াইড এঙ্গেল নামে পরিচিত। এঙ্গেলের পরিমান যদি খুব বেশি হয় তাহলে সামনের দৃশ্য গোলাকার ধারন করে। অনেকটা মাছের চোখের মত বলে এর নাম ফিস-আই লেন্স।
আবার বিপরীতভাবে ফোকাল লেন্থ যদি বেশি হয় তাহলে সামনের দৃশ্যের জন্য কোন ছোট হয়ে আসে এবং নির্দিষ্ট অংশ দেখা যায়। একে ন্যারো এঙ্গেল লেন্স বলতে পারেন, তবে বাস্তবে একে বলা হয় লং ফোকাস লেন্স, কিংবা টেলিফটো লেন্স কিংবা জুম লেন্স।
নির্দিস্টভাবে লেন্সের যে ভাগগুলি রয়েছে তা হচ্ছে
ফিসআই লেন্স : ৬ থেকে ৮ মিমি। অন্তত ১৮০ ডিগ্রী পর্যন্ত ধারন করতে পারে। কখনো কখনো ২২০ ডিগ্রী পর্যন্ত (ক্যামেরার পেছন দিকে) ধারন করার মত লেন্সও রয়েছে।
ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স : ১৮ থেকে ৩৫ মিমি পর্যন্ত। সাধারন কাজের জন্য এগুলি ব্যবহার করা হয়। এতে ডেপথ অব ফিল্ড বেশি পাওয়া যায়, ফলে ল্যান্ডস্কেপ, ইন্টেরিয়র, আর্কিটেকচার ইত্যাদি কাজের জন্য বেশি উপযোগি।
ষ্ট্যান্ডার্ড লেন্স : ৫০ মিমি। মানুষের চোখে দেখার কাছাকাছি বলে এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। অনেক বেশি এপারচার ব্যবহার করা যায় বলে কম আলোতে ভাল ছবি পাওয়া যায়।
লং ফোকাস লেন্স : ৮০ থেকে ৪০০ মিমি। বিষয়কে অনেক বড় দেখা যায় বলে দুরের কোনকিছু ছবি উঠানোর জন্য বেশি উপযোগি। স্পষ্টভাবে দুরের কিছুর ছবি উঠানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। দুরত্ব বাড়ার সাথেসাথে ডেপথ অব ফিল্ড কমে যায়।
সুপারজুম বা এক্সট্রিম লং ফোকাস লেন্স : ৪০০ মিমি এর ওপর লেন্সকে এই দলে ফেলা হয়। পাখি বা বন্য প্রানী এই ধরনের বিষয়ের জন্য বেশি উপযোগি। অনেকসময় একে টেলিফটো লেন্সও বলা হয়। সাধারনত এগুলি আকারে বড় এবং ওজন বেশি বলে ট্রাইপড ব্যবহার করতে হয়। ষ্টেডিয়ামে খেলার সময় সাংবাদিকরা এগুলি ব্যবহার করে দুর থেকে ছবি উঠান।
এর বাইরে কিছু বিশেষ ধরনের লেন্স রয়েছে। যেমন;
ম্যাক্রো লেন্স : মাছির চোখ কিংবা ঘাসের ছোট একটি ফুল কাছ থেকে উঠানোর জন্য বিশেষ ধরনের এই লেন্স ব্যবহার করা হয়। যদিও এর ফোকাল লেন্স ৫০ থেকে ২০০ মিমি, এতে বিশেষভাবে ফোকাস করার কারনে বিষয়কে অনেক বড় আকারে পাওয়া যায়। এক্সটেনশন টিউব নামে একধরনের এডাপটার ব্যবহার করে সাধারন লেন্সকে ম্যাক্রো লেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যায়। অনেকে নিজেই এধরনের টিউব তৈরী করে নেন। মুলত ক্যামেরা থেকে মুল লেন্সকে কিছুটা দুরত্বে রেখে একাজ করা হয়।
জুম এডাপটার : কোন লেন্সের সর্বোচ্চ ফোকাল লেন্থকে আরো বাড়ানোর জন্য একধরনের এডাপটার ব্যবহার করা হয়। ২এক্স এডাপটার ব্যবহারের অর্থ লেন্সের আগের ফোকাল লেন্থকে দ্বিগুন করা। ক্যামেরা এবং লেন্সের মাঝখানে একে লাগানো হয়।



ক্যামেরা ব্যাগ : কি দেখে কিনবেন


আপনাকে যদি ক্যামেরা (অথবা ভিডিও ক্যামেরা) নিয়ে বাইরে যেতে হয় তাহলে প্রয়োজনীয় জিনিষগুলির একটি হচ্ছে ব্যাগ কিংবা কেস। ক্যামেরা এবং অন্যান্য সবকিছুকে শুধু সহজে বহন করাই না, বরং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ক্যামেরাকে রক্ষা করে এগুলি। এমনকি হঠাত আসা বৃষ্টি থেকেও।

আপনার প্রয়োজনীয় ব্যাগ বাছাই করার জন্য যে বিষয়গুলির দিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন তা হচ্ছে;
ব্যাগের মাপ
সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন বিষয় হচ্ছে যে আপনার ক্যামেরার মাপের সাথে ব্যাগ মানানসই কিনা। যদি কম্প্যাক্ট ক্যামেরা হয় তাহলে কোমড়ে ঝুলানো পাউচ থেকে শুরু করে ছোট আকারের সোল্ডার ব্যাগ যথেস্ট হতে পারে। যদি এসএলআর হয়, সাথে একাধিক লেন্স এবং ফ্লাশ থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই তাদের সবগুলির জন্য যায়গা আছে দেখে ব্যাগ পছন্দ করতে হবে। বডিসহ একটি লেন্স, ২টি লেন্স, ৩টি লেন্স ইত্যাদি নানাধরনের মাপে ব্যাগ তৈরী করা হয়। এর ওপর রয়েছে মডেলের বিষয়। এসএলআর ক্যামেরাগুলি ছোট, মাঝারী, বড় এই প্রধান তিনটি মাপের হয়। ব্রান্ড ভিত্তিক পার্থক্যও রয়েছে। আপনি নাইকন ক্যামেরার ব্যাগ কেনার সময় ক্যানন ক্যামেরার জন্য তৈরী ব্যবহার কিনবেন না এটাই স্বাভাবিক। কাজেই ব্যাগ কেনার আগে নির্দিস্ট মডেল এবং সাথে আনুসাঙ্গিক যাকিছু রয়েছে সেগুলি হিসেব করে ব্যাগ খোজ করুন।
নির্দিষ্টভাবে ক্যামেরার জন্য তৈরী ব্যাগই ব্যবহার করুন। সেখানে ক্যামেরা এবং লেন্সের জন্য সঠিক মাপের যায়গা করা থাকে।
ব্যাগের ধরন
ক্যামেরা ব্যাগের জন্য কয়েকটি ধরন প্রচলিত, হোলষ্টার, স্লিং, সোল্ডার, ব্যাকপ্যাক, রোলিং ইত্যাদি। একেবারে ছোটর জন্য হোলষ্টার, ছোট থেকে মাঝারী ক্যামেরার জন্য সোল্ডার, ছোট-মাঝারী থেকে বড়র জন্য  ব্যাকপ্যাক এবং একেবারে বড় ব্যাগ হিসেবে রোলিং ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। আপনি যেধরনের ব্যাগ ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন সেধরনের ব্যাগ বেছে নিন। সাধারনত যারা বন-জঙ্গল-পাহাড়ে ছবি উঠাতে যান তারা পছন্দ করেন সোল্ডার অথবা ব্যাকপ্যাক।
সফট ব্যাগগুলি এধরনের কাজের জন্য বেশি উপযোগি। আর গাড়িতে চলাফেরা করলে কেস (বাক্সের মত) ব্যবহার বেশি নিরাপদ। আঘাত পেলেও ক্যামেরার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
কি দিয়ে, কিভাবে তৈরী
ব্যাগ কত ভালভাবে তৈরী তার ওপর নির্ভর করে সেটা ক্যামেরাকে কতটা নিরাপত্তা দেবে। ভাল ব্যাগগুলি দীর্ঘস্থায়ী। অনেক ব্যাগই ওয়াটারপ্রুফ। বৃষ্টির ঝাপটা এলেও ভেতরে পানি ঢোকে না। ব্যাগটি কোন ধরনের পদার্থ দিয়ে তৈরী সেটা দেখে নেয়া জরুরী।
যারা প্রকৃতির ছবি উঠান তারা পরিবেশবান্ধব জিনিষপত্র ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। যেমন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক তাদের তৈরী ব্যাগ সম্পর্কে বলে সেগুলি পুরোপুরি পরিবেশবান্ধব। তাতে প্লাষ্টিক জাতিয় কোনকিছু ব্যবহার করা হয় না। ক্যানভাস কাপড় এবং মেটাল ব্যবহার করা হয়।
ব্যাগের দাম
দাম অবশ্যই একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয়। ২ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে কমদামী ব্যাগ পাওয়া যায়, মাঝারী ব্যাগের জন্য ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। কেসের দাম আরো বেশি। কিন্তু আপনি যখন লক্ষ টাকার ক্যামেরা বহন করবেন তখন এখানেই বা খরচ কমাবেন কেন ? আপনার মুল্যবান ক্যামেরা রক্ষার জন্য খরচ কিছুটা বেশি হলেও ভাল ব্যাগ ব্যবহার করুন।
একেবারে কমদামে কিছু ব্যাগ পাওয়া যায় যেগুলি বাইরে থেকে মুল কোম্পানীর ব্যাগের মতই দেখায়। সেগুলি কেনার সময় ক্যামেরা, লেন্স ইত্যাদির জন্য প্যাডের ব্যবস্থা আছে কিনা, ক্যামেরা নড়াচড়া করবে কিনা এই বিষয়গুলি দেখে নিন।
ব্যাগ দেখতে কেমন
আপনি নিশ্চয়ই এমন ব্যাগ চান যা আপনার মনের মত সুন্দর। ব্যাগের ডিজাইন, রং ইত্যাদি ব্যাক্তিগত পছন্দের বিষয়। তারপরও, একজন ফটোগ্রাফার সুন্দর কিছু পছন্দ করবেন এটাই স্বাভাবিক। এদিকটাও গুরুত্ব দিয়ে দেখে নিন।  
ব্যাগ কার তৈরী
যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যাগ কোন কোম্পানী তৈরী করেছে তাতে কিছু যায় আসে না। তাহলেও যারা ব্যাগ তৈরী করে খ্যাতিলাভ করেছে তাদের ওপর নির্ভর করা তুলনামুলক সহজ। কাজেই ব্যাগ কেনার সময় বিশ্বখ্যাত নাম যেমন lowepro, Kata, National Geographic, Think Tank, Domke, Crumpler, Tamrac, M-Rock, Billingham এদের প্রাধান্য দিতে পারেন।



সঠিক রঙের জন্য হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করুন



ছবি উঠানোর সময় এপারচার, সাটার স্পিড, আইএসও ইত্যাদি বিষয় এতটাই গুরুত্বপুর্ন যে হোয়াইট ব্যালান্স বিষয়টি অনেকসময়ই গুরুত্ব পায় না। ফল হিসেবে ছবিতে পাওয়া যায় কখনো নিলচে, লালচে বা সবজেটে ভাব। হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করে এই সমস্যা দুর করা যায় সহজেই।
একচু জেনে নেয়া যাক হোয়াইট ব্যালান্স বিষয়টি কি ?
ছবিতে সবচেয়ে আলোকিত এবং সবচেয়ে অন্ধকার দুটি বিন্দুর কথা চিন্তা করুন। সবচেয়ে আলোকিত অংশের রং হওয়ার কথা একেবারে সাদা, সবচেয়ে অন্ধকার অংশ হওয়ার কথা একেবারে কালো। সাদাকে পুরোপুরি সাদা দেখানোর ব্যবস্থাকে বলে হোয়াইট ব্যালান্স।
এর পেছনে রয়েছে কিছুটা আলো তত্ত্ব। প্রতিটি রঙের রয়েছে সাদার তুলনায় নিজস্ব বৈশিষ্ট। একে পরিমাপ করা হয় কেলভিন তাপমাত্রার স্কেলে এবং নাম কালার টেম্পারেচার। আলট্রাভায়োলেট শর্ট ওয়েব লেন্থের কালার টেম্পারেচার বেশি, যেমন সাদা হচ্ছে ৫৬০০ ডিগ্রী কেরভিন, অন্যদিকে ইনফ্রারেড লং ওয়েভের টেম্পারেচার কম, ২০০০ ডিগ্রী কেলভিন। বেগুলি থেকে লালের দিকে মাঝের রংগুলি ক্রমাম্বয়ে নীল, সবুজ, হলুদ, কমলা ইত্যাদি। বৈজ্ঞানিভাবে কালার টেম্পারেচার হচ্ছে কার্বনকে উত্তপ্ত করলে বিভিন্ন কেলভিন টেম্পারেচারে রঙের যে পরিবর্তন হয় সেটা। যেমন ২০০০ ডিগ্রী তাপমাত্রায় কার্বনের রং লাল। ৫৬০০ ডিগ্রীতে একেবারে সাদা।
সুর্যের উদাহরন বিবেচনায় আনতে পারেন। দুপুরে যখন কালার টেম্পারেচার সবচেয়ে বেশি তখন আমরা সাদা আলো পাই, অন্যদিকে সুর্যোদয় কিংবা সুর্যাস্তের সময় কৌনিক অবস্থানের কারনে কালার টেম্পারেচার কমে যায়, আমরা পাই লালচে এবং হলদেটে সোনালী আলো।
আমরা চোখে দেখার সময় খুব সহজে চোখ তারসাথে মানিয়ে নিতে পারে। কিন্তু ক্যামেরা নিজে থেকে সেটা করে না। ফল হিসেবে সুর্যাস্তের ছবি উঠানোর সময় যদি দুপুরের কালার টেম্পারেচারের হোয়াইট ব্যালান্স সেটিং ব্যবহার করা হয় সেখানে লালচে-হলুদ রং থাকবে না। আপনিও সঠিক রং পাবেন না। হোয়াই ব্যালান্স সেটিং এর দিকে দৃষ্টি দিয়ে আপনি পেতে পারেন নিখুত রঙের ছবি।
অধিকাংশ ক্যামেরায় হোয়াইট ব্যালান্স সেটিং এর জন্য কয়েকটি অপশন থাকে। এদের একটি অবশ্যই অটো যেখানে ক্যামেরা নিজেই আলো বিশ্লেষন করে ঠিক করে নেয় কোন ধরনের হোয়াইট ব্যালান্স ব্যবহার করবে। পেশাদার ফটোগ্রাফাররা এটা ব্যবহার করেন সবচেয়ে কম।
এছাড়া থাকে সরাসরি সুর্যের আলো, মেঘলা দিন, ছায়া, মোমের আলো, ফ্লুরোসেন্ট টিউবের আলো, সাধারন আলো, ফ্লাশ ইত্যাদি নাম। যখন যে আলোয় ছবি উঠাতে চান তখন সেটা সিলেক্ট করে নিতে পারেন।
অভিজ্ঞ ফটোগ্রাফাররা এতে সন্তুষ্ট নন (সেকারনেই তাদের ছবি ভাল হয়)। তাদের জন্য কিছু ক্যামেরায় রয়েছে ডিগ্রী কেলভিন মান দেখে হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করা। এজন্য আপনাকে জানতে হবে কোন আলোর কালার টেম্পারেচার মান কত। কাজটি কঠিন।
অনেক ক্যামেরায় যেখানে ছবি উঠাচ্ছেন সেখানকার কালার টেম্পারেচার যাচাই করার ব্যবস্থা থাকে। একমাত্র এভাবেই একেবারে সঠিক কালার টেম্পারেচার ব্যবহার করা সম্ভব।
যেমন নাইকন ডি৯০ ক্যামেরাকে উদাহরন হিসেবে দেখুন,
.          মেনু থেকে Preset Manual সিলেক্ট করুন
.          যেখানে ছবি উঠাবেন সেই পরিস্থিতিতে একটি সাদা কাগজ (অথবা একেবারে সাদা অন্যকিছু) রাখুন
.          Aparture Priority মোডে যান
.          হোয়াইট ব্যালান্স বাটন চেপে ধরে কমান্ড ডায়াল ঘুরাতে থাকুন যতক্ষন না প্রিসেট দেখা যায়।
.          হোয়াইট ব্যালান্স বাটন ছেড়ে দিন, এরপর আবারও চেয়ে ২ সেকেন্ড ধরে রাখুন। ডিসপ্লেতে প্রিসেট আইকণ ব্লিংক করতে থাকবে।
.          পুরো স্ক্রিনে সাদা কাগজটি ফোকাস করুন।
.          সাটার রিলিজ বাটন চাপ দিন।

কোন ছবি উঠবে না কিন্তু ক্যামেরা সেই পরিস্থিতির  হোয়াইট ব্যালান্স এর জন্য মান রেকর্ড করবে। সঠিক মান রেকর্ড হলে ডিসপ্লেতে Good লেখা পাবেন।
পরিবেশ কিংবা আলোর পরিবর্তনের সাথেসাথে এই মানও পরিবর্তিত হতে পারে। কাজেই যায়গা বা সময় পরিবর্তনের পর আপনাকে পুনরায় এই সেটিং ঠিক করে নিতে হতে পারে। বড়জোর কয়েক সেকেন্ড সময় লাগবে এটা করতে। আপনার ক্যামেরায় যদি এই ব্যবস্থা থাকে তাহলে সেটা ব্যবহার করুন।

*** অন্য ক্যামেরার জন্য পদ্ধতিতে কিছুটা ভিন্নতা থাকতে পারে। সেটা জানার জন্য আপনার ক্যামেরার ম্যানুয়েল দেখুন।

মুভমেন্ট ফটোগ্রাফি



ছবি উঠানোর সময় হাত এবং ক্যামেরা স্থির রাখবেন, সম্ভব হলে ট্রাইপড ব্যবহার করবেন অথবা কোথাও ঠেস দিয়ে দাড়াবেন, বেশি সাটার স্পিড ব্যবহার করবেন, ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করবেন এসব কথা শুনেই আপনি অভ্যস্থ। এর বিপরীত দিক কি কখনো ভেবে দেখেছেন। ছবি উঠানোর সময় ইচ্ছে করে ক্যামেরা নাড়ানো। ফটোগ্রাফিতে এর নাম মুভমেন্ট ফটোগ্রাফি।
মুল বিষয় হচ্ছে সাটার স্পিড কম ব্যবহার করবেন যেন বেশি সময় ধরে এক্সপোজার পাওয়া যায়। যতক্ষন সাটার খোলা থাকবে সেই সময়ে ক্যামেরা নাড়াবেন। আলোর যায়গাগুলি একধরনের গতিশীল আলোকপথ তৈরী করবে।
একেবারে অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাজটি না করে একেই নিজের পছন্দমত কাজে ব্যবহার করতে পারেন। যেমন জুম ইফেক্ট।
Aperture Priority  মোড সিলেক্ট করুন। এপারচার ২২ সেট করুন। যে বিষয়ের ছবি উঠাবেন সেখানে ফোকাস করুন। সাটার রিলিজ চেপে ছবি উঠানোর সময় দ্রুত জুম কম বা বেশি করুন। আলোকরশ্মির ইফেক্ট পাবেন এরফলে।
অথবা ব্যবহার করতে পারেন রোটেশন ইফেক্ট। ছবি উঠানোর সময় ক্যামেরা বৃত্তকারে ঘুরান, অথবা আপনি নিজেই ক্যামেরা সহ ঘুরুন। হয়ত স্পষ্ট বিষয় পাবেন না কিংন্তু রঙের বৈচিত্র থাকলে মজাদার কিছু পাবেন। উদাহরনের ছবিটি মাথার ওপর বড়বড় গাছের।

অথবা বাগানে ফুলের ছবি উঠানোর সময় সাটার স্পিড একেবারে কমিয়ে ইচ্ছেমত ক্যামেরা ঘুরান। একেবারে ভিন্ন ধরনের ছবি পাবেন। ক্যামেরা ওপরে নিচে করে আরেকধরনের ইফেক্ট পেতে পারেন।
জুম ইফেক্ট এর জন্য এসএলআর অথবা জুম-রিং ব্যবহার করা যায় এমন ক্যামেরা প্রয়োজন হবে। অন্য ইফেক্টগুলি ব্যবহার করা যাবে যে কোন ক্যামেরায়।




দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন


যারা ছবি উঠান তাদের স্বাভাবিক একটি প্রশ্ন, কিসের ছবি উঠাব? অনেকেই ছবি উঠানোর জন্য বনে-পাহাড়ে যান একথা ঠিক। সেখানে তারা যে দৃশ্য উঠানোর সুযোগ পান তা অন্যভাবে পাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু আপনার চারিদিকে যাকিছু রয়েছে সেখান থেকেই পেতে পারেন দৃষ্টিনন্দন ছবি।
উদাহরনের এই ছবিটি দেখুন। দুটি পাতার ছবি উঠানোর জন্য নিশ্চয়ই আপনার বনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ছবিটি ঢাকা শহরে উঠানো।
কিংবা এই কৃষ্ণচুড়ার ডালটি। যে কোন ফুলগাছেই আপনি পেতে পারেন এমন একটি অংশ।

কিংবা কাছ থেকে ওঠানো এই মাকড়সার দল।
কিংবা ঘরের দেয়ালে সাধারন টিকটিকি।
ভাল ছবির জন্য আপনার দৃষ্টিভঙ্গিই যথেষ্ঠ। ক্যামেরার দৃষ্টিতে দেখা অভ্যেস করুন, সাধারন বিষয়কেও অসাধারনভাবে ছবিতে ধরে রাখা সম্ভব হবে।


ফটোগ্রাফির জন্য এডবি লাইটরুম


ফটোগ্রাফারদের কাছে এডবি লাইটরুম অত্যন্ত জনপ্রিয়। সাম্প্রতিক তথ্য থেকে জানা যায় আগে ফটোশপ ব্যবহার করতেন এমন অনেকে লাইটরুমের দিকে যাচ্ছেন। এথেকে এটুকু ধারনা করা যায় এতে নিশ্চয়ই এমন কিছু সুবিধে রয়েছে যা ফটোশপ থেকেও বেশি সুবিধে দেয়।
সরলভাবে বিষয়টা দেখা যাক। ফটোগ্রাফাররা প্রচুর ছবি উঠান। কাজেই তাদের কাজ করতে হয় শতশত ছবি নিয়ে। ফটোশপ বেশি ছবি ব্যবহারের সুযোগ দেয় না। একটি একটি করে ছবি নিয়ে কাজ করতে হয়। এই সুবিধে পাওয়া যায় লাইটরুমে।
ফটোগ্রাফারদের প্রয়োজন মুলত ছবির আলো ঠিক করা। কোথাও কমানো, কোথাও বাড়ানো। তাদের নিশ্চয়ই অনেকগুলি লেয়ার নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন নেই, কিংবা প্রয়োজন নেই পেইন্ট করা। কাজেই সেদিক থেকে লাইটরুম ফটোশপের তুলনায় সরল সফটঅয়্যার।
ফটোশপ নিজেই অত্যন্ত শক্তিশালী সফটঅয়্যার। তারওপর রয়েছে অসংখ্যা প্লাগইন। ছবির নয়েজ দুর করা থেকে শুরু করে স্পেশাল ইফেক্ট পর্যন্ত সব ধরনের কাজের জন্য প্লাগইন রয়েছে। এই প্লাগইনগুলির অধিকাংশই ব্যবহার করা যায় লাইটরুমেও। তাহলে আর ফটোশপ প্রয়োজন কি।
আর সবকথার বড় কথা, ফটোশপের দাম লাইটরুম থেকে অনেক বেশি। কাজেই ফটোগ্রাফরদের পছন্দ লাইটরুম।
লাইটরুম সফটঅয়্যারটি প্রচলিত সফটঅয়্যারগুলি থেকে একটু পৃথক। ফটোশপে আপনি একটি ছবি ওপেন করবেন, তাকে পরিবর্তণ করবেন, তারপর সেভ করবেন। প্রয়োজনে আগেরটি ঠিক রেখে ভিন্ননামে সেভ করবেন। লাইটরুম তৈরী করা হয়েছে বহুসংখ্যক ছবি নিয়ে কাজ করার জন্য, এবং ধরেই নেয়া হয়েছে আপনি মুল ছবিগুলিকে অক্ষত রেখে কাজ করবেন। কাজেই কোন ইমেজ ওপেন করার আগেই আপনি কিছু বিষয় ঠিক করে নেবেন। যেমন আপনার মুল ইমেজগুলি কোথায় থাকবে, পরিবর্তন করা ইমেজগুলি কোথায় থাকবে। কখনোই আপনার মুল ইমেজের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না। আপনি ইমেজ ওপেন করতে পারেন ক্যামেরার মেমোরী কার্ড থেকে অথবা হার্ডডিস্কে কপি করার পর। কিংবা ওপেন করার সময়ই আপনি সেখানে মেটাডাটা যোগ করতে পারেন।

লাইটরুম ইন্টারফেস
লাইটরুম ওপেন করলে আপনি এধরনের একটি ইন্টারফেস দেখবেন। ইন্টারফেসটি তুলনামুলক সরল, তারপরও এখানে লক্ষ্য করার মত বেশকিছু গুরুত্বপুর্ন অংশ রয়েছে।
বামদিকে অবশ্যই সফটঅয়্যারের নাম লেখা। এর ডানদিকে Library, Develop, Slideshow, Print, web লেখা মডিউল পিকার। নাম থেকেই ধারনা করা যায় এগুলির কাজ যথাক্রমে ফাইল ম্যানেজমেন্ট, ছবির পরিবর্তন, ছবিগুলির স্লাইডশো দেখা, প্রিন্ট করা এবং ইন্টারনেটে ব্যবহার করা।
আপনি যে ছবি নিয়ে কাজ করবেন সেটি দেখা যাবে মাঝখানে। একটি ছবিকে বড় করে দেখা যেতে পারে, অথবা অনেকগুলি ছবির প্রিভিউ দেখা যেতে পারে। কিভাবে দেখবেন সিলেক্ট করা যাবে ছবির নিচের অংশ থেকে। এর ডানপাশের স্লাইডার ব্যবহার করে ছবির জুম নিয়ন্ত্রন করা যাবে।
মুল স্ক্রিনের দুপাশে রয়েছে দুটি প্যানেল। সিলেক্ট করা মডিউলের ওপর নির্ভর করে এগুলি পরিবর্তিত হয়। যেমন Library সিলেক্ট করলে বামদিকে ফোল্ডার, ক্যাটালগ ইত্যাদি অপশন এবং ডানদিকে হিষ্টোগ্রাম, কুইক ডেভেলপ, মেটাডাটা ইত্যাদি অপশন পাওয়া যাবে। আর Develop সিলেক্ট করলে বামদিকে প্রিসেট, স্নাপশট ইত্যাদি অপশন, ডানদিকে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের অপশন পাওয়া যাবে। যে কোন অপশনের নামের ওপর অথবা পাশের ত্রিকোনাকার চিহ্নে ক্লিক করে সেটা ওপেন করা যাবে।
একেবারে নিচের দিকে রয়েছে ফিল্মষ্ট্রিপ। ইমপোর্ট করা ইমেজগুলির প্রিভিউ দেখা যাবে এখানে। যে কোনটিতে ক্লিক করলে তাকে একটিভ ইমেজ হিসেবে মাঝের উইন্ডোতে পাওয়া যাবে। ফিল্মষ্ট্রিপের উইন্ডোর ডিভাইডার ব্যবহার করে বড়ছোট করে থাম্বনেইলের আকার বড়-ছোট করা যাবে।

ইমপোর্ট করা
প্রথমবার লাইটরুম চালু করলে আপনি কোন ইমেজ পাবেন না। ইমেজ ব্যবহারের জন্য আপনাকে সেগুলি ইমপোর্ট করতে হবে। এখানে কিছু বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।
লাইটরুমে প্রায় সবধরনের বিটম্যাপ ইমেজ, সব ধরনের র, সিএমওয়াইকে এবং নতুন ভার্শনে (৩.০) তে ভিডিও ফরম্যাট ইমপোর্ট করা যাবে।
·        ইমপোর্ট করার জন্য মডিউল সিলেক্ট করুন। এরপর বামদিকের প্যানেলের নিচের দিকে Import বাটনে ক্লিক করুন (অথবা মেনু থেকে কমান্ড দিন)। বামদিকের প্যানেলে সোর্স হিসেবে ড্রাইভ/সংযুক্ত মেমোরীকার্ড ইত্যাদি দেখা যাবে।
·        ড্রাইভ সিলেক্ট করুন। যে ফোল্ডারে ছবিগুলি রয়েছে সেটি সিলেক্ট করুন। ভেতরের ইমেজগুলির প্রিভিউ দেখা যাবে। অপশন ক্লিক করে সাবফোল্ডারের ইমেজগুলি ব্যবহার করতে পারেন অথবা এটি অফ করে নির্দিষ্ট একটি ফোল্ডার ব্যবহার করতে পারেন।
·        প্রিভিউ উইন্ডোতে লক্ষ করলে প্রতিটি ইমেজের ওপরে একটি টিক চিহ্ন দেখা যাবে। কোন ছবিকে ইমপোর্ট কাজ থেকে বাদ দেয়ার জন্য সেই ছবির টিক চিহ্ন উঠিয়ে দিন। প্রয়োজনে গ্রিড ভিউ এর বদলে লুপ ভিউ ব্যবহার করে ইমেজকে বড় করে দেখে নিতে পারেন।
·        ইমপোর্ট কিভাবে করা হবে সেজন্য জন্য ৪টি অপশন রয়েছে প্রিভিউ উইন্ডোর ওপরে। Copy to DNG অপশন প্রতিটি ফাইলকে প্রথমে অন্য ফোল্ডারে কপি করবে এবং তাদেরকে DNG তে কনভার্ট করবে। Copy সিলেক্ট করলে সবগুলিকে নতুন ফোল্ডারে কপি করবে, Moveসিলেক্ট করলে সবগুলি ইমেজকে অন্য যায়গায় সরিয়ে নেবে (যেমন মেমোরীকার্ড থেকে হার্ডডিস্কে) এবং Add সিলেক্ট করলে ফোল্ডারের কোন পরিবর্তন না করে সরাসরি ইমপোর্ট করবে।
·        ডানদিকের প্যানেলটি একবার যাচাই করে নিন। Render Previewঅংশে ৪টি অপশন রয়েছে। মুলত প্রিভিউ এর মান ঠিক করার জন্য এই অপশনে পরিবর্তন করবেন। ভাল মান ব্যবহার করলে বেশি সময় প্রয়োজন হবে।
·        Don’t Import Suspected Duplicates সিলেক্ট করা থাকলে একই ইমেজ দুবার ইমপোর্ট হওয়ার সম্ভাবনা বাতিল করবে।
·        সবকিছু ঠিক করা হলে নিচে ডানদিকে ইমপোর্ট বাটনে ক্লিক করুন। সিলেক্ট করা ইমেজগুলি ইমপোর্ট হবে।

বেসিক এডিটিং
·        ইমপোর্ট করার পর কোন ছবি এডিট করার জন্য মডিউলে যান।
·        নিচের ফিল্মষ্ট্রিপ থেকে সেটি সিলেক্ট করুন।
·        ডানদিকে প্যানেল থেকে Basic ট্যাব ওপেন করুন। এখানেTemperature, Color, Exposure, Recovery, Fill light, Blacks, Brightness, Contrast, Clarity ইত্যাদি সবকিছু পরিবর্তন করার জন্য স্লাইডার পাওয়া যাবে। যে কোনকিছু পরিবর্তনের সাথেসাথে তার প্রিভিউ দেখা যাবে।
·        Tone Curve, HSL, Effect ইত্যাদি ট্যাব ওপেন করে সেখানে পরিবর্তন করতে পারেন। আপনি নিশ্চয়ই জানেন এখানে কি করতে হয়।


এক্সপোর্ট করা
ছবির প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করার পর চুড়ান্ত ছবি পাওয়ার জন্য মেনু থেকে File - Export কমান্ড ব্যবহার করুন। এক্সপোর্ট মেনুতে ফোল্ডারের নাম বলে দেয়াসহ আউটপুট ইমেজের ফরম্যাট, সাইজ ইত্যাদি বলে দেয়া যাবে।


ফটোগ্রাফি থেকে আয় করুন


ছবি উঠানো আপনার শখ। আপনি মনে করেন আপনি ভাল ছবি উঠাতে পারেন। অনেক উঠিয়েছেন। এখন সেগুলি থেকে অর্থ উপার্জন করতে চান।
সম্ভব। আপনার ছবি যাদের পছন্দ তারা অর্থ ব্যয়ে কিনে নিতে পারে। নির্দিষ্ট কোন কাজে তারা সেটা ব্যবহার করবে, তারপরও আপনার ছবি আপনারই থেকে যাবে। বিক্রি করতে পারেন আরেকজনের কাছে।
ছবি বিক্রির জন্য ক্রেতাকে ছবি দেখানো প্রয়োজন। আর একাজের জন্য সবচেয়ে উপযোগি ব্যবস্থা হচ্ছে ইন্টারনেট। অনলাইনে আপনার ছবির একটি গ্যালারী তৈরী করুন, সেখানে ছবিগুলি রাখুন, কোনটির দাম কত লিখে রাখুন। অনলাইনে ক্লিক করে কেনার ব্যবস্থা রাখুন। যার পছন্দ হবে তিনি ক্লিক করবেন, টাকা দেবেন এবং ছবিটি ডাউনলোড করে নেবেন।
বুঝতেই পারছেন, যদি নিজেই নিজের গ্যালারী পরিচালনা করতে চান তাহলে আপনাকে বেশকিছু কাজ করতে হবে। একটি ওয়েবসাইট তৈরী করতে হবে, সেটা আকর্ষনীয় করতে হবে, সেখানে ভিজিটর আসার ব্যবস্থা করতে হবে, কেউ কিনলে সেই অর্থ গ্রহনের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা রাখতে হবে ওয়েবসাইটেই। এই ব্যবস্থায় নিজে বিক্রি করলে লাভ সবচেয়ে বেশি, তারপরও পুরো কাজটি বেশ জটিল।
এজন্য যারা আগে থেকে কাজ করছেন তাদের সাহায্য নিতে পারেন। বহু অনলাইন গ্যালারী রয়েছে যারা এধরনের সার্ভিস দিয়ে থাকে। তাদের সহযোগিতা পাবার জন্য যা করতে হয় তা হচ্ছে, ফি দিয়ে সদস্য হওয়া। কেউ কেউ প্রাথমিকভাবে বিনামুল্যে কিছুদিন ব্যবহারের সুযোগ দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আপনাকে অর্থব্যয় করতেই হবে। এটাই তাদের ব্যবসা।
বিনিময়ে আপনি যা পাবেন তা হচ্ছে,
১. সহজে আপনার প্রোফাইল তৈরীর সুযোগ। শুধুমাত্র ক্লিক করেই আপনার প্রোফাইল মনের মত সাজিয়ে নেয়ার সুযোগ পাবেন। সেখানে যথেষ্ট পরিমান নিরাপদ যায়গা।
২. ভিজিটর নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। তারা বিভিন্ন পদ্ধতিতে সাইটে ভিজিটর আনার ব্যবস্থা করেন।
৩. অটোমেটেড বিক্রির পদ্ধতি। অর্থ লেনদেনের পদ্ধতি নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। কেউ কিনলে সাথেসাথে আপনার একাউন্টে টাকা জমা হবে।
৪. তাদের কাছে সবসময়ই নানাধরনের পরামর্শ পাওয়ার সুযোগ।
৫. অন্য ফটোগ্রাফারদের সাথে যোগাযোগের সুযোগ। বিশ্বের সেরা ফটোগ্রাফাররা এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন, তাদের সাথে একই পরিবারের সদস্য হওয়ায় মত আদান-প্রদান করে ফটোগ্রাফিতে আরো উন্নতি করার সুযোগ পাবেন।
একাজের জন্য আপনার যা প্রয়োজন তা হচ্ছে একটি ভাল ক্যামেরা এবং ভাল ফটোগ্রাফার হওয়া। ক্যামেরা যত ভাল ছবির মান তত ভাল হওয়ার সম্ভাবনা। বিক্রির জন্য ছবি উঠাতে হলে এসএলআর এর নিচে ভাববেন না। নিশ্চয়ই ভুলে যাননি, ইন্টারনেটে কোটি কোটি ছবি পাওয়া যায় বিনামুল্যে। অর্থের বিনিময়ে ছবি বিক্রির জন্য অবশ্যই সেই ছবিকে তাদের থেকে ভাল হতে হবে।
আর ভাল ছবি উঠানোর বিষয়টি ব্যক্তিগত আগ্রহের বিষয়। বিশ্বে বহু ফটোগ্রাফার ছবি উঠানোর জন্য মরুভুমি-বরফ-সমুদ্র-জঙ্গল সব যায়গায় ঘুরে বেড়ান।

ইন্টারনেটে সার্চ করলে বহু সাইট পাবেন যেখানে ছবি রেখে শেয়ার করা যায়, বিক্রি করা যায়। এখানে উদাহরন হিসেবে ছবি শেয়ার এবং বিক্রির কয়েকটি সাইটের ঠিকানা এবং পরিচিতি দেয়া হচ্ছে;

সবচেয়ে জনপ্রিয় সোস্যাল নেটওয়ার্ক সাইট। অন্যদের সাথে ছবি শেয়ার করার জন্য এটা ব্যবহার করতে পারেন।

বলা হয় এখানে যত পরিমান ছবি রয়েছে তা বিশ্বের অন্য কোথাও নেই। বিনামুল্যে সদস্য হয়ে আপনার ছবি অন্যদের দেখাতে পারেন। অন্যদের ছবি দেখে শিখতে পারেন।

গুগলের বিনামুল্যের ছবি শেয়ারিং সাইট।

এখানে বিনামুল্যে ছবি এবং ভিডিও রাখা যায় অন্যদের সাথে শেয়ার করার জন্য। সবসময়ই ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে অংশ নিয়ে পুরস্কার পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

প্রফেশনালদের জন্য সাইট। ওপরে যাকিছু সুবিধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার সবই রয়েছে এদের।

ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার


যারা পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা ব্যবহারে অভ্যস্থ তারা সাধারনত এসএলআর ক্যামেরাকে কিছুটা ভীতির চোখে দেখেন। ভাবেন সেটার ব্যবহার হয়ত জটিল। বাস্তবে এসএলআর ক্যামেরাকে আপনি ব্যবহার করতে পারেন পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরার মতই। উন্নত ক্যামেরার কারনে পাবেন ভাল মানের ছবি। সেইসাথে সামান্য কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখলে দক্ষতার সাথে ব্যবহার করে উচুমানের ছবি পাবেন।
ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহারের সাধারন নিয়মগুলি এখানে শেখানো হচ্ছে। উদাহরন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে নাইকন ডি-৯০, তবে যে কোন এসএলআর ক্যামেরার ক্ষেত্রে এই একই নিয়ম প্রযোজ্য।
প্রথমে ক্যামেরার অংশগুলি একবার দেখে নেয়া যাক।
ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরার প্রধান বৈশিষ্ট এতে এলসিডি ডিসপ্লে ছাড়াও রয়েছে অপটিকাল ভিউফাইন্ডার। এর মাধ্যমে আপনি যা দেখতে পান সেটা দেখা যায় লেন্সের ভেতর দিয়ে। একটি আয়নার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়ে ভিউফাইন্ডারের মাধ্যমে দেখা যায়। সেকারনেই নাম এসএলআর (সিংগেল লেন্স রিফ্লেক্ট)। অন্যদিকে পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরায় যে ইলেকট্রনিক ভিউফাইন্ডার থাকে সেটা লেন্সের ভেতর দিয়ে আসে না, সেটা পৃথকভাবে দেখার ব্যবস্থা। দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য থাকার সম্ভাবনা থেকে যায়।
লেন্সের ভেতর দিয়ে দেখার সুবিধে হচ্ছে একেবারে নিখুত দৃশ্য দেখার সুযোগ। ক্যামেরার নির্মাতা বলেন এলসিডি ডিসপ্লে ব্যবহার যদিও কখনো কখনো সুবিধেজনক (বিশেষ করে ভিডিও করার সময়) তাহলেও সেটা শতভাগ নিখুত না, ভিউফাইন্ডার নিখুত। কাজেই এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহারের সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনি ভিউফাইন্ডার ব্যবহার করবেন এটাই স্বাভাবিক।
দ্বিতীয় পার্থক্য হচ্ছে মেইন কন্ট্রোল ডায়াল এবং কন্ট্রোল সাব-ডায়াল। সাটার রিলিজ বাটনের সামনে এবং ক্যামেরার পেছনে যে দুটি হুইল রয়েছে এই দুটি। এপারচার, সাটারস্পিড সহ যে কোন পরিবর্তনের জন্য এদুটি ঘুরাতে হয়। এদের অবস্থান এমনই যে সাটার রিলিজ বাটনের ওপর একটি আঙুল রেখে সহজে ঘুরানো যায়।
তৃতীয় বড় পার্থক্য হচ্ছে জুম রিং। লেন্সের বিশেষ অংশ ঘুরালে জুম কমবেশি হয়। ফলে খুব দ্রুত জুম পরিবর্তন করা যায়। এছাড়া একই পদ্ধতিতে ঘুরিয়ে ফোকাস করার জন্য রয়েছে ফোকাস রিং। ম্যানুয়েল ফোকাস করার সময় এটা ব্যবহার করা হয়।
ব্যবহার পদ্ধতি
আপনি ক্যামেরাকে একেবারে পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরার মত ব্যবহার করতে চান। এজন্য রয়েছে অটোমোড। মোড ডায়ালে সবুজ রঙের চিহ্নকে ঘুরিয়ে পয়েন্টারের কাছে আনুন। এখন যার ছবি উঠাতে চান সেদিকে ক্যামেরা তাক করুন। সাটার রিলিজ বাটন অর্ধেক নামিয়ে আনুন, ফোকাস হবে। পুরো চাপ দিন ছবি উঠবে। যদি আলো কম থাকে ফ্লাশ নিজে থেকেই খুলে যাবে এবং জ্বলবে।
মুহুর্তেই আপনি বুঝে যাবে সাধারন ক্যামেরা থেকে এসএলআর এর পার্থক্য কোথায়। এতে ফোকাস হবে খুব দ্রুত, উড়ে যাওয়া পাখিকেও ফোকাস করে ছবি উঠানো সম্ভব।

বিভিন্ন মোড ব্যবহার
আপনি কখনো সামনে দাড়ানো মানুষের ছবি উঠাবেন (পোর্ট্রেট) কখনো খোলা মাঠ-আকাশের ছবি উঠাবেন (ল্যান্ডস্কেপ) কখনো কাছ থেকে ফুলের ছবি উঠাবেন (ক্লেজআপ)।
ছবি উঠানোর আগে মোড ডায়াল ঘুরিয়ে কখনো মুখের ছবি, কখনো পাহাড়ের ছবি, কখনো ফুলের ছবি দেখে নির্দিস্ট মোড ব্যবহার করুন। ক্যামেরা নিজেই সঠিক এপারচার, সাটারস্পিড ইত্যাদি ঠিক করে নেবে।
কাজেই ব্যবহারের দিক থেকে এপর্যন্ত কম্প্যাক্ট ক্যামেরা থেকে এসএলআর ক্যামেরার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

এপারচার এবং সাটারস্পিড মোড
দক্ষ ফটোগ্রাফাররা এই দুটি মোড ব্যবহার করেন সবচেয়ে বেশি। এপারচার প্রায়োরিটি মোডে তিনি এপারচার কত হবে ঠিক করে দেন (এপারচার পরিবর্তন করলে কিকি পরিবর্তন হয় সেকথা জানানো হয়েছে অন্য টিউটোরিয়ালে)। তারসাথে মিল রেখে সঠিক সাটারস্পিড ঠিক করে নেয় ক্যামেরা।
বিপরীতভাবে সাটার স্পিড মোডে আপনি সাটার স্পিড ঠিক করে দেবেন, ক্যামেরা নিজেই তারসাথে মানানসই এপারচার ঠিক করে নেবে।
আপনার দায়িত্ব আপনি কোন মোড ব্যবহার করবেন সেটা ঠিক করা। আকাশে উড়তে থাকা পাখির স্পষ্ট ছবি কিংবা দ্রুত গতিশীল কিছুকে স্থির দেখানোর জন্য আপনার বেশি সাটার স্পিড প্রয়োজন, কাজেই আপনি সাটারস্পিড নিজে ঠিক করে দেবেন।
আবারও, কখন কোন মোডে ছবি উঠাবেন সে সম্পর্কে অন্য টিউটোরিয়ালে লেখা হয়েছে।
এপারচার প্রায়োরিটি মোডে ছবি উঠানোর জন্য মোড ডায়াল ঘুরিয়ে এপারচার মোড (A) সিলেক্ট করুন। ফোকাস করুন। ভিউফাইন্ডার (অথবা ডিসপ্লে) বর্তমানের এপারচার সেটিং দেখাবে। সেটা পরিবর্তনের জন্য সামনের দিকের কমান্ড ডায়াল ঘুরান। একদিকে ঘুরালে এপারচার বাড়বে, বিপরীত দিকে ঘুরালে এপারচার কমবে। পছন্দমত এপারচার সেট করার পর ছবি উঠান।
সাটারস্পিড মোডে ছবি উঠানোর জন্য সাটার স্পিড মোড (S) সিলেক্ট করুন, ফোকাস করুন, পেছনের দিকের কমান্ড ডায়াল ঘুরিয়ে সাটার স্পিড পরিবর্তন করুন এবং ছবি উঠান।

ম্যানুয়েল মোড
ম্যানুয়েল মোড হচ্ছে যেখানে আপনি এপারচার এবং সাটার স্পিড দুটিই নিজে ঠিক করে দেবেন। অর্থাত আপনি জানেন এপারচার এবং সাটারস্পিড কত রাখলে ভাল ছবি পাওয়া যাবে।
ম্যানুয়েল মোড (M) সিলেক্ট করুন, আগের পদ্ধতিতে সামনের এবং পেছনের ডায়াল ব্যবহার করে এপারচার এবং সাটার স্পিড পরিবর্তন করুন। ছবি উঠান।
এটুকু জেনে আপনি দক্ষতার সাথে এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ক্যামেরা মডেলের সাথে এই ক্যামেরার (নাইকন ডি-৯০) পার্থক্য থাকলে ক্যামেরার ম্যানুয়েল থেকে পার্থক্য সম্পর্কে জেনে নিন।


এসএলআর ক্যামেরা আরো কিছু সেটিং খুব সহজে ব্যবহার করা যায়। মুলত পয়েন্ট এন্ড শ্যুট ক্যামেরা থেকে এসএলআর পৃথক একারনেই।
ছবি উঠানোর জন্য অন্য সাধারন সেটিংগুলি পরিবর্তনের পদ্ধতি জেনে নিন। এখানে নিকন ডি-৯০ ব্যবহার করা হচ্ছে। অন্য ক্যামেরায় কিছুটা পার্থক্য থাকতে পারে। মুল নিয়ম একই।
ক্যামেরার পেছনের বাটনগুলির কাজ এবং ব্যবহার পদ্ধতি
.          লাইভ ভিউ
Lv লেখা একটি বাটন রয়েছে ক্যামেরার পেছনে। আপনি ছবি উঠানোর সময় ভিউ ফাইন্ডার ব্যবহার করবেন নাকি এলসিডি ডিসপ্লে ব্যবহার করবেন সেটা ঠিক করার জন্য এই বাটন ব্যবহার করা হয়। একবার চাপ দিলে এলসিডি চালু হবে আরেকবার চাপ দিলে অফ হলে ভিউ ফাইন্ডার চালু হবে।
ভিডিও রেকর্ড করার জন্যও এই বাটন ব্যবহার করা হয়। লাইভ ভিউ চালু করুন। এরপর OK বাটন চাপ দিন। ভিডিও রেকর্ড শুরু হবে। আরেকবার OK চাপ দিলে ভিডিও রেকর্ড বন্ধ হবে।
.          প্লে বাটন
ছবি বা ভিডিও দেখার জন্য প্লে বাটন ব্যবহার করবেন। প্লে বাটনে একবার চাপ দিলে সবশেষ উঠানো ছবি দেখা যাবে। OK বাটনের বামদিকের এরো কি চাপলে আগের চবি, ডানদিকের এরা কি চাপলে পরের ছবি দেখা যাবে।
ওপর এবং নিচের এরা কি ব্যবহার করে হয় প্রিভিউতে কি দেখতে চান সেটা ঠিক করার জন্য। শুধুমাত্র ছবি (বা ভিডিও) দেখতে পারেন অথবা ছবি উঠানোর সময় ক্যামেরা সেটিং এবং হিসটোগ্রাম দেখতে পারেন। সেটিং পরিবর্তন করে আরেকটি মোড ব্যবহার করা যায় যেখানে আলোর সমস্যা দেখা যায়। এবিষয়ে সেটিং অংশে উল্লেখ করা হবে।
প্রিভিউ দেখার সময় + বাটনে (QUAL) চাপ দিলে ছবি বড় করে দেখা যাবে। (-) বাটনে চাপ দিলে ছোট করে দেখা যাবে। ছোট করার সময় একসাথে ৪টি, ৯টি এভাবে বেশি সংখ্যক ছবি একবারে দেখা যাবে।
.          ডিলিট বাটন
ভিউফাইন্ডারের ঠিক বামে ডিলিট বাটন। প্লে মোডে থাকার সময় একবার চাপ দিলে ফাইলটি মুছে দেবেন কিনা জিজ্ঞেস করবে। আরেকবার চাপ দিলে মুছে যাবে। একবার চাপ দেয়ার পর মুছে না দেয়ার জন্য OK বাটন চাপ দিন।
.          ছবি লক করা
চাবি চিহ্নিত বাটনে (WB) ক্লিক করে কোন ছবি বা ভিডিওকে ভুলক্রমে মুছে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারেন। এটা ক্লিক করলে প্রিভিউতে থাকা ছবির ওপর একটি চাবির ছবি পাওয়া যাবে যার অর্থ এই ছবি ডিলিট বাটন চাপলেও মুছবে না। অবশ্য কার্ড ফরম্যাট করলে মুছে যাবে।
.          ইনফো বাটন
ডানদিকে নিচের অংশে ইনফো বাটন। ডি-৯০ মডেলে ক্যামেরা সব ধরনের সেটিং দেখার জন্য একটি ছোট ডিসপ্লে রয়েছে ওপরে। যদি এলসিডি-তে এসব তথ্য দেখতে চান তাহলে ইনফো বাটনে ক্লিক করুন।
.          হোয়াইট ব্যালেন্স পরিবর্তন
ছবি উঠানোর সময় হোয়াইট ব্যালেন্স পরিবর্তন করার জন্য হোয়াইট ব্যালেন্স বাটন চেপে ধরুন এবং মেইন কমান্ড ডায়াল ঘুরান। ওপরের ডিসপ্লে (অথবা এলসিডিতে ইনফো অন থাকলে সেখানে) পরিবর্তিত হোয়াইট ব্যালেন্স দেখা যাবে।
.          আইএসও পরিবর্তন
দ্রুত আইএসও পরিবর্তনের জন্য ISO বাটন চেপে ধরুন এবং কমান্ড ডায়াল ঘুরান।
.          কোয়ালিটি
ডি-৯০ মডেলে র মোড, র এর সাথে জেপেগ, শুধুমাত্র জেপেগ ফুল রেজুলুশন, শুধুমাত্র জেপেগ কম রেজুলুশন ইত্যাদি মোডে ছবি উঠানো যায়। ছবির মান পরিবর্তনের জন্য QUAL বাটনে চেপে ধরুন এবং কমান্ড ডায়াল ঘুরান।
.          অটো ফোকাস মোড
অটোফোকাসের সময় আপনি ৩ ধরনের মোড ব্যবহার করতে পারেন। ডিফল্ট হচ্ছে AF, এতে স্থির ছবি উঠানোর সময় সিংগেল সারভো অটোফোকাস এবং গতিশীল কিছুর ছবি উঠানোর সময় কন্টিনিউয়াস-সারভো অটোফোকাস কাজ করে। এছাড়া আপনি ইচ্ছে এদের যে কোনএকটিকে ব্যবহার করতে পারেন।
পরিবর্তনের জন্য AF বাটন (ক্যামেরার ওপরের দিকে) চেপে ধরে কমান্ড ডায়াল ঘুরান।
.          রিলিজ মোড
আপনি একবার ক্লিক করে একটি ছবি উঠাতে পারেন, একবার ক্লিক করে পরপর কয়েকটি ছবি উঠাতে পারেন (কন্টিনিউয়াস শ্যুটিং মোড) অথবা একবার ক্লিক করার কয়েক সেকেন্ড পর ছবি উঠাতে পারেন (সেল্ফ টাইমার)।
সেটিং এর জন্য রিলিজ মোড বাটন (ক্যামেরার ওপরের অংশে) চেপে ধরুন এবং কমান্ড ডায়াল ঘুরিয়ে পরিবর্তন করুন।
.          ফ্লাশ এক্সপোজার পরিবর্তন
ফ্লাশ ব্যবহারের সময় কাছের জন্য কম এবং দুরের জন্য বেশি আলো প্রয়োজন হতে পারে। ক্যামেরার বিল্টইন ফ্লাশ কি পরিমান আলো ছড়াবে সেটা পরিবর্তন করতে পারেন ফ্লাশ এক্সপোজার সেটিং পরিবর্তন করে। এছাড়া ফ্লাশ কোন মোডে কাজ করবে (Red eye reduction, Auto, Slow, Rear) সেটাও ঠিক করে নিতে পারেন।
ফ্লাশ ওপেন করুন। ফ্লাশ বাটন চেপে ধরুন এবং কমান্ড ডায়াল ঘুরান। মেইন কমান্ড ডায়াল (পেছনের ডায়াল) ঘুরালে ফ্লাশ মোড এবং সাবকমান্ড ডায়াল (সামনের ডায়াল) ঘুরালে ফ্লাশের এক্সপোজার কমবেশি হবে।

সবশেষে একটি সমস্যা সমাধানের বাটন। ক্যামেরার সেটিং এর যদি বড় ধরনের গড়মিল হয় তাহলে AF এবং exposer বাটনকে (সাটার রিলিজ বাটনের পেছনে) একসাথে চেপে ধরুন ২ সেকেন্ডের জন্য। ওপরের ডিসপ্লে ব্লিংক করবে। এরফলে ক্যামেরার সবকিছু ডিফল্ট সেটিংএ চলে যাবে।


মিটারিং মোড



ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহারের মুল কারন আপনি উচু মানের ছবি চান। ক্যামেরা তাক করবেন আর ক্লিক করে ছবি উঠাবেন এতে সন্তুষ্ট নন। ভাল ছবির জন্য আপনাকে দৃষ্টি রাখতে হয় ছবির জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর দিকেই। ফটোগ্রাফির মুল শব্দ হচ্ছে ফটো বা লাইট। একে একেবারে নিখুতভাবে ব্যবহার করার ওপর নির্ভর করে ছবি ভালমন্দ।
সব ক্যামেরাতেই মিটারিং বলে একটি ব্যবস্থা রয়েছে। সামনে যে আলো আছে তারজন্য কত এপারচার ব্যবহার করবেন, কত সাটার স্পিড ব্যবহার করবেন এটা ক্যামেরা নিজেই হিসেব করে বলে দিতে পারে। আপনি একটিকে নির্দিষ্ট করে দিলে তারসাথে মানানসই আরেকটি কত হবে সেটা নিয়েও ভাবতে হয় না।  এর বাইরেও আরো নিখুতভাবে আলো ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে এসএলআর ক্যামেরায়।
এখানে নাইকন ডি-৯০ ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে উদাহরন হিসেবে। নাইকনের অন্যান্য এসএলআর ক্যামেরা সরাসরি একইভাবে ব্যবহার করা যাবে, এছাড়া অন্য ব্রান্ডের ক্যামেরায় বাটন-পদ্ধতির কিছু ভিন্নতা থাকলেও মুল বিষয় একই।
মিটারিং মোড
আপনি এক্সপোজার পরিমাপের জন্য সামনে দৃশ্য ব্যবহার করবেন। কিন্তু কতটা অংশ। যেখানে এক যায়গায় আলো বেশি, আরেক যায়গায় কম। একটি পাখির ছবি উঠানোর সময় আপনি তার মাথাকেই মুল ধরে ছবি উঠানো পছন্দ করবেন, কিন্তু বাগানের ছবি উঠানোর সময় আলোছায়া সম্বলিত বেশ কিছুটা যায়গা বিবেচনায় আনতে চান।
ডি-৯০ মিটারিং মোড ৩ ধরনের। ম্যাট্রিক্স, সেন্টার ওয়েটেড এবং স্পট।
ম্যাট্রিক্স মিটারিং : এটাই সাধারনভাবে ব্যবহৃত হয়। সামনের দৃশ্য থেকে আলো ক্যামেরার সেন্সরে প্রবেশ করে এবং সেখানে ডাটাবেজের লক্ষ লক্ষ প্যাটার্নের সাথে মিলিয়ে সঠিক মান বের করে।
সেন্টার ওয়েটেড মিটারিং : পুরো দৃশ্য বিবেচনায় আনা হবে, কিন্তু বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে কেন্দ্রের মুলত ৮ মিমি এলাকাকে।
স্পট মিটারিং : কেন্দ্রের ৩.৫ মিমি এলাকাকে প্রাধান্য দিয়ে হিসেব করা হবে।
মিটারিং মোড পরিবর্তন
.          ক্যামেরা অন থাকা অবস্থায় মিটারিং বাটন চেপে ধরুন (সাটার রিলিজ বাটনের পাশে)।
.          কমান্ড ডায়াল ঘুরিয়ে সঠিক মোড সিলেক্ট করুন।
সেটিং দেখার জন্য ওপরের ডিসপ্লে ব্যবহার করতে পারেন অথবা এলসিডি অন করে নিতে পারেন।
ছবির বিষয় অনুযায়ী সঠিক মিটারিং মোড ব্যবহার করুন, ভাল ছবি উঠান।


ডিজিটাল ফটোগ্রাফিতে ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন


আধুনিক ক্যামেরাগুলির জন্য ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন একটি প্রচলিত শব্দ। বলা হয় ভাল, স্পষ্ট ছবি উঠানোর সুযোগ করে দেয় এই ব্যবস্থা। ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশনের বিস্তারিত জেনে নিন।
আপনি যখন ছবি উঠান, যতক্ষন লেন্সের ঢাকনা খোলা থাকে ততক্ষন সেন্সরে আলো আসতে থাকে। এইসময় যদি আপনার হাত কাপে তাহলে সামনের দৃশ্য একই যায়গায় থাকার বদলে কিছুটা ছড়িয়ে যায়। ফল হিসেবে ছবি পাওয়া যায় ঝাপসা। সাটার স্পিড যত কম এই ঝাপসা হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। আবার দুরের ছবি যখন উঠানো হয় তখন সামান্য নড়াচড়াও বড় দুরত্ব অতিক্রম করে, সেখানেও ছবি ঝাপসা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই সমস্যার সমাধান দেয় ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন।
মুলত এতে যে কাজ হয়, ক্যামেরার এই প্রযুক্তি ক্যামেরার নড়াচড়া হিসেব করে। ক্যামেরা নড়ার সাথেসাথে বাইরে থেকে আলো গ্রহন বন্ধ করে দেয়। ফলে পরিবর্তিত যায়গার দৃশ্য ধরা পড়ে না, পাওয়া যায় স্পষ্ট ছবি।
ক্যামেরা কিভাবে একাজ করে সেটা কারিগরী বিষয়। হয়ত তার বিস্তারিত না জানলেও চলে।
ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। কোন ক্যামেরায় লেন্সে এই প্রযুক্তি যোগ করে দেয়া হয়, কোন ক্যামেরায় ক্যামেরার প্রসেসর এই কাজ করে, কোন ক্যামেরা দুধরনের ব্যবস্থাই থাকে। মুল দুটি ভাগ হচ্ছে অপটিক্যাল ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন এবং ডিজিটাল ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন। অপটিক্যাল পদ্ধতিতে ছবির মান ভাল থাকে।
ষ্ট্যাবিলাইজড লেন্সে এই ব্যবস্থা অন-অফ করার জন্য একটি সুইচ থাকে। ব্যবহার খুব সহজ। ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহারের জন্য সুইচটি অন করুন, ব্যবহার না করলে অফ রাখুন।
মনে হতে পারে অফ করার বিষয়টি আসছে কেন ? সবসময় অন রাখলে সমস্যা কোথায় ?
আপনি যখন ট্রাইপড ব্যবহার করেন তখন যদি ষ্ট্যাবিলাইজেশন অন থাকে, ক্যামেরা ধরে নেয় ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করতে হবে। ফলে স্থির ছবিকে ষ্ট্যাবিলাইজ করার চেষ্টা করে। এতে ভালোর পরিবর্তে মন্দ ফল পাওয়া যায়।
কম্প্যাক্ট ক্যামেরার ক্ষেত্রে ষ্ট্যাবিলাইজেশন অন-অফ করার কাজ করতে হয় মেনু থেকে।
এতক্ষন পর্যন্ত ষ্ট্যাবিলাইজেশন শব্দটি ব্যবহার করা হলেও একে ক্যামেরা নির্মাতা এরজন্য একেক নাম ব্যবহার করে। নাইকন (নিকন) বলে ভাইব্রেশন রিডাকশন (ভিআর), ক্যানন বলে ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন (আইএস), ট্যামরন বলে ভাইব্রেশন কন্ট্রোল (ভিসি) ইত্যাদি।
অল্প কথায় ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহারের সাধারন নিয়ম;
.          ট্রাইপড ব্যবহারের সময় ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করবেন না। অন্য সবসময় ব্যবহার করুন।
.          এসএলআর ক্যামেরার ক্ষেত্রে ক্যামেরা অফ করার আগে ষ্ট্যাবিলাইজেশন সুইচ অফ করে নিন।  
.          ক্যামেরা বা লেন্স কেনার সময় ষ্ট্যাবিলাইজেশন আছে কিনা দেখে কিনুন (অবশ্যই ষ্ট্যাবিলাইজেশনসহ লেন্সের দাম বেশি)।
.          ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবস্থা না থাকলে ট্রাইপড ব্যবহার করুন অথবা যতটা সম্ভব হাত স্থির রাখার চেষ্টা করুন।
.          ষ্ট্যাবিলাইজেশন ব্যবহার করে সাধারনত সাধারন সাটারস্পিডের দ্বিগুন সাটার স্পিড ব্যবহার করা যায়। অল্প আলোয় ছবি উঠানোর সময় একে কাজে লাগান।



ডিজিটাল ক্যামেরা কিংবা মোবাইল ফোনে ফার্মঅয়্যার আপগ্রেড করা


ডিজিটাল ক্যামেরা, মোবাইল ফোন ইত্যাদি ডিভাইসে কম্পিউটারের মত ফার্মঅয়্যার নামে সফটঅয়্যার থাকে। এর কাজ হচ্ছে ডিভাইসের বিভিন্ন অংশকে হার্ডঅয়্যার লেভেলে নির্দেশ দেয়া। ক্যামেরাকে উদাহরন হিসেবে ব্যবহার করলে, কিভাবে রং ঠিক করা হবে, কিভাবে জেপেগ কনভার্শনের কাজ হবে, কিভাবে নয়েজ রিডাকশনের কাজ হবে এই নির্দেশগুলি দেয়া থাকে এতে। স্বাভাবিকভাবেই একবারে নিখুতভাবে সবকিছু হবে এটা আশা করা যায় না। সেকারনে কোন ত্রুটি ধরা পড়লে বা কিছু উন্নতি করা হলে তাকে আপডেট সফটঅয়্যার হিসেবে দেয়া হয়। ব্যবহারকারী নিজেই সেটা ইনষ্টল করে নিতে পারেন।
উদাহরন হিসেবে এখানে নাইকন ডি-৩১০০ ক্যামেরা উল্লেখ করা হচ্ছে। অন্য ক্যামেরা বা মোবাইল ফোন বা অন্য ডিভাইসের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন।
বর্তমান ফার্মঅয়্যার ভার্শন সম্পর্কে জানুন
.          মেনু বাটনে চাপ দিন।
.          মাল্টি সিলেক্টর বাটন ব্যবহার করে Firmware version লেখা অংশে যান এবং OK চাপ দিন। বর্তমান ভার্শনের নাম (সংখ্যা) জানা যাবে।
.          ভার্শন এর মান লিখে রাখুন।
কিভাবে আপডেট করবেন
.          নির্মাতার (উদাহরনে নাইকন, আপনার ক্ষেত্রে ক্যানন বা নোকিয়া হতে পারে) সাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট মডেলের জন্য সবশেষ ফার্মঅয়্যার ডাউনলোড করুন।
.          একে জিপ করা অপস্থায় পেতে পারেন। আনজিপ করে নিন। ক্যামেরার কার্ডটি ফরম্যাট করে নিন, এরপর ফাইল সেখানে কপি করুন। অবশ্যই রুটে কপি করবেন, ফোল্ডারের মধ্যে থাকা ফাইল ব্যবহার করা যাবে না।
.          ক্যামেরার পুরো চার্জ আছে সেটা নিশ্চিত হয়ে নিন। কার্ডটি ঢুকিয়ে ক্যামেরা অন করুন।
.          মেনু বাটনে চাপ দিয়ে ফার্মঅয়্যার মেনুতে যান। আপডেট স্ক্রিনে ইয়েস সিলেক্ট করে ওকে চাপ দিন।
.          একটি ওয়ার্নিং মেসেজ দেখা যাবে। আপডেট হতে কয়েক মিনিট (২ থেকে ৫ মিনিট) সময় নিতে পারে। এই সময় কামেরায় কিছু করবেন না।
.          কাজ শেষ হলে মেসেজটি চলে যাবে। ক্যামেরা অফ করুন এবং কার্ডটি খুলে ফেলুন।
.          ক্যামেরা আবার চালু করুন। নতুন ফার্মঅয়্যারে ক্যামেরা কাজ করার কথা। আগের পদ্ধতিতে ফার্মঅয়্যার ভার্শন চেক করে নিন।
নতুন ফার্মঅয়্যার পাওয়া যায় নির্মাতার ওয়েবসাইট থেকে। নিয়মিতভাবে তাদের সাইটে আপডেট বিষয়ে লক্ষ্য রাখুন।


ডিজিটাল ফটোগ্রাফি : ক্যানন এসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার



জনপ্রিয় ব্রান্ড ক্যানন যারা ব্যবহার করেন তারা কিছুটা অস্বাচ্ছন্দবোধ করতে পারেন তাদের ক্যামেরা ব্যবহার সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়নি দেখে।
এখানে ক্যানন এসএলআর ক্যামেরার ব্যবহারের পদ্ধতি উল্লেখ করা হচ্ছে। ক্যামেরা মডেল হিসেবে জনপ্রিয় ইওস টি২আই (৫৫০ডি) বেছে নেয়া হয়েছে।
ক্যামেরা পরিচিতি
ক্যানন এবং নাইকন ক্যামেরার সামনের দিকে বিশেষ কোন পার্থক্য নেই। ওপরদিকে পার্থক্যের মধ্যে রয়েছে পাওয়ার সুইচ এবং মেইন ডায়াল, মোড ডায়াল এগুলির অবস্থানে। ব্যবহারের দিক থেকে সত্যিকারের পার্থক্য পেছন দিকে। বাটনগুলি ভিন্ন যায়গায় এবং ভিন্নভাবে সাজানো। আপনি নিশ্চয়ই ছবি দেখে জেনে নিতে পারেন কোটির অবস্থান কি।
কার্ড ছাড়া ছবি উঠানো
ক্যামেরায় যদি মেমোরী কার্ড না থাকে তাহলে সাটার রিলিজ বাটন কাজ করবে না। ক্যামেরার সবকিছু ঠিক আছে কিনা যাচাই করার জন্য মেমোরী কার্ড ছাড়াই ছবি উঠানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ছবির প্রিভিউ দেখা যাবে, শুধু সেভ হবে না। ফল হিসেবে যা হয়, আপনার ক্যামেরায় কার্ড নেই অথচ আপনি ছবি উঠিয়ে যাচ্ছেন।
মেমোরী কার্ড না থাকলে ছবি উঠানো যাবে না নিশ্চিত করে নিন।
.          ক্যামেরা অন করুন।
.          পিছনদিকে মেনু বাটনে চাপ দিয়ে মেনু অন করুন।
.          মেনু ডায়াল ব্যবহার করে বামদিকের মেনু ট্যাব সিলেক্ট করুন। মেনুতে নিচের দিকে Release shutter without card সিলেক্ট করুন।
.          পরের মেনুতে Disable অপশন সিলেক্ট করুন।
.          মেনু বাটনে চাপ দিন।
এরফলে কেবলমাত্র কার্ড থাকলেই সাটার রিলিজ বাটন কাজ করবে।

ছবির মান ঠিক করুন
ইচ্ছে করলে আপনি সেন্সরের পুরো রেজ্যুলুশনে ছবি উঠাতে পারেন (অধিকাংশ সবয় সেটা করবেন), অথবা ছবির রেজ্যুলুশন কমিয়ে ছবি উঠাতে পারেন। রেজ্যুলুশন কমানোর একটাই সুবিধে, এতে ফাইলসাইজ ছোট হয়, ফলে অল্প যায়গার কার্ডে বেশি ছবি উঠানো যায়। ক্যাননে ৬টি ভিন্ন ভিন্ন রেজ্যুলুশনে ছবি উঠানো যায়।
.          পিছনদিকে মেনু বাটনে চাপ দিন।
.          মেইন ডায়াল ব্যবহার করে একেবারে বামদিকের মেনু ট্যাব সিলেক্ট করুন।
.          মেনুতে Quality অপশন বের করুন।
.          সেট বাটনে চাপ দিন।
.          যে সেটিং ব্যবহার করতে চান সেটা সিলেক্ট করুন।

অটো-আইএসও বন্ধ করুন
আলো কম থাকলে আইএসও এর মান নিজে থেকেই বেড়ে যায়, ফল হিসেবে পাওয়া যায় নয়েজযুক্ত ছবি। আপনি অটো আইএসও পরিবর্তণ বন্ধ করে নিজের পছন্দমত আইএসও ব্যবহার করতে পারেন। উজ্জল আলোর জন্য এর মান ১০০ থেকে ২০০ এর মধ্যে রাখা হয়, ঘরের মধ্যে বা মেঘলা দিনে ৪০০ পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়। আপনার কাজ আইএসও যতটা কম রেখে গ্রহনযোগ্য ছবি উঠানো যায়। কখনো কখনো কম আলোর ছবি উঠিয়ে পরবর্তীতে সফটঅয়্যার ব্যবহার করে সেটা ঠিক করে নিতে পারেন, নয়েজ দুর করার বিষয়টি তারচেয়ে জটিল।
.          ক্যামেরা চালু অবস্থায় ওপরের দিকে আইএসও বাটনে চাপ দিন।
.          মেইন ডায়াল ব্যবহার করে পছন্দের আইএসও সিলেক্ট করুন।
.          আরেকবার আইএসও বাটনে চাপ দিন। পরিবর্তন না করা পর্যন্ত পছন্দের আইএসও ব্যবহৃত হবে।

হোয়াইট ব্যালেন্স সেট করা
একে ধরনের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য একেরকম। এর প্রভাব পড়ে সাদা রঙের ওপর। একারনেই কোন ছবি লালচে, কোনটি নিলচে দেখায়। ছবি উঠানোর সময় সকাল, দুপুর, মেঘলা, ফ্লরোসেন্ট বাতি, টাংষ্টেন বাতি, ফ্লাশ ইত্যাদি অনুযায়ী সাদা রঙ কেমন দেখা যাবে ঠিক করে নিতে হয়। একে বলা হয় হোয়াইট ব্যালান্স।
.          অটো মোডে হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করা যায় না। ক্যামেরাকে ক্রিয়েটিভ মোডে নিন (যেমন P)
.          ক্যামেরার পিছনদিকে WB লেখা বাটনে চাপ দিন।
.          এরো কি ব্যবহার করে আলোর সাথে মিল রেখে সঠিক সেটিং সিলেক্ট করুন।
.          সেট বাটনে চাপ দিন।

ভিউফাইন্ডার ডাইঅপ্টার এডজাষ্ট করা
ভিউফাইন্ডার ব্যবহারের সময় সামনের দৃশ্য স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না ? এর নিজস্ব ফোকাসের ব্যবস্থা রয়েছে যা পরিবর্তন করে ঠিক করে নেয়া যায়।
.          ক্যামেরার সামনে কিছু ফোকাস করুন।
.          ভিউফাইন্ডারে সাথে নব ব্যবহার করে ফোকাস স্পষ্ট করুন।

অটোফোকাস/ষ্ট্যাবিলাইজার অন/অফ করা
আপনি হয়ত ফোকাস রিং ব্যবহার করে ফোকাস করতে চান। যেমন আপনার সামনে একটি গাছের পাতা এবং দুরে আরেকটি ফুল রয়েছে, আপনি চান পছন্দমত এর যেকোন একটিকে ফোকাস করতে।  অটোফোকাস অফ করে নিন।
কিংবা ইমেজ ষ্ট্যাবিলাইজেশন অফ রাখতে চান ক্যামেরাকে ট্রাইপডে ব্যবহারের সময়
.          লেন্সের গায়ে AF/MF সুইট ব্যবহার করে অটোফোকাস অন/অফ করুন।
.          লেন্সের গায়ে Stabilizer On/OFF লেখা সুইচ ব্যবহার করে ষ্ট্যাবিলাইজেশন অন/অফ করুন।

সাধারনভাবে এই কন্ট্রোলগুলি ব্যবহার করে আপনি ক্যানন এসএলআর ক্যামেরায় ভাল ছবি উঠাতে পারেন। অবশ্য ভাল ছবির ধারনা একে জনের কাছে একেক রকম।



HDR Photography


ডিজিটাল ক্যামেরার অনেক উন্নতি হয়েছে, ক্রমাগত হচ্ছে এবং মানুষ ডিজিটাল ফটোগ্রাফিতে মানুষ সন্তুষ্ট। তারপরও বাস্তব সত্য হচ্ছে মানুষ চোখে যেমন দেখে ঠিক সেটাই ছবিতে পাওয়া যায় না। কারন আলো এবং অন্ধকারের বিভিন্ন পর্যায় ছবিতে রেকর্ড করা যায় না। সেইসাথে দুরত্বে বিষয় আছে। একই সময়ে কাছের এবং দুরের বস্তুকে সঠিকভাবে দেখানোর ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা আছে। একদিকে প্রাধান্য দিলে আরেক দিককে অবহেলা করতে হয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল যে ব্যবস্থা তা হচ্ছে হাই ডাইনামিক রেঞ্জ (এইচডিআর)।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে ডাইনামিক রেঞ্জ বিষয়টি আসলে কি ?
এর নির্ভুল উত্তর নেই। ক্যামেরা নির্মাতা কখনো বলে না ক্যামেরার ডায়নামিক রেঞ্জ কত। অন্যভাবে বললে আলোছায়ার মধ্যে কতদুর পর্যন্ত পার্থক্য রেকর্ড হবে সেটা পরিমাপগতভাবে জানানো হয় না। কাজেই বস্তুত এর কোন সংজ্ঞা নেই। সহজভাবে ধারনা হচ্ছে, প্রতিটি ক্যামেরা আলো এবং ছায়ার মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমান লেভেল ধারন করতে পারে। এটাই ডাইনামিক রেঞ্জ। কাজেই যখন বলা হয় হাই ডাইনামিক রেঞ্জ তখন এই মানকে আরো বৃদ্ধি করা বুঝায়।
অন্যভাবে বললে, ভাল ছবির জন্য প্রয়োজন সঠিক এক্সপোজার। সাধারনভাবে সঠিক এক্সপোজারে যে তথ্য রেকর্ড হয় এইচডিআর তারথেকে কয়েকগুন বেশি তথ্য রেকর্ড করে। একই সময়ে কাছের এবং দুরের বস্তুর জন্য পৃথক এক্সপোজার ব্যবহার করে। ফলে ছবি পাওয়া যায় স্পষ্ট।
কথা হচ্ছে আপনি এইচডিআর ফটোগ্রাফ পাবেন কিভাবে ?
দুভাবে পেতে পারেন। সবচেয়ে ভাল ফল পাবেন ছবি উঠানোর সময় বিশেষ নিয়মে ছবি উঠিয়ে। ছবি উঠানোর পর ফটোশপ বা লাইটরুম ব্যবহার করে এইচডিআর ব্যবহার করতে পারেন। এই সফটঅয়্যারগুলিতে সাধারনভাবে আলো কমবেশি করা ছাড়াও নির্দিষ্টভাবে আলো বা ছায়ার অংশ পরিবর্তন করা যায়। এজন্য এই সাইটেই ফটোশপ টিউটোরিয়াল দেখুন।
ক্যামেরা ব্যবহার করে এইচডিআর ছবি কিভাবে উঠাবেন জেনে নিন। আগেই বলে নেয়া ভাল এইচডিআর ফটোগ্রাফি ভাল কাজ করে আউটডোরে। প্রাকৃতিক দৃশ্য উঠানোর সময়।
.          ক্যামেরাকে ট্রাইপডে রাখুন।
.          ম্যানুয়েল মোডে যান। এপারচার নির্দিষ্ট করুন।
.          ফোকাস করুন এবং এক্সপোজার কন্ট্রোল পরিবর্তন করে বিভিন্ন সেটিংএ অন্তত ৫টি ছবি তুলুন। ছবিগুলির পার্থক্য শুধুমাত্র এক্সপোজারে, অন্যকিছুতে পরিবর্তন করবেন না।
.          ছবিগুলিকে এইচডিআর সফটঅয়্যারে ব্যবহার করে একসাথে করুন। ফটোশপ, লাইটরুম ছাড়াও বহু সফটঅয়্যার আছে যেখানে একাজ করা যায়।
মনে হচ্ছে কাজটি বেশ কঠিন। কিন্তু চোখে পড়ার মত উচুমানের ছবি পেতে হলে অতিরিক্ত কাজ তো করতেই হয়।



বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন শখ থাকতে পারে, তার মধ্যে ফটোগ্রাফি অন্যতম । ফটোগ্রাফি কে শুধু শখ হিসেবে নয় আজকাল অনেকে পেশা হিসেবে নিয়েছে। অনেকেই মনে করেন ভালো DSLR ক্যামেরা না থাকলে ভালো ফটোগ্রাফার হওয়া যায় না কিন্তু এই ধারনা ভুল কেননা সুন্দর কলম থাকলেই যে সুন্দর লেখা হবে এমন কিন্তু নয় । ভালো ফটোগ্রাফার হতে চাইলে সবার আগে আপনার প্রয়োজন সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি । মনে রাখবেন , গলায় DSLR ঝুলালেই ফটোগ্রাফার হওয়া যায়না। হতে পারে আপনার DSLR নেই তাতে কি? আপনার আপনার শখের মোবাইল তো আছে । সুন্দর ফটোগ্রাফির জন্য DSLR থাকা জরুরি নয়। সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে আপনি আপনার মোবাইল দিয়েও অনেক সুন্দর ছবি তুলে তাক লাগিয়ে দিতে পারেন সবাইকে । মোবাইল দিয়ে ভালো ছবি তুলতে চাইলে কিছু টিপস মেনে চলুন একদিন হয়ত আপনিও হয়ে যেতে পারেন দেশবরেণ্য ফটোগ্রাফার।
১।ফটোগ্রাফির মূল বিষয় হল আলো তাই আপনাকে প্রথমে লক্ষ করতে হবে আলো কোন দিক থেকে আসছে , আপনাকে খেয়াল করতে হবে সাবজেক্টের উল্টা দিক থেকে যেন আলো আসে তাহলে সাবজেক্ট স্পষ্ট আসবে । যদি সাবজেক্টের পেছনে আলোর উৎস থাকে তাহলে সাবজেক্ট স্পষ্ট আসবেনা এবং ব্যাকগ্রাউন্ড জ্বলে যাবে।
২। ছবি তোলার সময় হাত কাঁপলে ছবির মান খারাপ হবে । তাই ছবি তোলার সময় হাত কাপাকাপি করলে প্রয়োজনে ট্রাইপড বা অন্য কিছু ব্যাবহার করুন সাপোর্ট দেয়ার জন্য।
৩।ছবি তোলার সময় ব্যাকগ্রাউন্ড কে গুরুত্ব দিন ব্যাকগ্রাউন্ড হাল্কা না হলে আপনার সাবজেক্টটি মর্যাদা হারাতে পারে।
৪। ছবি তোলার সময় জুম ব্যবহার না করাই ভালো।
৫। যতদূর সম্ভব কাছ থেকে ছবি তোলার চেষ্টা করুন।
৬। বিভিন্ন আঙ্গেল থেকে ছবি তোলার চেষ্টা করুন।
৭। খেয়াল করুন আপনার মোবাইলের লেন্সে কোন ময়লা আছে কিনা, ময়লা থাকলে ছবি ঘোলা হবে।
৮। সব সময় খেয়াল রাখবেন ফোকাস যেন আপনার মূল সাবজেক্টের উপর হয়।
৯। যতদূর সম্ভব উচ্চ রেজুলেশনে ছবি তুলুন । ছবির সাইজ নিয়ে কিপ্টেমি করবেন না।
১০। প্রচুর ছবি তুলুন এতে আপনার হাত পাকা হবে।
১১। ছবি তোলার পর আরও সুন্দর করতে সামান্য এডিট করা যেতে পারে , তবে বেশি এডিট করলে ছবি খারাপ হয়ে যেতে পারে।

‘স্ট্রিট ফটোগ্রাফি’র সঙ্গে পরিচিত নন এমন আলোকচিত্রী পাওয়া দায়। তারপরেও যদি স্ট্রিট ফটোগ্রাফি সম্পর্কে না জানা থাকে, তাহলে আলোকচিত্রবিষয়ক সাইট পেটাপিক্সেলের প্রতিবেদনের আলোকে চলুন জেনে নেওয়া যাক, বিষয়টি আসলে কী?
স্ট্রিট ফটোগ্রাফি: পোরট্রেইট কিংবা ল্যান্ডস্কেইপের মতো স্ট্রিট ফটোগ্রাফিও আলোকচিত্রের একটি শাখা, যার মাধ্যমে আলোকচিত্রী দৈনন্দিন জীবনের চলমান ঘটনাকে ক্যামেরাবন্দী করেন। এ ধরনের আলোকচিত্রের জন্য দরকার নেই কোনো বাড়তি অনুমতি, অর্থ কিংবা ব্যাপক প্রস্তুতির। এজন্য শুধু প্রয়োজন ছবি তোলার ইচ্ছা, ক্যামেরা এবং রাস্তা।
নিজ বাসার সামনের রাস্তা থেকে শুরু করে যেকেনো রাস্তা কিংবা গলি হতে পারে স্ট্রিট ফটোগ্রাফির আদর্শ স্থান। যদিও অনুমতির প্রয়োজন নেই এবং আলোকচিত্রী শুধু দৈনন্দিন জীবনের চলমান ঘটনাকেই ক্যামেরাবন্দী করবেন, তবুও ‘আকর্ষণীয় সাবজেক্ট’-এর ক্ষেত্রে আলোকচিত্রী চাইলে গতানুগতিক ধারা মেনে অনুমতি নিয়ে কারো পোরট্রেইট তুলতে পারেন বলে জানিয়েছে পেটাপিক্সেল। মোদ্দা কথা, স্ট্রিট ফটোগ্রাফির তেমন কোনো বাঁধাধরা নিয়মকানুন নেই।
স্ট্রিট ফটোগ্রাফি বিষয়ে ১০টি টিপসও জানিয়েছে আলোকচিত্রবিষয়ক সাইটটি। চলুন এক নজরে জেনে নেওয়া যাক, সে ১০ টিপস-
১. লেন্স: প্রথমে আসা যাক লেন্স বিষয়ে। হয়তো স্ট্রিট ফটোগ্রাফির জন্য আপনি টেলিফোটো লেন্স ব্যবহার করতে চাইবেন। চাওয়ার পেছনে যৌক্তিক কারণও রয়েছে, এর ফলে দূর থেকে ছবি ধারণ করা সম্ভব হবে। কিন্তু এ কাজটি করলে যতটা না সফল হবেন, তার চেয়ে বেশি হতাশ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ?
একবার চিন্তা করুন, আপনি ব্যস্ততম একটি রাস্তায় আকারে বড়, ওজনে ভারী এক লেন্স লাগানো ক্যামেরা নিয়ে ছবি তুলছেন। এ রকম পরিস্থিতিতে মানুষ আপনাকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখবে, এটাই স্বাভাবিক। এতে তারা নিজেরাই নিজের অজান্তে চলাফেরায় পরিবর্তন নিয়ে আসবে। কারণ এমন দৃশ্য দেখে তারা অভ্যস্থ নন। স্ট্রিট ফটোগ্রাফির অন্যতম একটি অলিখিত নিয়মই হচ্ছে মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়া বা তাকে ক্যামেরার উপস্থিতি বুঝতে না দেওয়া। বুঝাই যাচ্ছে, টেলিফোটো লেন্স নিয়ে এরকম হবার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
এজন্য স্ট্রিট ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে ‘ওয়াইড-অ্যাঙ্গেল’ লেন্স ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে পেটাপিক্সেল। এতে করে একদিকে যেমন আপনার ক্যামেরার ওজন কমে আসবে, অন্যদিকে মানুষও আপনাকে শুরুতে এক নজর দেখে নিলেও, পরে আর ততোটা গুরুত্বসহকারে মাথা ঘামাতে যাবে না। এতে করে অনেকটা সহজেই মানুষের ভীড়ে মিশে যেতে পারবেন এবং তুলে আনতে পারবেন বৈচিত্র্যময় নানা ছবি।
২. ক্যামেরা সেটিংস: আলোকচিত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ‘ক্যামেরা সেটিংস’। এটি ঠিক না থাকলে, যতো গ্যাজেটই ব্যবহার করা হোক না কেন, কাঙ্খিত ছবি পাওয়া সম্ভব নয়। স্ট্রিট ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে ক্যামেরা সেটিংস AV বা অ্যাপাচার প্রায়োরিটি-তে রাখার পরামর্শ দিয়েছে পেটাপিক্সেল। এতে করে ডেপথ অফ ফিল্ড কম পেলেও শাটার স্পিডের কারণে আপনার তোলা ছবি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কম থাকবে। কারণ এই মোড স্বয়ংক্রিয়ভাবে শাটারস্পিড ঠিক করে নেয়। আর স্ট্রিট ফটোগ্রাফিতে অধিকাংশ সময়েই আপনাকে সাবজেক্ট এর পেছনে ছুটতে হবে, সে সময়টিতে এই সেটিংস আলোকচিত্রীকে বাড়তি সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করে বলেই জানিয়েছে পেটাপিক্সেল। তবে প্রয়োজনে ক্যামেরার সেটিংস আপনি পরিবর্তন করতেই পারেন, এতে কোনো বিধিনিষেধ নেই।
৩. সাবজেক্ট এর কাছে: সাবজেক্ট এর কাছে থেকে ছবি তুলুন। এজন্য যতটা সম্ভব ততটা কাছে যান। প্রথম পরামর্শেই বলা হয়েছে স্ট্রিট ফটোগ্রাফির জন্য ‘ওয়াইড-অ্যাঙ্গেল’ লেন্স ব্যবহার করতে। এখন আপনি বুঝতে পারবেন, ওয়াইড-অ্যাঙ্গেল লেন্স ঠিক কী কাজে আপনাকে সাহায্য করবে। এই লেন্সের সহায়তায় আপনি খুব সহজেই আপনার সাবজেক্ট-এর নিকটে পৌঁছাতে এবং কাঙ্খিত ছবিটি তুলে নিয়ে আসতে পারবেন। দূর থেকে ছবি তোলার বদলে এই লেন্সের বদৌলতে সহজেই মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে ডিটেইলসমৃদ্ধ ছবি ধারণ করা সম্ভব।
৪. ক্যামেরা নিয়ে ঘুরতে থাকুন: স্ট্রিট ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে আপনি যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি দেখবেন, তা হল আপনার জন্য কেউ অপেক্ষা করছে না। সবাই সবার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এবং আপনি সিদ্ধান্ত নিতে যতটা সময় নিচ্ছেন, ততক্ষণে সাবজেক্ট তার স্থান পরিবর্তন করে ফেলেছে এবং আপনার ‘সাজানো ফ্রেম’ নষ্ট হয়ে গেছে। স্ট্রিট ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সুযোগ বলে কিছু নেই।
এজন্য যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে, তা হল, প্রতিটি মুহূর্তে হারিয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বা আকর্ষণীয় অনেক বিষয়বস্তু। এক্ষেত্রে আপনার করণীয় হল, যতক্ষণ ছবি তোলার কাজে ব্যস্ত, ততক্ষণ পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া এবং ক্যামেরা সেটিংস ঠিক রেখে ক্যামেরা নিয়ে রাস্তার এ মাথা থেকে ও মাথা ঘুরতে থাকা। আর ছবি তোলার সময় দ্রুত তোলা। তবে দ্রুত তুললেও তাড়াহুড়ো করার বিষয়টি বাদ দিতে হবে। এটি স্ট্রিট ফটোগ্রাফির একটি কৌশল যা আপনাকে অনুশীলনের মাধ্যমে রপ্ত করতে হবে, একদিনেই হবে এমনটা আশা না করাই শ্রেয়, তবে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
৫. ভয়কে দূর করুন: স্ট্রিট ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে একটি সাধারণ ভয় কাজ করে - অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা হচ্ছে, বিষয়টি কারো পছন্দ নাও হতে পারে, অপমানের শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই ভয় কাজ করলে, আর যাই করা যাক স্ট্রিট ফটোগ্রাফি করা সম্ভব নয়। আর তাই মাথা থেকে এ ভয় ঝেড়ে ফেলুন। মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে ছবি তোলার কাজটি করতে পারেন, বেছে নিতে পারেন পরিচিত রাস্তা বা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল এমন কোনো সড়ক।
আর যদি একান্তই আপনার ভয় সত্যি হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিন, যদিও সে আশঙ্কা নেই বললেই চলে। কিন্তু এরকম পরিস্থতিতে পড়ার আগেই ঘাবড়ে গিয়ে গোটা ছবি তোলার আয়োজন নষ্ট না করার চেষ্টাই হবে ভাল।
৬. ছবি তুলুন কোমরের কাছে ক্যামেরা রেখে: স্ট্রিট ফটোগ্রাফির সাধারণ বা গতানুগতিক নিয়ম বলে, ক্যামেরায় চোখ রেখে যদি ছবি তোলা সম্ভব হয়, তাহলে ফলাফল ভালো পাওয়া যায়। কথা সত্য, কিন্তু স্ট্রিট ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে এমন অনেক সময় আসবে, যখন এই নিয়ম মেনে চলাটা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। এ বিষয়টির জন্যও চলুন কল্পনার আশ্রয় নেওয়া যাক-
আপনি অপিরচিত রাস্তার একটি স্থানে দাঁড়িয়ে চোখ বরাবর ক্যামেরা রেখে তাক করে রয়েছেন এবং অচেনা মানুষের দিকে ক্যামেরা ঘুরাচ্ছেন আর ছবি তুলছেন।
উপরোক্ত উদাহরণটি আপনার জন্য স্বস্তিদায়ক হলেও হতে পারে, কিন্তু যাদের ছবি তুলছেন তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক নয়। আর তাদের সেই অস্বস্তি আপনার তোলা ছবিতে ধরা পড়বে। এই সমস্যা এড়াতে আপনি যে কাজটি করতে পারেন, তা হল- আপনার কোমর বরাবর ক্যামেরাটি রাখুন এবং সেখান থেকেই ছবি তুলুন। মানুষ টের পাবেন না যে তাদের ছবি তোলা হচ্ছে। বিষয়টি অদ্ভুত শোনালে এতে ফলাফল ভালো পাবেন।
আর যেসব ক্ষেত্রে আপনার ছবি তোলার ইচ্ছা রয়েছে কিন্তু কোনো কারণে ক্যামেরা তাক করলেই ছবিটি তুলতে পারবেন না বলে মনে করছেন, সেখানে নির্দ্বিধায় এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে পারেন। অভিজ্ঞ ফটোসাংবাদিক এড কাশি অনেক প্রতিকূল স্থানে, এভাবে ছবি তুলেছেন। কম্পোজিশনের ব্যাপারে ভাবছেন? কোমর বরাবর ক্যামেরা রেখে ভালো ছবি তোলার জন্য অনুশীলন প্রয়োজন। রাস্তা থেকেই না হয় শুরু হোক আপনার এই অনুশীলন।
৭. ছবি তুলুন রাতে: স্ট্রিট ফটোগ্রাফির ভিন্ন স্বাদ পেতে রাতে ছবি তুলুন। দিনের মতো সহজে ছবি তুলতে না পারলেও রাতের আলো আঁধারি আপনাকে অনেক সুন্দর মূহূর্ত এনে দেবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই ক্যামেরা সেটিংস-এর ব্যাপারে ভালোভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং সঙ্গে একটি ট্রাইপড থাকলে ভালো হয় এমনটাই পরামর্শে জানিয়েছে পেটাপিক্সেল। এ ছাড়াও আলোকচিত্রী চাইলে স্বল্প আলোর ছবি এবং ‘স্টিল ফ্রিজ’ অ্যাকশনধর্মী ছবি তোলার জন্য ‘ফাস্ট অ্যাপাচার লেন্স’ ব্যবহার করতে পারেন।
৮. গতানুগতিক ধারার বাইরে ছবি তোলার চেষ্টা করুন: আপনি যা তুলছেন সে ছবিতে মানুষ থাকতে হবে স্ট্রিট ফটোগ্রাফিতে এসব বিষয় জরুরি না। যেটা জরুরি সেটি হল, আপনার দৃষ্টিভঙ্গি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রকাশ করা। সেটি আপনি খুব সাধারণভাবে করতে পারেন, আবার শৈল্পিকভাবেও করতে পারেন। অসংখ্য মানুষের ভীড়ে কীভাবে ছবি তুলবেন সেটির বদলে কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ছবি তুলবেন তা বিবেচনা করুন একবার, প্রয়োজনে অল্প কিছুক্ষণ সময় নিন, তারপর নেমে পড়ুন ছবি তুলতে।
৯. ছবির গুণগত মানই সব নয়: অনেকেই হয়তো এ বিষয়টির সঙ্গে একমত হবেন না। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ছবির মানের দিকে লক্ষ্য রাখতে গিয়ে হয় মুহূর্তটিই হারিয়ে যায়, না হয় ছবি থেকে হারিয়ে যায় ডিটেইল। স্ট্রিট ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে রাস্তার সাধারণ কাজই ক্যামেরাবন্দী হয়। ওই সাধারণ কাজেরও কিছু অসাধারণ মুহূর্ত থাকে, যা ক্ষণিকের জ্বলে উঠেই আবার হারিয়ে যায়। মান ঠিক রাখতে গিয়ে এই মুহূর্তগুলো হারানোর কোনো মানে হয় না। বিশ্বের অসংখ্য বিখ্যাত আলোকচিত্রী এমন অনেক ছবি তুলেছেন, যে ছবিগুলোর গুণগত মান ঠিক রাখা সম্ভব হয়নি কিন্তু তাতে মুহূর্তগুলো ধরা দিয়েছে। স্ট্রিট ফটোগ্রাফির সময় এ বিষয়টি সম্পর্কেও সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছে পেটাপিক্সেল।
১০. আনন্দের সঙ্গে করুন: ছবি তোলার সময় যদি জোর করে ছবি তোলার চেষ্টা করেন, তাহলে যে ফলাফলটি আসার সম্ভাবনা রয়েছে, তা হল আপনি ছবি অসংখ্য ছবি পাবেন কিন্তু সেগুলোর কোনো অর্থ থাকবে না। স্ট্রিট ফটোগ্রাফি যদি আনন্দ নিয়ে করতে পারেন, তা হলেই শুধু রাস্তায় নামুন। আনন্দ না পেলে শুধু শুধু ছবি তুলে সময় নষ্ট করতে যাবেন না। যে সময়টি ছবি তুলবেন বলে ভেবে রেখেছিলেন, সে সময়টি বরং ব্যয় করুন কেন স্ট্রিট ফটোগ্রাফি আপনার ভালো লাগছে না, জিনিসটিকে ভিন্ন কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা সম্ভব বা কীভাবে স্ট্রিট ফটোগ্রাফিতে আনন্দ নিয়ে আসা যায় সে বিষয়গুলো চিন্তা করে। তারপরেও যদি ভালো না লাগে, যে ধরনের ছবি তুলতে আপনার ভালো লাগে, সে ধরনের ছবি তোলার জন্য বেরিয়ে পড়ুন।

স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি – টিপস ও ট্রিকস

স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি বা লো লাইট ফটোগ্রাফি যেকোনো নতুন ফটোগ্রাফারের জন্যেই ভীতিকর হতে পারে। দিনের বেলায় বা আলো থাকা অবস্থায় ফটোগ্রাফি আর স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি দু’টো দুই গ্রহের জিনিস ।   যে দিনের বেলায় ভালো ছবি তুলতে পারে সে রাতের বেলায় অথবা সন্ধ্যাতেও ভালো ছবি তুলতে পারবেন এমনটা নাও হতে পারে। স্বল্প আলোতে ছবি তোলার জন্যে যেমন প্রচুর প্র্যাকটিসের দরকার তেমনই বেশ অনেকগুলো বিষয় একইসাথে মাথায় রাখা দরকার।যদিও আমার সাথে  ফটোগ্রাফার শব্দটা যায় না তাও চেষ্টা করবো স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি করার সময় লক্ষণীয় বিষয়গুলো নিয়ে।
আলোর কম বেশি হওয়াটা দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন আপনি দুপুরে খোলা জায়গায় সূর্য থেকে যথেষ্ট আলো পাবেন তাই  আলোক স্বল্পতার কোন কারণ নেই, কিন্তু ওই একই সময়ে যদি আপনি কোন বড় গাছের নিচে বা কোন বড় বিল্ডিং এর পিছে ছবি তুলেন? সেক্ষেত্রে কি হবে? আকাশে যথেষ্ট আলো থাকা স্বত্বেও তখন আপনি আলোক স্বল্পতায় ভুগবেন।
স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি
আবার সন্ধ্যে বেলায় বা একদম পড়ন্ত বিকেলে আলোক স্বল্পতা দেখা যায়, তখন যা আলো থাকে তাতে আপনি পরিষ্কার ভাবে দেখতে পারলেও ক্যামেরাকে ঠিক আপনার মতোই দেখাতে হলে বেশ অনেকটাই কসরত করতে হবে। এই সময়ে আপনার যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে তা দুপুরে কোন গাছের নিচে বা বিল্ডিং এর পিছের কোন স্থানে ছবি তোলার বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।
আবার একদম আলোহীন অবস্থা হতে পারে রাতে, তখন আশেপাশে থেকে যতটুকু আলো আসে তাতে কোনক্রমেই হবেনা , তবে আগুনের সামনে থাকলে বা আলোতে ভরপুর রুমে তেমন সমস্যা নেই, তবে এই সময় মন মতো ছবি পেতে হলে অবশ্যই ফ্ল্যাশ ব্যবহার করতে হবে।
এবার তাহলে শুরু করা যাক স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি করার সময় কি কি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। লেখায় দুপুর, সন্ধ্যা আর রাতের আলোক ভিন্নতার কথা মাথায় রেখেই ধাপে ধাপে আগানো হবে।

শাটার স্পিড

শাটার স্পিড কম আলোতে ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে অবশ্যই বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যারা সাধারণত নতুন বা নাইট ফটোগ্রাফি সম্পর্কে জানেন না তারা খেয়াল করে থাকবেন যে রাতে যখন কোন ছবি তুলেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছবিটা অনেকটাই ঘোলাটে বা ব্লারি হয়। কখনো ভেবেছেন এর কারণ কি?
ছবি ঘোলাটে হওয়ার পিছে শাটার স্পিডের ও বেশ খানিকটা ভূমিকা আছে। স্লো শাটার স্পিডে হাত খানিকটা নোড়ে গেলেও ছবি ব্যাপক ঘোলাটে হয়ে উঠতে পারে। তবে  যদি ট্রাইপড ব্যবহার করা হয় আর যে বিষয়ের ছবি তোলার হবে তা অনড় কিছু হয় তবে ব্যাপার ভিন্ন। তবে স্বল্প আলোতে যদি মানুষের ছবি তুলতে চেষ্টা করা হয় আর তখন শাটার স্পিড স্লো থাকে তাহলে ছবি ঘোলাটে আসবে, সে জন্যে আইএসও বাড়িয়ে ফাস্ট শাটার স্পিড এ ছবি তোলা উচিৎ। যদিও আইএসও বাড়ালে ছবিতে নয়েজ চলে আসবে তবুও র মোডে ছবি তুললে ইমেজ এডিটিং সফটওয়্যারের মাধম্যে নয়েজ অনেকাংশেই বা অল্প নয়েজ হলে পুরোটাই তুলে দেয়া সম্ভব।
লো লাইট ফটোগ্রাফি
তবে আপনি যদি ছবিতে মোশন ব্লার চান, তবে স্লো শাটার স্পিডই ব্যবহার করতে হবে ছভিতে। মোশন ব্লার দারুণ মজার জিনিস, ছবি তোলার পরে অনেকক্ষণ মুগ্ধ হয়েই তাকিয়ে থাকবেন যদি মন মতো ছবি পেয়ে যান। মোশন ব্লার এর জন্যে অবশ্যই ট্রাইপড ব্যবহার করতে হবে আপনাকে।
মনে রাখা উচিৎ ছবি বেশি ব্লার হয়ে গেলে সেটা এডিট করে ঠিক করা সম্ভব না, কিন্তু ছবিতে খানিকটা নয়েজ আসলে সেটাকে সহজেই মুছে ফেলা যাবে। তবে বেশি নয়েজ এসে পড়লে ভোগান্তি হবে অনেক।

ট্রাইপড

কম আলোতে ছবি তোলার সময় অবশ্যই ট্রাইপড ব্যবহার করা উচিৎ, যেকোনো রকম বিপত্তি থেকে মুক্তি দিতে পারে ট্রাইপড। ক্যামেরাকে টানা কয়েক সেকেণ্ড একটু খানিও না নড়িয়ে রাখা আমাদের হাতের পক্ষে সম্ভব না, তাই স্বল্প আলোতে ছবি তুলতে অবশ্যোই ট্রাইপড ব্যবহার করা উচিৎ। যদি কোন কারণে ট্রাইপড না থাকে সাথে তবে নিজেকে কোনো কিছুতে ঠেস দিয়ে বা ক্যামেরা কোন অনড় বস্তুতে রেখে অনেকটাই স্নাইপারের মতো করে ছবি তোলা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি নিজেকে স্নাইপার ভাবলেও ভাবতে পারেন

আইএসও

ঘোলা ছবি না নয়েজসহ শার্প ছবি? আপনি কোনটির পক্ষ নিবেন? সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায় শার্প ছবির পক্ষ নিবেন, তবে অল্প আলোতে সেক্ষেত্রে আইএসও বাড়িয়ে নিতে হবে অনেক খানি। বেশি আইএসও ছবিতে অনেক নয়েজ এনে দিতে পারে কিন্তু আপনার ছবি শার্প থাকছে। তাই অল্প আলোতে আইএসও বাড়িয়ে নিন।

র মোড (RAW)

ভালো মানের ফটোগ্রাফাররা যারা ডিজিটাল এস এল আর ব্যবহার করছেন তারা সবাই র মোডে ছবি তুলে থাকেন। র মোডে ছবি তোলার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে কোন কারণে আপনার ছবি খানিকটা আন্ডার এক্সপোজ বা ওভার এক্সপোজ বা অন্য কোন সমস্যা থেকে সহজেই উত্তরণ পাওয়া যাবে। কিন্তু র মোড ছাড়া জেপিইজি [Jpeg] তে ছবি তুললে আপনি এডিট করার সময় বেশ অনেক সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করবেন।
র মোডে ছবি তুললে যেকোনো ছোটখাটো ভুল-ভ্রান্তি সহজেই দূর করা সম্ভব। আর স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি করতে গেলে ভুল-ভ্রান্তি হয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছুনা। তাই স্টোরেজ বেশি থাকলে র মোডে ছবি তোলার চেষ্টা করবেন।

ফোকাস

বাড়তি ঝামেলা এড়াতে অনেকেই ক্যামেরাতে অটো-ফোকাস ব্যবহার করেন। তবে রাতের বেলায় অটো-ফোকাস ব্যবহার না করার পরামর্শই দিবো আমি। আলোকস্বল্পতার কারণে ক্যামেরা নিয়মিত ফোকাস হারায়, ফলে আপনি আসলে যা চাচ্ছেন ছবিতে তা নাও পেতে পারেন। দেখা যাবে আপনি চাচ্ছেন আপনার কাছের মানুষটিকে ফোকাসে রেখে আগুনকে ব্লার করবেন বা আউট অব ফোকাস রাখবেন; কিন্তু দেখা গেলো ক্যামেরা ফোকাস হারিয়ে আগুনকে ফোকাস করেছে আর মানুষটি ঘোলাটে হয়ে গেছে।
এমন বিপত্তিকর অবস্থা এড়াতে রাতের বেলায় এবং দিনের অন্যান্য সময় কম আলোতে ম্যানুয়াল ফোকাস ব্যবহার করা উচিৎ। এতে করে ক্যামেরা কোথায় ফোকাস করবে সেটা আপনি নির্ধারণ করে দিচ্ছেন। তাই ক্যামেরা তার নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা দিয়ে কোনটা ফোকাসে রাখতে হবে আর কোনটা রাখতে হবে না, সেটা নির্ধারণ করবে না।

রিমোট শাটার

ব্লার না করে শার্প ছবির জন্যে সর্বাধিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রিমোট শাটার ব্যবহার করতে পারেন। এমন হতে পারে যে ট্রাইপড থাকা সত্ত্বেও আপনি শাটার বাটনে প্রেস করার সময় ক্যামেরা খানিকটা বা একটু বেশিই নাড়িয়ে দিলেন, তখন ছবি ব্লারি আসবে। তাই নিজের উপর সেইটুকু বিশ্বাসও রাখতে না পারলে আর শার্প ছবির জন্যে সর্বাধিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রিমোট শাটার ব্যবহার করতে পারেন।

ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার

IS/VR এর পুরো ফর্ম হছে ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন/ভাইব্রেশন রিডাকশন। আপনার লেন্সে কে ইমেইজ স্ট্যাবিলাইজ করার বা ভাইব্রেশন রিডাক্ট করার ক্ষমতা আছে? যদি থেকে থাকে তাহলে ভালো আর যদি না থেকে তাহলে আপনার জন্যে কিঞ্চিৎ আফসোস হুওয়াটাই স্বাভাবিক। ছবি তোলার সময় হাত খানিকটা নড়ে-চড়ে যেতে পারে, স্লো শাটার স্পিডে ছবি তোলার সময়ও এমনটা হতে পারে কিন্তু ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার সহ লেন্স এই মৃদু বা মোটামোটি নাড়াচাড়া এড়িয়ে শার্প ছবি দেয়ার ক্ষমতা রাখে। ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার সহ লেন্স থেকে থাকলে অবশ্যই অপশনটি চালু রাখুন।
এ নিয়ে আর বিস্তারিত বলছি না। উইকিপিডিয়াতে ঢু মারতে পারেন – http://en.wikipedia.org/wiki/Image_stabilization

ফ্ল্যাশ

অনেকের মাথায় এমন প্রশ্ন আসতে পারে যে স্বল্প আলোতে ছবি তুলতে যা সবচেয়ে বেশি দরকার সেটাকে কেনো এখনো আলোচনায় আনা হলো না। শেষের দিকে ফ্ল্যাশ নিয়ে কথা বলার পিছে যথেষ্ট কারণ আছে। ভালো ছবি বলতে যা বোঝায় তা অল্প আলোতে বা রাতে বিল্ট ইন ফ্ল্যাশ দিয়ে না পাওয়া যাওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি। ফ্ল্যাশ সরাসরি সাবজেক্টে পড়লে মোটেও সেটা ভালো ফল দেয় না। তাই দরকার ভালো মানের এক্সটার্নাল ফ্ল্যাশ।
ভালো মানের ফ্ল্যাশ এর দাম অনেক বেশি, কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যাবে আপনার ক্যামেরার চাইতেও ফ্ল্যাশের দাম বেশি। যেহেতু আলাদা ফ্ল্যাশ কেনা ব্যয়সাপেক্ষ তাই অনেকেরই হয়তো সেটা জোগাড় করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। আর যারা আমার মতো নিতান্তই টুক টাক প্রয়োজন আর শখের বসে ছবি তোলার জন্যে ডিএসএলআর কিনেছেন তাদের মধ্যে ফ্ল্যাশ না কেনার প্রবণতাটাই বেশি থাকে।
অল্প আলোতে ছবি তোলার সময় ভালো ফ্ল্যাশ ছবিকে সম্পূর্ণরুপে পাল্টিয়ে ফেলতে পারে। তবে ফ্ল্যাশ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কিছুটা সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা ভালো। সরাসরি সাবজেক্টে ফ্ল্যাশ না করে কোন কিছুতে যদি বাউন্স করে ফ্ল্যাশ ব্যবহার করা যায় তাহলে বেশ ভালো ছবি পাওয়া সম্ভব।

শেষ কথা

আমি ভালো কোন ফটোগ্রাফার নই, আমি নিতান্তই শখের বসেই ফটোগ্রাফি করে। তাই মাঝেমাঝে টুকটাক প্রয়োজনে ফটোগ্রাফি নিয়ে খানিকটা জানাশোনার দরকার হয়। আজ স্বল্প আলোতে ফটোগ্রাফি নিয়ে খানিকটা পড়াশোনার চেষ্টা করলাম। উপরের পোষ্ট সেটারই ফসল। যেকোনো রকম ভূল-ভ্রান্তি থাকাটা নিতান্তই স্বাভাবিক।










আমাদের দেশে ফটোগ্রাফি খুব একটা
পরিচিত বিষয় নয় । অনেক মেধাবী ফটোগ্রাফার থাকলেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে আমরা শখ অনুযায়ী এগুতে পারছিনা । তবে
আমাদের ২০০০০-৩০০০০ টাকা দিয়ে ক্যামেরা কেনার সামর্থ না থাকলেও সবার হাতেই কিন্তু মোবাইল আছে । তো চলুন মোবাইল
দিয়েই শুরু করি ফটোগ্রাফি অনেকেই বলতে পারেন মোবাইল দিয়ে আবার ফটোগ্রাফি কিসের ? আমি তাদের বলি দাদাভাই বর্তমানে
মোবাইল হল রুপকথার সেই আলাদিনের চেরাগ ! সঠিক দিক নির্দেশনা আর সুন্দর দৃষ্টি ভঙ্গি থাকলে আপনিও তুলতে পারেন অসাধারণ
সব ছবি! মনে রাখবেন বেশী মেগাপিক্সেল আর দামি ক্যামেরা হলেই ভালো ছবি উঠবে এমন কিন্তু নয়।আপনি আমাদের পেজে আসুন
দেখুন সেখানে সবাই মোবাইল দিয়ে কত সুন্দর সুন্দর ছবি তুলছে যা আপনি কল্পনা করতে পারেন নি। নিচে মোবাইল ফটোগ্রাফার দের
জন্য কিছু চরম টিপস



টিপস১---ছবি তোলার সময় Digital Zoom করা থেকে বিরত থাকুন...
টিপস ২---আগে ছবি তুলুন তারপর Crop করে zoom এর কাজ টা সেরে নিন.
টিপস ৩---মাঝে মাঝে মোবাইলের পিছনের ব্যাক কাভার টি খুলে নরম টিস্যু তে একটু পারফিউম লাগিয়ে আলতু করে মুছে ফেলুন..
ক্যামারা চার পাশে যেনো কোন ছোট ছোট ময়লা না থাকে সেটার দেকি খেয়াল রাখবেন।
টিপস৪---কিসের ছবি তুলছেন তার দিকে খেয়াল রাখুন, ছবিতে আলো খুঁজোন.... Photography মানেই তো আলোকচিত্র তাই না!
টিপস৫---ভাববেন না মোবাইলে ছবি তুলার জন্য তেমন কোন ভালো অপশনে নেই, Mobile Photography Awards নামে
google করে দেখে নিবেন। এর মানে এই যে মোবাইল এর ক্যামারাতে অনেক কিছুই আছে যা আমি আপনি ব্যবহার করতে পারছি
না...
টিপস৬--- Blur & Bokeh , Blur মানেই কিন্তু Photography না, এটা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে অনেক কিছু আছে যা না মাথা ঘামালে
এর চেয়ে ভালো ছবি তুলতে পারবেন...
টিপস৭---এক রকম Subject এর ছবি না তুলে নতুন নতুন থিমস, সাবজেক্ট, আলো নিয়ে খেলা করুন, খেলা করতে থাকলেই
দেখবেন আলো ঠিক আপনার সাথে খেলা শুরু করছেন।
টিপস৮---Photoshop Lightroom (pc) ব্যবহার কারীরা ছবিতে 60+ sharpen, 40+ Noise Reduction, Clearity 20,
Vibrance 15, Satuation 20 দিয়ে সহজে ছবিটাকে সুন্দর রুপ দিতে পারেন, Same Thing u do in Mobile Lightroom
apps
টিপস৯---Mobile Flash ব্যবহার করা ভুলে যান.... অন্য কোন আলোর Source খুঁজে বের করুন... (যদি ফ্লাস ব্যবহার করতেই
চান Iso 400, Expouser Value -3EV)
টিপ্স ১০--- খুব সহজে Filters ব্যবহার করে ছবিতে নতুন রুপ দিতে পারেন...
.Photography apps...
1. Photoshop Touch
2.Photoshop Express
3.Adobe Lightroom
4.PiXlr
5.picsArt
6.Snapspeed (My Fav App)
7.After Focus Pro/Real Bokeh Pro( For Blur)
উপরের সবগুলাই ফটো Edit, PP এপ্স...
Stock Camerar উপর আমার মনে হয় না ভালো ক্যামারা হয়!!! Just for Jokes! আমার এটাই মনে হয়...
1. Camera FV-5 Pathed
2. Snap Camera HDR
3. Lenovo Camera
4. Google Camera
5. Camera 2
6. DSLR camera Pro(I used it for Street Photo capture, Shutter Speed ভালো স্পিড দেয়)

একটা মজার টিপ্স দেই,
ভ্যাসলিন এর সাথে হালকা লাল নীল বেগুনী রং লাগিয়ে ক্যামারা দুই পাশে হালকা লাগিয়ে ম্যাজিক দেখতে পারেন, পানিতে ছোট কোন
ভাসমান বস্তু রেখে মোবাইল টা বড় কাচের মগে ঢোকিয়ে কিছু দারুন ছবি তুলে রাখতে পারেন... আমরা মাঝে মাঝে বিভিন্ন রকম রংগীন
পলেথিন দেখি সেগুলো Camera সামনে লাগিয়ে মজার কিছু effect তৈরি করতে পারেন...
আলোটা যেনো যেটার ছবি তুলছেন তার সামনে থেকে আসে পিছন থেকে নয়... Subject এর পাশা পাশি Background ঠিক আছে
কিনা বাকা বা বেনান কিনা দেখে নিন....
আর Blur মানেই Photography না!!




মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তোলার কিছু টিপস

যুগের বিবর্তনে এবং প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এখন আমাদের হাতের মুঠোয় আমরা যে স্মার্টফোনগুলো ব্যবহার করি এগুলোতে অনান্য কম্পোনেন্টের পাশাপাশি ক্যামেরা ইউনিটেও চমৎকার কিছু সুবিধা যোগ করা হচ্ছে। এবং এরই প্রেক্ষিতে ছবি তোলা এখন শুধু পয়েন্ট অ্যান্ড শুট অথবা ডিএসএলআরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। বরং এখন কেউ কোথাও ঘুরতে বা কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় হাতে করে একটি বাড়তি ডিভাইস নিয়ে যেতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন না, স্মার্টফোনকেই যথেষ্ট মনে করেন। তবে অবশ্যই সিরিয়াস ফটোগ্রাফারদের কথা আলাদা। ইদানিং ফেসবুক, টুইটার এবং এরকম অনান্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম গুলো লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় যে এখন সাধারণ মানুষও বেশ ছবি তুলে থাকেন। কেননা এখনকার বেশির ভাগ লো-এন্ড মোবাইল ফোনগুলোতেও ছবির মান মোটামুটি ভালোই আসে, আর এখান থেকেই সাধারণ মানুষের মাঝেও জন্ম নিচ্ছে একটি করে ফটোগ্রাফারের স্বত্বা। হয়তো আপনিও একজন শখের এবং এক্সট্রিম ফোনোগ্রাফার অর্থাৎ আপনার স্মার্টফোনটি দিয়েই ছবি তোলেন। আর আজকের ব্লগে আমি আপনাদের সাথে এমন কিছু টিপস শেয়ার করব যার মাধ্যমে আপনি আপনার মোবাইলের ক্যামেরা ইউনিটটির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারবেন। চলুন, জেনে নেয়া যাকঃ ১। ফটোগ্রাফির বেসিক নিয়ম গুলো জানুনঃ ফটগ্রাফির কিছু বেসিক নিয়ম কানুন রয়েছে, আপনি ইন্টারনেট ঘাটলেই বিষয়গুলো বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন। যেমন ধরুন, সূর্যের সাত নিয়ম, রুল অফ থার্ড – ইত্যাদি। এগুলো জেনে নেয়ার মাধ্যমে আপনি সহজেই ভালো ফ্রেম নির্ধারন করতে পারবেন এবং ছবি তোলার পর অন্তত আগের কম্পোজিশন গুলোর ভিন্নতা আপনি নিজেই ধরতে পারবেন। এই বেসিক নিয়ম গুলো আপনার ফটোগ্রাফির বেস শক্ত করে নিতে (ভিত্তি) পারবেন এবং এই নিয়ম গুলো মেনে ছবি তুললে অতি সাধারণ একটি ছবিকেও অন্যের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারবেন।
২। আলোর কথা মাথায় রাখুনঃ মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় এখনো একটি সীমাবদ্ধতা রয়েই গিয়েছে। বেশির ভাগ মোবাইলের ক্যামেরাই লো-লাইটে ভালো ছবি তুলতে সক্ষম নয়। তাই ছবি তোলার ক্ষেত্রে প্রথমে এমন একটি দিক নির্বাচন করুন যেন সেই দিকের বিপরীতে অবজেক্টকে রাখলে অন্তত ক্যামেরা প্রয়োজনীয় আলো পেতে পারে। স্থির সাবজেক্টের ক্ষেত্রে আপনি আপনার অবস্থান পরিবর্তন করার চেষ্টা করে দেখতে পারেন। ‘সিল্যুয়েট’ ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে এই দিক নির্দেশনা বিপরীত হবে।

৩। লেন্স পরিষ্কার রাখুনঃ মোবাইল ব্যবহার করতে করতে এক সময় দেখা যায় মোবাইলের বডিতে স্ক্র্যাচ (দাগ) পড়েছে। এবং ক্যামেরা পিছনে থাকায় ক্যামেরার উপরের নিরাপত্তা স্তরেও দাগের কারণে ছবি ঝাপসা আসতে পারে। এর জন্য হয় এমন কিছু ব্যবহার করুন যা আপনার মোবাইলটির ক্যামেরা প্রোটেক্ট করতে পারে। এবং যদি দাগ পড়েই যায় তবে আপনি ছবি তোলার সময় ব্যাক কভার (সব মডেল আবার এক নয়) খুলে ছবি তুলতে পারেন। আর, মোবাইলের ক্যামেরার লেন্সের উপর মাঝে মাঝে ধুলোবালি বা জলীয় বাষ্প জমে যেতে পারে,তাই মাঝে মধ্যেই লেন্স পরিষ্কার করুন।

৪। ডিজিটাল জুম ব্যবহার করবেন নাঃ নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন আপনার মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তোলার সময় জুম করে ছবি তুললে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছবির মান যাচ্ছেতাই হয়। কেননা, মোবাইলের ক্যামেরা গুলোতে ডিজিটাল জুম ব্যবহার করা হয়ে থাকে ফলে জুম ব্যবহার করলে ছবি ফাটা ফাটা আসে এবং ছবিতে প্রচুর পরিমানে আইএসও দেখা যায়। তাই, চেষ্টা করবেন জুম না করে ছবি তোলার। দরকার হলে যতটা সম্ভব সাবজেক্টের কাছে গিয়ে ছবি তুলে দেখতে পারেন।
৫। ফ্ল্যাশ ব্যবহারে সতর্ক হনঃ এখন প্রায় মোবাইলের ক্যামেরা ইউনিটেই এলইডি ফ্ল্যাশ থাকে। ফ্ল্যাশে ব্যবহারে আপনার সতর্ক থাকা উচিৎ। কেননা, অটো ফ্ল্যাশ নামে যে অপশনটি ক্যামেরা অ্যাপে ইন্টিগ্রেট করা থাকে তা মাঝে মধ্যেই সঠিক ভাবে কাজ করেনা। দেখা গেল, আপনি ছবি তুলছেন দিনের আলোয় যেখানে পর্যাপ্ত আলো রয়েছে। কিন্তু আপনার মোবাইলের ফ্ল্যাশটা তবুও জ্বলে উঠে আপনার ছবিতে ১২টা বাজিয়ে দিল। আবার ধরুন, অন্ধকারে যখন আপনার ফ্ল্যাশ দরকার তখন হঠাত করে ফ্ল্যাশের অটো মোড কাজ করলো না। তাই, ফ্ল্যাশ ব্যবহার করতে চাইলে আপনার প্রয়োজন বুঝে হয় ফ্ল্যশ অন অথবা ফ্ল্যাশ অফ মোডে ব্যবহার করা উচিৎ। আর আপনার যদি ফ্ল্যাশের আলোটা কিছুটা রাফ মনে হয় বা নির্দিষ্ট একটি মুহুর্তের জন্য অতিরিক্ত মনে হয় তবে আপনি ফ্ল্যাশের সামনে একটি সাদা টিস্যু পেপার ব্যবহার করতে পারেন, ভালো ফল পাবেন।
৬। রেজ্যুলেশন সেটিংস খেয়াল করুনঃ আপনি আপনার ক্যামেরা অ্যাপের অপশনে গিয়ে বিভিন্ন রকম অপশন দেখতে পারবেন, যার মাঝে ছবির কোয়ালিটি এবং রেজ্যুলেশন নির্ধারন করে দেয়া যায়। আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে ‘যে এখনো কেন রেজ্যুলেশনে ৬৪০x৪৮০ দেয়া থাকে?’ আসলে, আপনিতো আর একই পারপাসে ছবি তুলবেন না। ভিন্ন ভিন্ন কারণে আপনি একেক রেজ্যুলেশন নিয়ে কাজ করতে পারেন। যেমন, আপনি একজনকে একটি ছবি তুলে এমএমএস পাঠাতে চাইছেন। তখন আপনি ছোট রেজ্যুলেশনের ছবি ব্যবহার করতে পারেন। ছোট রেজ্যুলেশনের ছবি গুলোর মান কিন্তু ভালো হয় এবং মেমরীতে সেভও হয় দ্রুত। আবার তাই বলে যেন এমন না হয় যে আপনি সারাদিন ছবি তুলে বাসায় গিয়ে কম্পিউটারে ছবিগুলো ট্রান্সফার করে দেখলেন ছবিগুলো সব ছোট সাইজের – এজন্যেই এই পয়েন্টটি লিখেছি।


দামী ক্যামেরা নেই? মোবাইল দিয়েই তুলুন ক্রিয়েটিভ ছবি


সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৪
How to Take Creative Photo With Mobileফটোগ্রাফির শখ (photography) আছে আমাদের অনেকেরই। মোটামুটি ভাল মানের একটি ক্যামেরা কিনতে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা প্রয়োজন। সাধ থাকলেও সাধ্যের বাইরেই রয়ে যায় ক্যামেরাগুলো। তাই বলে কি নিজের শখকে অবদমিত করে রাখবেন? পকেটের মোবাইলটিই আপনার শখ পূরণের হাতেখড়ি হিসেবে ব্যবহার করুন । ২ থেকে ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা আর নতুন কিছু করার আগ্রহ থাকলে পড়ুন এই লেখাটি। জানাচ্ছি মোবাইল দিয়ে ক্রিয়েটিভ ছবি তোলার কিছু পদ্ধতি (how to take creative photo with mobile) ।

১. প্যানোরামা ইফেক্ট ব্যবহার করে তুলুন মজার সব ছবি (use panorama effect for creative photos):

অধিকাংশ স্মার্ট ফোনেই এই অপশনটি থাকে। আপনার যা প্রয়োজন তা হলো একজন সাহায্যকারী বন্ধু এবং ক্যামেরা সংযুক্ত মোবাইল। বসে পড়ুন রাস্তায় বা খোলা মাঠে। বন্ধুটিকে দাঁড় করিয়ে দিন একটি স্থানে, এবার ক্যামেরায় প্যানোরামা মোড (panorama) চালু করে প্রথম ছবিটি তুলুন। আপনি প্যানোরামা সাইকেল পূরণ করতে করতে বন্ধুকে বলুন প্রতিবার ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভঙ্গিতে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে। নিচের ছবিটি আপনাকে বিষয়টি বুঝতে সাহায্য করবে। যদি না জানেন কিভাবে প্যানোরামা ইফেক্ট ব্যবহার করতে হয় তাহলে এই ইউটিউব ভিডিওটি আপনাকে সাহায্য করবে।
panorama 1

দেখুন ফলাফলঃ

panaroma 2

২. পথ চলার ক্লান্তিকর মুহূর্তকে করে তুলুন মজার (make your journey fun):

অফিসে বা ক্লাসে প্রতিদিন যাওয়া-আসা করতে হয় বাসে বা অন্য কোন গাড়িতে? দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিতে গিয়ে বিরক্তি চলে আসা স্বাভাবিক। এই বিরক্তিকর মূহুর্তকে বদলে নিন আনন্দ দিয়ে। জানালার ধারে বসে মোবাইলের ক্যামেরা অন করুন, চালু করুন প্যানোরামা ইফেক্ট। এবার গাড়ি বা পথ চলতি মানুষের ছবি তুলতে শুরু করুন। ছবিগুলো দেখলেই মন ভাল হয়ে যাবে।
car panoroma

৩. ছবিতে নতুন ইফেক্ট দিন দূরবীন ব্যবহার করে (use binoculars for new effect):

ছবিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারেন দূরবীন ব্যবহার করে। খুবই সাধারণ এই পদ্ধতিটি। ক্যামেরার লেন্সের সামনে একটি দূরবীন ধরুন, এবার ফোকাস করুন দূরের কোন বস্তুর দিকে। পেয়ে যাবেন ভিন্নমাত্রার একটি ছবি।
Binocular

৪. রিফ্লেক্টর ব্যবহার করে ছবিতে আনুন নতুন মাত্রা (use reflector for better image):

মোবাইলের ক্যামেরায় তোলা পোর্ট্রেইট (portrait) সাধারণত ভাল দেখায় না আলো-ছায়ার তারতম্যের কারণে। খুব সহজভাবেই এই সমস্যার সমাধার করে ফেলা যায়। চেহারায় সঠিক আলো ফেলার জন্য রিফ্লেক্টর ব্যবহার করুন। এলুমিনিয়াম এর বড় শিট, ছাতার ভেতরের দিকের সাদা চকচকে অংশ বা বড় সাইজের সাদা কাগজ ইত্যাদি রিফ্লেক্টর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
reflactor



চমৎকার একটি সেলফি তোলার আগে যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখবেন

সেলফিকে প্রথম দিকে তেমন গুরুত্বের সাথে কেউ না নিলেও এটি বর্তমানের ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। নানারকম সেলফি কন্টেস্টে বিভিন্ন সোশাল মিডিয়াগুলো ভরপুর। তাছাড়া নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের ব্যাপারটাতো আছেই। তাই জানিয়ে দিচ্ছি কিছু টিপস যা আপনার সেলফিকে (selfie) আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।

১. ক্যামেরা নির্বাচন (camera selection):

সেলফি তোলার ক্ষেত্রে প্রথমেই যে ব্যাপারটা আসে তা হচ্ছে ক্যামেরা। আজকালকার স্মার্ট ফোনগুলোতে রিয়ার আর ফ্রন্ট ক্যামেরা দুটোই থাকে। আর আমরা সুবিধার জন্য বেছে নিই ফ্রন্ট ক্যামেরাকেই। এক্ষেত্রে ফ্রন্ট ক্যামেরাকে সেলফি তোলার জন্য নির্বাচন করার আগে দেখে নিতে হবে তার ক্ষমতা কতটুকু। কমপক্ষে ২ মেগাপিক্সেল না হলে ফ্রন্ট ক্যামেরার পরিবর্তে রিয়ার ক্যামেরাতেই সেলফি (selfie) তুলুন।

২. ব্যাকগ্রাউন্ড এর প্রতি লক্ষ্য রাখুন (background):

আমরা অনেকেই সেলফি তুলে খুশি মনে ফেসবুকে আপলোড করে দিই, কিন্তু খেয়াল করি না আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ডে কি রয়েছে। আপনার সুন্দর সেলফিকে ব্যাকগ্রাউন্ডের অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলো নষ্ট করে দিতে পারে। তাই সেলফি তোলার আগে এমন ব্যাকগ্রাউন্ড বেছে নিন যা ছবিতে ভাল দেখাবে।backgroung

৩. লাইটিং এর দিকে নজর দিন (lighting):

আশেপাশের আলোর কারণে আমাদের ছবিতে বিশাল পরিবর্তন চলে আসে, তাই সেলফি তোলার আগে এর দিকে নজর দিন। কখনোই উজ্জ্বল আলোকে পেছনে রেখে ছবি তুলবেন না।backlight

৪. ক্যামেরা ধরুন একটু উপরের দিকে (hold camera slightly upward):

সেলফি তোলার সময় ক্যামেরা কখনোই নিচে ধরবেন না। বরং একটু উপরে তুলে এর পর সেলফি তুলুন। এতে আপনার চোখ সুন্দর দেখাবে, নাক ছোট দেখাবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা-ডাবল চিন (double chin) থেকে মুক্তি পাবেন।

৫. নিজের সবচেয়ে ভাল এঙ্গেলটি খুঁজে বের করুন (perfect angle):

আমাদের সব ছবি কিন্তু একই রকম হয় না। এক এক পাশ থেকে তোলা ছবি এক এক রকম দেখায়। সেলফি তোলার আগে খুঁজে বের করুন ঠিক কোন পাশ থেকে ছবি তুললে আপনাকে সবচেয়ে ভাল দেখাচ্ছে।right angle

৬. সেলফি তোলার সময় হাসুন (smile):

হাসলে যে কোন মানুষকেই সুন্দর দেখায়। তাই সেলফি তোলার সময় নিজের সুন্দর হাসিটি ফুটিয়ে তুলুন। ঘাড় একটু কাত করে হাসিমুখে পাশ থেকে তোলা সেলফি সবসময়ই ভাল দেখায়।just smile

৭. ডাকফেইস থেকে বিরত থাকুন (do not duck face):

ডাকফেইস (duck face) করে ছবি তোলার সময় যদিও ধারণা করি ছবিতে আমাদের ভাল দেখাবে, কিন্তু আসলে তা দেখায় না। তাই এই ছবি তোলার এই পোজটি না দেয়ার চেষ্টা করুন।
duckface

৮. ক্যামেরার দিকে তাকান (look straight to the camera):

ফ্রন্ট ক্যামেরায় যখন ছবি তোলা হয় তখন আমরা অনেকেই তাকাই স্ক্রিনের দিকে যেখানে নিজেকে দেখা যাচ্ছে। এই ভুল করবেন না। সাধারণত ফ্রন্ট ক্যামেরাগুলো মোবাইলের পাশে অবস্থিত হয়, ফলে স্ক্রিনের দিয়ে তাকিয়ে তোলা সেলফিগুলো ভয়াবহ দেখায়। ফ্রন্ট ক্যামেরায় ছবি তোলার সময় সরাসরি ক্যামেরার দিকেই তাকান।
camera

৯. সেলফির তোলার সময় এড়িয়ে চলুন এই ২ স্থান – আয়না এবং ওয়াশরুম (avoid mirror and washroom):

অবশ্যই সেলফি তোলার সময় এই দুই স্থান এড়িয়ে চলুন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুললে তা বিপরীত দিকে ঘুরে যায়, এবং আয়নায় ফ্ল্যাশ পরার কারণে ছবিটি ঝাপসা হয়ে যায়। তাই খুব অপারগ না হলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলবেন না। আর ওয়াশরুমে গিয়ে সেলফি তোলার সময় এই একটি লাইনই মাথায় রাখুন “দৃশ্যটি সুখকর নয়।”
ছবিতে নিজেকে সুন্দর দেখানোর আকাঙ্ক্ষা থাকে সবারই। কিন্তু আমাদের দেশের নারীরা ছবিতে নিজেকে কেমন দেখাচ্ছে তার ব্যাপারে যতটুকু সচেতন পুরুষরা ততটা নয়। ছবিতে নিজেকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে চাইলে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার ডেকে এনে নিজেকে মডেলদের মত সাজিয়ে ছবি তুলতে হবে এমনটা নয়। কিছু সাধারণ পোজই (men’s pose) পারে আপনার ছবিটিকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে। আপনাদের জন্য তুলে ধরছি কিছু সাধারণ ভঙ্গি (photo poses for men) যা অনুসরণ করলে ছবিতে আপনাকে দেখতে ভাল দেখাবে।
  • প্রথমেই খুব প্রচলিত কিন্তু সুন্দর একটি পোজ দেখাচ্ছি। দু’হাত আড়াআড়ি ভাবে সামনে রাখুন। একটু পেছন দিকে হেলে ছবি তুলুন। যাদের পেটে মেদ আছে তারা এসময় পেটটা একটু ভেতরের দিকে চেপে রাখতে পারেন। এ ধরণের পোজ সামান্য পাশ থেকে তুললেও সুন্দর দেখাবে।

  • m1

  • আমরা অনেকেই নিজের হাত নিয়ে সমস্যায় পড়ি। কিভাবে এবং কোথায় হাত রাখবো ভেবে পাই না। ছবি তোলার আরেকটি আকর্ষণীয় পোজ হচ্ছে জিন্সের পকেটে হাত দুটো সামান্য ঢুকিয়ে ছবি তোলা। এ সময় যতটা সম্ভব হালকা ভাবে দাঁড়াবেন।

  • m2

  • বসে ছবি তুলতে চাইলে এই পোজটি (photo pose) বেশ কাজের। এক পা অন্য পায়ের উপর তুলে দিন, হাত দুটো আড়াআড়ি ভাবে রাখুন। একটু নিচ থেকে বা সামনে থেকে তুললে এধরণের ছবিতে আপনাকে আকর্ষণীয় দেখাবে।

  • m3

  • দেয়ালের সাথে নিচের ছবিটির মত হেলান দিয়ে ছবি তুলতে পারেন। তবে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন, এই ধরণের ছবি যেন সামনে থেকে তোলা না হয়। তাহলে আপনার একটা পা ছবিতে আসবে না, যা বিব্রতকর দেখাবে।

  • m4

  • দেয়ালের সাথে হেলান দিন। হাত আড়াআড়ি ভাবে রাখুন এবং এক পা অন্য পায়ের সামনে এনে দিন নিচের ছবির মত করে। এই ধরণের ছবি ফর্মাল বা ক্যাজুয়াল উভয় ধরণের পোশাক পরে তুলতে পারেন।

  • m5

  • চেয়ারে বসে টেবিলে এক হাত রাখুন, অন্য হাত চিবুকে বা এর কাছাকাছি নিয়ে ছবি তুলুন। এ সময় হাসুন বা চেহারায় ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করুন।

  • m6

  • নিজের কর্মক্ষেত্রে বা অফিসের দৃশ্য ছবিতে উপস্থাপন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে নিচের ছবিটির মত টেবিলকে পেছনে রেখে বসুন, টেবিলে একটি হাত রাখুন, অন্য হাত রাখুন নিজের চেয়ারে উপর। এ ধরণের ছবি তোলার ক্ষেত্রে যিনি ছবি তুলছেন তাকে নির্দেশনা দিন একটু ঝুঁকে বা বসে ছবি তুলতে। এতে করে ছবিতে আপনাকে ভাল দেখাবে।

  • m7